পশ্চিমবঙ্গের ভুঁইফোঁড়দের বিরুদ্ধে তদন্তের প্রস্তুতি শুরু করে দিল কেন্দ্রীয় সরকার।
সদ্য গত কালই কেন্দ্র জানায়, ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে তদন্তে গড়া হবে বিশেষ টাস্ক ফোর্স। এই টাস্ক ফোর্স কাজ করবে সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেটিং অফিস বা এসএফআইও-র অধীনে। যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে, প্রাথমিক ভাবে সেই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের ৭৩টি সংস্থা ছিল। এ দিন আরও এক কদম এগিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার প্রথম দফায় ওই তালিকা থেকে চারটি সংস্থাকে বেছে নিয়ে এসএফআইও-কে নির্দেশ দিয়েছে, সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত শুরু করার। সেই তালিকায় সারদা ছাড়াও রয়েছে রোজ ভ্যালী, আইকোর আই-সার্ভিসেস এবং সানশাইন ইন্ডিয়া ল্যান্ড ডেভেলপার্স।
কেন্দ্রীয় কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক থেকে এসএফআইও-কে এ দিন যে বার্তা পাঠানো হয়, সেখানেই ওই চারটি সংস্থার নাম উল্লেখ করে তদন্ত শুরু করার কথা বলা হয়। ওই চারটি গোষ্ঠী টাকা তোলার প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষকে ঠকাচ্ছে বলে সন্দেহ কেন্দ্রের। পশ্চিমবঙ্গের রেজিস্ট্রার অফ কোম্পানিজের একটি রিপোর্টের ভিত্তিতেই এই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, এই তদন্তের জন্য দ্রুত একটি দল গঠন করা হবে। কর্পোরেট মন্ত্রকের বার্তা অনুযায়ী, সারদা গোষ্ঠীর ১৪টি কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত হবে। তাদের মধ্যে রয়েছে সারদা রিয়েলটি, সারদা অ্যাগ্রো ডেভেলপমেন্ট, সারদা এক্সপোর্টস, সারদা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি, সারদা গার্ডেন রিসর্টস অ্যান্ড হোটেল।
তা ছাড়া রয়েছে সানশাইন ইন্ডিয়া ল্যান্ড ডেভেলপার্স গোষ্ঠীর ৯টি, আইকোর ই-সার্ভিসেস গোষ্ঠীর ১১টি ও রোজ ভ্যালী গোষ্ঠীর ১৯টি কোম্পানি। রেজিস্ট্রার অফ কোম্পানিজের তথ্য অনুযায়ী, তারা ‘মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং’, ‘কালেক্টিভ ইনভেস্টমেন্টস স্কিম’ ও অন্য টাকা সংগ্রহের প্রকল্পে যুক্ত। অর্থ মন্ত্রক সূত্রে খবর, পরে পশ্চিমবঙ্গের অন্য সংস্থা এবং অন্য রাজ্যের সংস্থাগুলির বিরুদ্ধেও তদন্ত হতে পারে।
আইকোরের কর্ণধার অনুকূল মাইতি জানিয়েছেন, “আমরা রেজিস্ট্রার অফ কোম্পানিজের কাছে সংস্থা নথিবদ্ধ করে আইনসম্মত ভাবেই ব্যবসা করছি। মেয়াদ পূর্তির পরে টাকা ফেরত দিতেও আমাদের কোনও সমস্যা নেই। তবে সারদা কাণ্ডের পরে উৎকণ্ঠিত মানুষ যে ভাবে আমাদের অফিসে হাজির হচ্ছেন তাতে আমাদের কাজ করতে কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে।” অনুকূলবাবু জানিয়েছেন, তাঁদের ১১টি কোম্পানি নথিবদ্ধ হলেও সব ক’টি এখনও কাজ শুরু করেনি। রোজ ভ্যালীর কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর বক্তব্য, “যে কেউ তদন্ত করতে পারে। আমরা তদন্তকে স্বাগত জানাচ্ছি।”
এ দিকে এ দিন রাতে কলকাতার বৌবাজার থানায় আর একটি ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ে। পুলিশ সূত্রের খবর, এক দল ব্যক্তি টাওয়ার গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেছে। তবে রাত পর্যন্ত খবর, এই বিষয়টি নিয়ে কোনও মামলা দায়ের হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কোনও খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। |