টুর্নামেন্টে আমরা সেই পর্যায়ে পৌঁছেছি, ইংরেজিতে যেটা বোঝাতে ‘বিজনেস এন্ড’ শব্দটা ব্যবহার করা হয়। আইপিএল সিক্সে প্লে অফে পৌঁছনোর দৌড়ের তীব্রতা ক্রমেই বাড়ছে। পরের সপ্তাহে বা তার কয়েক দিনের মধ্যে একটা পরিষ্কার ছবি পাওয়া যাবে, কোন ছ’টা ফ্র্যাঞ্চাইজি চারটে প্লে অফ পজিশনের সত্যিকারের দাবিদার।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এই মুহূর্তে অত দূর দৃষ্টি প্রসারিত করার মতো অবস্থায় নেই। আমাদের হাতে এখনই যে কাজটা রয়েছে সেটার দিকেই আমরা আপাতত গভীর মনোনিবেশ করছি। সেটা হল ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে পরের দু’টো ম্যাচ। এবং গত বারের চ্যাম্পিয়ন কেকেআরকে ওদের ঘরের মাঠে হারিয়ে আসার পর আমরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। |
এ বারের আইপিএলে যেটা লক্ষ্যণীয় তা হল, দলগত আর ব্যক্তিগত ভাবে ক্রিকেটাররা গেমপ্ল্যান করা এবং সেটা মাঠে নেমে প্রয়োগ করার ব্যাপারে আরও বেশি স্মার্ট, তীক্ষ্ম হয়েছে। কয়েকটা দলকে তো তাদের হোম গ্রাউন্ডে কার্যত অপরাজেয় দেখাচ্ছে। সেটার আরও কারণ, অন্য দলগুলো এখনও তাদের সঠিক কম্বিনেশন খুঁজতে ব্যস্ত। আমার মতে এই টুর্নামেন্টে আগে যেমন টিমগুলো একটুআধটু ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং সবই করতে পারে এ জাতীয় ক্রিকেটারের উপর বেশি ভরসা রাখত, সেই মননটারও বদল ঘটেছে। এখন স্পেশ্যালিস্ট ক্রিকেটারদের উপর বেশি আস্থা রাখা হচ্ছে।
রান তাড়া করার ব্যাপারেও স্পষ্ট পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। ১৬০ বা তার বেশি টার্গেটের সামনেও গোড়ার দিকে ব্যাটিং টিমের মধ্যে কোনও তাড়াহুড়োর লক্ষণ থাকছে না। প্রচুর দল চূড়ান্ত ঝড় তোলার জন্য শুরুর দিকে যত বেশি সম্ভব উইকেট হাতে রেখে দিচ্ছে সোৎসাহে। শেষ পাঁচ ওভারে ৫৫-৬০ রান তোলার ব্যাপারেও এই টিমগুলোকে দারুণ আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছে। চেন্নাই সুপার কিংসের এমনটাই গেমপ্ল্যান। অবশ্য ধোনির মতো দুর্ধর্ষ ফিনিশার থাকায় ওদের পক্ষে এই ব্যাটিং স্টাইলে খেলে সফল হওয়া সম্ভব হচ্ছে। তবে এটাও বলা উচিত যে, প্রত্যেক দলেই এমন দু’-এক জন স্পেশ্যালিস্ট বোলার আছে, যারা ব্যাটিং দলের রান তাড়া করার নির্দিষ্ট গেমপ্ল্যানকে চ্যালেঞ্জে ফেলার ক্ষমতা রাখে।
আমাদের লাসিথ মালিঙ্গা ঠিক সে রকম এক জন বোলার। কেকেআরের বিরুদ্ধে শেষ ওভারে মাত্র তিন রান খরচ করে দু’টো উইকেট তুলে মালিঙ্গা বুঝিয়েছে কেন ওকে সীমিত ওভারের ফর্ম্যাটে বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলার মনে করা হয়। আমি মনে করি ইডেনে আমাদের জয়টা অসাধারণ প্রচেষ্টার ফসল। পুরোপুরি দলগত প্রচেষ্টায় জয়। যেখানে আমাদের প্রত্যেক ক্রিকেটারের কিছু না কিছু অবদান ছিল। অধিনায়ক রিকি পন্টিং নিজে বসে গিয়ে একটা অসাধারণ দৃষ্টান্ত তৈরি করায় আমরা মিচেল জনসনকে চতুর্থ বিদেশির কোটায় খেলাতে পেরেছিলাম। টিম না গেলেও রিকি ম্যাচের আগের দিন ইডেনে উইকেট দেখে বুঝতে পেরেছিল, কুড়ি ওভারের ম্যাচেও প্রথম ছ’ওভার এই পিচে বল নড়াচড়া করবে। |