পর্যটনের উন্নয়নে রাজ্য জুড়েই নানা প্রকল্প নিয়েছে রাজ্য। কোন জেলার কোন এলাকায় পর্যটনের প্রসার ঘটানো যায়, আগেই রিপোর্ট চেয়েছিল পর্যটন দফতর। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পরে সম্প্রতি কলকাতায় পর্যটন দফতরের প্রধান সচিব জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কোন খাতে কত অর্থ বরাদ্দ করা হবে তা জানানো ছাড়াও দ্রুত গতিতে কাজ শেষের নির্দেশ দেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই বৈঠকে চলতি আর্থিক বছরের রাজ্যের বিভিন্ন জেলাকে ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তার মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর পেয়েছে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা। আর পূর্ব মেদিনীপুরের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৯১ লক্ষ টাকা।
জানা গিয়েছে, বরাদ্দ অর্থে পশ্চিম মেদিনীপুরের নতুন চারটি স্থানকে পর্যটন উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে। এর মধ্যে অন্যতম পিংলার নয়া গ্রাম। এই এলাকা পটশিল্পের জন্য বিখ্যাত। গ্রামের অধিকাংশ মানুষই পটচিত্র তৈরি করেন। একটা সময় পুরাণ, মহাকাব্যের নানা ছবি আঁকা হত পটে। পটচিত্র নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে কাহিনী শোনাতেন কথকেরা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টেছে পটের জগৎ। পুরাণ-মহাকাব্যের বদলে এখন সমসাময়িক নানা ঘটনা পটের ছবিতে ফুটে উঠছে। শিল্পকর্ম হিসেবেও পটের কদর রয়েছে। বহু শৌখিন মানুষ ঘর সাজাতে পটচিত্র ব্যবহার করেন। বিদেশেও রফতানি করা হয় পটের ছবি। |
কোথায়-কত |
পশ্চিম মেদিনীপুর
নয়া গ্রামের পটশিল্প— ৬ কোটি ১৫ লক্ষ
দাঁতনের শরশঙ্কা দিঘি— ৮৯ লক্ষ
মোগলমারি প্রত্নস্থল— ৫০ লক্ষ
গোপগড়ে শিশু উদ্যান— ২০ লক্ষ |
পূর্ব মেদিনীপুর
মন্দারমণি সৈকতে আলো— ৫০ লক্ষ
দিঘায় আইকনিক গেট— ৪০ লক্ষ
অন্য উন্নয়ন খাতে— ১ লক্ষ ১০ হাজার |
|
পট-শিল্পের প্রচারে বছরে একবার মেলার আয়োজন করা হয় নয়া গ্রামে। যেখানে হাজির হন বহু বিদেশিও। এ বার নয়া গ্রাম ঠাঁই পেতে চলেছে রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে। এ জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৬ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা। প্রথম ধাপে তার ৩০ শতাংশ অর্থ দেওয়া হবে। খরচের হিসেব দিলে পরবর্তী ধাপের টাকা বরাদ্দ হবে। বরাদ্দ টাকায় পর্যটকদের থাকার জন্য দু’টি কটেজ তৈরি করা হবে। দেওয়া হবে পানীয় জলের সংযোগ। রাস্তা সংস্কার করা হবে। মেলার এলাকায় বসবে শেডও। দাঁতনের শরশঙ্কাকেও পর্যটন উপযোগী করে তুলতে ৮৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ঐতিহাসিক তাৎপর্যপূর্ণ মোগলমারির উন্নয়নে ৫০ লক্ষ টাকা দিয়েছে সরকার। এ ছাড়া গোপগড়ে একটি শিশু উদ্যান তৈরির জন্য ২০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। জেলা পরিকল্পনা ও উন্নয়ন আধিকারিক প্রণব ঘোষ বলেন, “দ্রুত গতিতে প্রকল্প রূপায়নের জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
পূর্ব মেদিনীপুরের পর্যটন উন্নয়নেও বরাদ্দ হয়েছে টাকা। মন্দারমণি সমুদ্র উপকূলে আলোর বন্দোবস্ত করতে ৫০ লক্ষ টাকা ও দিঘায় আইকনিক গেট তৈরি করতে বরাদ্দ করা হয়েছে ৪০ লক্ষ টাকা। অন্য কয়েকটি প্রকল্পে দেওয়া হয়েছে আরও ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। |