অভিযুক্ত তৃণমূল বিধায়ক
গরিব মানুষের বাড়ি নিয়ে দুর্নীতি গোসাবায়
রিব গৃহহীন মানুষের বাড়ি তৈরির প্রকল্প ‘অধিকার’ নিয়ে ফের সামনে এলে অনিয়মের ছবি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর এই প্রকল্পে স্বজনপোষণ করেছেন বলে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। জেলাশাসক নারায়ণস্বরূপ নিগম বিধায়কের তৈরি করা প্রকল্পের উপভোক্তা তালিকা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন বিডিওকে। যাঁরা ইতিমধ্যেই প্রকল্পের টাকা পেয়ে গিয়েছেন, তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেন আপাতত স্থগিত করারও সুপারিশ করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলাশাসক বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। কয়েকটি বেনিয়ম ধরা পড়েছে। তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অভিযুক্ত বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর অবশ্য এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, “প্রশাসন তদন্ত করছে। আমি কিছু মন্তব্য করব না।”
নিয়মমাফিক এই প্রকল্পে স্থানীয় বিধায়কই উপভোক্তার তালিকা তৈরি করে পাঠান। সেই তালিকা অনুমোদন করে প্রশাসন। সেই মতো জয়ন্তবাবু নিজের বিধানসভা কেন্দ্র গোসাবার উপভোক্তাদের তালিকা বানিয়েছিলেন। কিন্তু তালিকায় প্রকৃত দরিদ্র মানুষের পরিবর্তে অন্যায্য ভাবে বহু তৃণমূল নেতা-কর্মীর ঢোকানো হয়েছে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, এই তৃণমূল বিধায়ক নিজের এলাকা ছাড়াও বাসন্তী বিধানসভা কেন্দ্রের বাড়ি প্রাপকদের তালিকাও তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ। এটা সম্পূর্ণ আইন বিরুদ্ধ। বাসন্তীর আরএসপি বিধায়ক সুভাষ নস্করের দাবি, তাঁর অজ্ঞাতসারে জয়ন্তবাবু এই কাজ করেছেন। টাকাও অনুমোদন হয়েছে। সুভাষবাবু বলেন, “অনিয়মের বিষয়টি জেলাশাসককে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।”
সম্প্রতি লালগড়ে ‘অধিকার’ প্রকল্পে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল। দলের বিরুদ্ধে সরব হয়ে ইস্তফা পর্যন্ত দিয়েছিলেন যুব তৃণমূলের লালগড় ব্লক সভাপতি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্ষেত্রেও একই কায়দায় স্বজনপোষণ হয়েছে বলে অভিযোগ।
জেলা প্রশাসনের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, গোসবা ও বাসন্তী বিধানসভা মিলিয়ে ১০২৯ জনের নামের তালিকা জমা দিয়েছিলেন জয়ন্তবাবু। এঁদের কেউ গৃহহীন নন। জয়ন্তবাবুর তৈরি করা তালিকায় পঞ্চায়েত সদস্য, বাস-মালিক, রেশন ডিলারের পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন। ওই তৃণমূল বিধায়কের বসতবাড়ি চুনাখালি পঞ্চায়েত এলাকায়। ওই এলাকার সবচেয়ে বেশি মানুষের নাম রয়েছে তালিকায়, ৩৯৬ জন। এঁদের অনেকেই প্রাথমিক পর্যায়ের ২৪ হাজার ২৫০ টাকা পেয়ে গিয়েছেন। তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়েছে।
এই প্রকল্পে মোট বরাদ্দ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা দু’ভাগে উপভোক্তাদের দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় সরকার দেয় ৭৫ শতাংশ টাকা আর রাজ্য সরকার দেয় বাকি ২৫ শতাংশ। জানা গিয়েছে, রাজ্যর সাতটি জেলায় ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরে ‘অধিকার’ প্রকল্পে ৩৪ হাজার ৩০৮টি বাড়ি অনুমোদন করা হয়েছে। এই প্রকল্পে মোট ১৬০ কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। কী করে বেআইনি ভাবে জয়ন্তবাবুর নামের তালিকা জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমোদন পেল সেই বিষয় তদন্তের দাবি করেছেন বাসন্তীর বিধায়ক সুভাষবাবু। তিনি বলেন, “জেলা প্রশাসনের একাংশের যোগসাজশেই ওই তালিকা অনুমোদন পেয়েছে। আমরা পুর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.