আগুন প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার চলছিল। বিপত্তি বাধে ‘হাত ফসকে’ পুরনো কিছু পুস্তিকা ছড়িয়ে পড়তেই। প্রচার-পুস্তিকায় আছে প্রাক্তন মন্ত্রীর ছবি-সহ বক্তব্য। দ্রুত খবর পৌঁছে যায় দফতরের সদর কার্যালয়ে। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই সরাসরি সাসপেন্ড করা হল তারকেশ্বরের চার দমকলকর্মীকে। কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে হতবাক দমকল বিভাগের কর্মী-অফিসাররা।
বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে বামপন্থী সংগঠন ‘ফায়ার সার্ভিস ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন দে বলেন, “আমরা দফতরের ডিজি-কে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। সংশ্লিষ্ট কর্মীদের কোনও দোষ ছিল না। তা সত্ত্বেও তদন্ত না করেই একতরফা শাস্তি দেওয়া হল।”
দমকলের ডিজি দুর্গাপ্রসাদ তারানিয়া অবশ্য বলেন, “দফতরের মন্ত্রী-সহ নানা জায়গা থেকে আমরা নির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়েছি। তার ভিত্তিতেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আরও তদন্ত হচ্ছে বিভাগীয় স্তরে।”
গত ২০ এপ্রিল হুগলি ডিভিশনের অন্তর্গত তারকেশ্বর দমকল কেন্দ্র থেকে ২০১১ সালের পুস্তিকা বিলি করা হয়। পুরনো ওই পুস্তিকার মুখবন্ধ লিখেছিলেন তৎকালীন দমকলমন্ত্রী প্রতীম চট্টোপাধ্যায়। দফতরে বসে প্রতীমবাবু কাজ করছেন এমন একটি ছবিও রয়েছে সেখানে।
স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক প্রচার চালানোর উদ্দেশ্যেই ওই পুস্তিকা বিলি করা হয়। সেই খবর পৌঁছয় দমকলের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ এবং দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খানের কানে। বুধবার তারকেশ্বর কেন্দ্রের চার কর্মীকে সাসপেন্ড করেন দমকলের ডিজি। ওই চার জনের মধ্যে রয়েছেন ওই কেন্দ্রের স্টেশন অফিসার অতনু ঘোষ এবং ‘ফায়ার অপারেটর’ সুজিৎ বেরা, সোমনাথ দে ও চারুচন্দ্র সাঁতরা। বৃহস্পতিবার সকলের হাতে সাসপেনশনের চিঠি পৌঁছয়। কারণ হিসেবে জানানো হয়, দফতরের প্রাক্তন মন্ত্রীর বিজ্ঞাপন দিয়ে লিফলেট ছড়ানোর দায়ে সাসপেন্ড করা হল।
এ ব্যাপারে প্রতীমবাবুর প্রতিক্রিয়া, “ওরা যা খুশি করছে। অগ্নি নির্বাপণ আইন এ রাজ্যে আমিই কার্যকর করেছিলাম। ওই পুস্তিকাও তো আমারই তৈরি।” |