কৃত্রিম প্রজননে চারাপোনা, উদ্যোগ মৎস্য দফতরে
কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে ডিম ও চারাপোনা তৈরির জন্য তিনটি কেন্দ্র তৈরির উদ্যোগী হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা মৎস্য দফতর। জেলার মৎস্য চাষিরা যাতে কম দামে ও কম পরিশ্রমে চারাপোনা পান সে জন্যই এই উদ্যোগ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা মৎস্য দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর বীরেন্দ্রনাথ বাস্কে বলেন, “জেলার তিনটি জায়গায় কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে বীজ ও চারপোনা তৈরির জন্য হ্যাচারির কাজ শুরু হয়েছে। চলতি বছরে যাতে এখান থেকেই জেলার মৎস্য চাষিদের চারাপোনা দেওয়া যায় চেষ্টা চলছে।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় মাছের চাহিদা মেটাতে ভিন্ রাজ্য থেকে মাছ আমদানি করতে হয়। অথচ, জেলায় চাষের সুযোগ এতটাই যে, ব্যবসায়িক ভিত্তিতে চাষ করা হলে জেলার চাহিদা মিটিয়ে তা অন্যত্র রফতানিও করা সম্ভব। মৎস্য দফতরের কাছে মাছ চাষের উপযোগী এলাকার ঠিক পরিসংখ্যান অবশ্য নেই। ২০১০-১১ আর্থিক বছরে মাছের চাহিদা ছিল ৫৮ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন, উৎপাদন হয়েছিল ৪৯ হাজার মেট্রিক টন। অর্থাৎ ঘাটতি ছিল ৯ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন। ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে চাহিদা বেড়ে হয় ৬৭ হাজার ৬২০ মেট্রিক টন। তখন উৎপাদন বাড়লেও দেড় হাজার মেট্রিক টন ঘাটতি ছিল। জেলায় মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নানা সময় পরিকল্পনা নেওয়া হলেও বাস্তবে তা ততটা কার্যকর হয়নি বলে অভিযোগ। যেমন, ২০০৯-১০ আর্থিক বছর থেকে প্রতিটি ব্লকে একটি করে জল ও মাটি পরীক্ষাগার তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত জেলার ১৪টি ব্লকে তা তৈরি হয়েছে। তাও সর্বত্র চালু করা যায়নি। এখান থেকে স্থানীয় মৎস্য চাষিরা জল বা মাটিতে কোনও জীবাণু রয়েছে কি না, জল ও মাটির গুণ অনুযায়ী তা পরিশুদ্ধ করতে কী ব্যবস্থা নিতে হবে, এই সব তথ্য পাওয়ার কথা। মৎস্য দফতর জানিয়েছে, গত দু’বছরে ১৪টি কেন্দ্রের জন্য ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা করে এসেছিল। তাতে অনেকটাই কাজ হয়েছে। বাকি কেন্দ্র তৈরির অর্থ চাওয়া হয়েছে।
মৎস্য দফতরের উদ্যোগে তিনটি মাল্টি ডাইমেনশনাল হ্যাচারি হবে নারায়ণগড় ব্লকের বড়মোহনপুর, শালবনির ডাঙরপাড়া ও খড়্গপুর ১ ব্লকের যমুনাদিঘিতে। প্রতিটির জন্য খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা। এখানে রুই, কাতলা, মৃগেলের সঙ্গে দেশি মাগুরেরও কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা তৈরি করা হবে। স্ব-সহায়ক দলকে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাঁদের হাতেই তুলে দেওয়া হবে এই কেন্দ্রগুলি। মৎস্য দফতর জানিয়েছে, আড়াই থেকে ৩ লক্ষ টাকা খরচ করলে প্রায় ৪০-৫০ লক্ষ ডিমপোনা তৈরি করা যাবে। যা চারাপোনা করে বিক্রি করা যাবে। বর্তমানে জেলার মৎস্যচাষিরা বাঁকুড়া ও চব্বিশ পরগনা থেকে মাছের চারা নিয়ে এসে চাষ করেন। এতে পরিবহণ, মজুর খরচ ও পরিশ্রম বেশি হয়। জেলার মধ্যেই তা পেলে চাষিরাও উপকৃত হবেন, খরচও কম পড়বে। যাঁরা চারাপোনা তৈরি করবেন, তাঁরাও লাভবান হবেন। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে জেলায় মাছ উৎপাদনও বাড়বে বলে মৎস্য দফতর আশাবাদী।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.