প্রি-পেড ট্যাক্সিতে স্মার্ট কার্ড চালুর চিন্তা
হাওড়া স্টেশনে যাত্রীদের হয়রানি রুখতে এ বার ট্যাক্সিচালকদের জন্য স্মার্ট কার্ড চালু করতে চাইছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে কলকাতা ও হাওড়া শহরে চলা প্রায় ৪০ হাজার ট্যাক্সির মধ্যে ২০ হাজার ট্যাক্সিকে ওই কার্ড দেওয়া হবে। এ জন্য রাজ্য পরিবহণ দফতরের কাছে ১১ লক্ষ টাকার একটা পরিকল্পনা জমা দিয়েছে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট। পুলিশের দাবি, ওই কার্ড চালু হলে হাওড়া স্টেশনেই ট্যাক্সি প্রত্যাখ্যান ও যাত্রী-হয়রানি একেবারে কমে যাবে। ট্যাক্সি পরিষেবার মান অনেক আধুনিক ও উন্নত হবে এবং এই কার্ড এ রাজ্য-সহ অন্য রাজ্যের ক্ষেত্রে একটা মডেল হয়ে উঠবে।
কী ভাবে কাজ করবে ট্যাক্সির এই স্মার্ট কার্ড?
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে যে ২০ হাজার ট্যাক্সিকে ওই কার্ড দেওয়া হবে, সেই সব ট্যাক্সিচালককে হাওড়া স্টেশনের প্রি-পেড বুথে ঢুকতে গেলে এই স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করতে হবে। এ জন্য ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে ঢোকার মুখে পুরনো ক্যাব রোডের কাট আউটের সামনে একটা কার্ড পাঞ্চিং মেশিন থাকবে। ট্যাক্সিচালকেরা ওই মেশিনে কার্ড পাঞ্চ করে তবেই স্ট্যান্ডে ঢুকতে পারবেন। মেশিনে কার্ড পাঞ্চ হয়ে গেলেই যে কোনও ট্যাক্সির নম্বর-সহ অন্যান্য তথ্য কম্পিউটারে উঠে যাবে। বুথে গিয়ে যাত্রীরা টাকা জমা দিলেই ট্যাক্সির নম্বর পেয়ে যাবেন। শুধু ট্যাক্সিতে বসে কোথায় যাবেন বললেই ট্যাক্সি গন্তব্যে পৌঁছে দেবে। নতুন এই ব্যবস্থায় ট্যাক্সিচালকেরা ইচ্ছেমতো যাত্রী নিয়ে যেতে পারবেন না।
পুলিশ জানায়, এই স্মার্ট কার্ডের জন্য হাওড়া স্টেশনের পুরনো ও নতুন কমপ্লেক্সের প্রি-পেড বুথগুলিকে পুরোপুরি কম্পিউটার-চালিত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বুথগুলিকে আধুনিক মানের করা হয়ে গিয়েছে। হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্মার্ট কার্ডে জিপিএস সিস্টেমও রাখা হচ্ছে। যাতে ট্যক্সির গতিবিধি নজর রাখা যাবে। কোনও ট্যাক্সিচালক অপরাধ করলে সঙ্গে ধরা পড়ে যাব।
হাওড়া স্টেশনে ট্যাক্সি নিয়ে ট্রেনযাত্রীদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও প্রি-পেড ট্যাক্সি পেতেন না যাত্রীরা। ট্যাক্সি নিয়ে একটা দালালচক্র গড়ে উঠেছিল। ওই চক্রটিই নিয়ন্ত্রণ করত স্টেশনের ট্যাক্সি স্ট্যান্ড। কোনও যাত্রী ট্যাক্সি পাবেন কি না, তা ঠিক করত স্টেশন চত্বরে থাকা দালালেরা। চক্রটির মধ্যে রাজনৈতিক নেতা ছাড়াও রেল পুলিশের একাংশ ও ট্যাক্সিচালকদের জড়িয়ে থাকার অভিযোগ ওঠায় শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকার স্টেশন চত্বরে ট্যাক্সি ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব রেল পুলিশের হাত থেকে তুলে দেয় হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের হাতে। গত বছরের ৮ নভেম্বর থেকে হাওড়া সিটি পুলিশ স্টেশন চত্বরে ট্যাক্সি স্ট্যান্ড ও প্রিপেড বুথের দায়িত্ব নেয়।
হাওড়া স্টেশন ট্রাফিকের ওসি ইন্দ্রনীল সান্যাল বলেন, “হাওড়া স্টেশন চত্বর থেকে প্রথমেই আমরা দালালদের হটিয়ে ‘ফাইল’ ট্যাক্সি বন্ধ করে দিই। এর পরে কী ভাবে ট্যাক্সিচালকদের হাতে যাত্রী হয়রানি বন্ধ করা যায়, সে ব্যাপারে উদ্যোগী হই।” ইন্দ্রনীলবাবু জানান, প্রাথমিক ভাবে দেখা যাচ্ছে ট্যাক্সি প্রত্যাখ্যান কিছুটা বন্ধ হলেও যাত্রীদের এক বার লাইনে দিয়ে টিকিট কেটে ফের আর একটি লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে টিকিটের উপরে ট্যাক্সির নম্বর লেখাতে। এ জন্য মানুষের অনেক সময় নষ্ট হচ্ছে। তাই দীর্ঘ সময় ধরে ট্রেনে ভ্রমণ করে আসা যাত্রীদের কী করে আরও দ্রুত ট্যাক্সির ব্যবস্থা করে দেওয়া যায়, সে জন্য ভাবনাচিন্তা শুরু হয়। তখনই রাজ্য সরকারের কাছে স্মার্ট কার্ডের প্রস্তাবটি কমিশনারেট থেকে পাঠানো হয়।
হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে বলেন, “স্মার্ট কার্ড প্রকল্পটি ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। স্মার্ট কার্ডের সফটওয়্যার-সহ সব কিছুই প্রস্তুত রয়েছে। সবুজ সঙ্কেত পেলেই দ্রুত কাজ শুরু হবে।”
স্মার্ট কার্ডের পাশাপাশি ‘ই-ট্যাক্সি’ও চালু করতে চাইছে হাওড়া সিটি পুলিশ। এই ব্যবস্থা চালু হলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ট্রেন থেকেই যাত্রীরা আগাম ট্যাক্সি ‘বুক’ করে রাখতে পারবেন। এ ছাড়া, হাওড়া স্টেশনে আসা যাত্রীদের জন্য রেল যাতে ট্যাক্সির ব্যাপারে যাবতীয় তথ্য মাইকে ঘোষণা করে, সেই ব্যবস্থাও করেছে হাওড়া সিটি পুলিশ।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.