তিকিতাকার দুঃসময়। আগ্রাসনে ভাঁটা মোরিনহোর ক্লাবেও। বিশ্ব ফুটবলে জার্মান ক্লাবের জয়জয়াকার। চার কোচের বিশ্লেষণ...
পাঁচ প্রশ্ন...
১) বার্সা-রিয়ালের মতো হেভিওয়েট দল ৪ গোল খাচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের মতো বড় মঞ্চে! কারণ কী?
২) বার্সার তিকিতাকা আর রিয়ালের সুপার-স্পিড স্টাইলের সেরা ওষুধ কি তা হলে জার্মান ক্লাবের পাওয়ার ফুটবল?
৩) ফিরতি ম্যাচে বার্সার ৫ গোলে আর রিয়ালের ৩ গোলে জিতে ফাইনালে ওঠা সম্ভব?
৪) বায়ার্ন-বরুসিয়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল হলে সেটা কি ‘এল ক্লাসিকো’র মতো আকর্ষণীয় হবে?
৫) বিশ্ব ফুটবলে ট্রেন্ড এখন, হেভিওয়েট টিমও চার-পাঁচ গোলে হারছে। তা হলে এখানে ডেম্পো-চার্চিলের কাছে মোহন-ইস্ট ৪/৫ গোলে হারলে ‘গেল গেল’ হয় কেন?
ট্রেভর মর্গ্যান
১) ফুটবলে এ রকম হতেই পারে। তবে বায়ার্ন আর ডর্টমুন্ড অসাধারণ খেলেছে। রিয়াল এবং বার্সার খেলার স্টাইল খুঁটিয়ে দেখে জার্মান ক্লাব দুটো স্ট্র্যাটেজি সাজিয়েছিল। যাতে একশো শতাংশ সফল।
২) পাওয়ার ফুটবল নয়। জার্মানির দু’দলই আধুনিক ফুটবল খেলেছে। তবে সাময়িক খারাপ পারফরম্যান্সের কারণে বলে দিতে পারি না, তিকিতাকা বা সুপার-স্পিড ফুটবল স্টাইলের ওষুধ পাওয়া গেল।
৩) খুব কঠিন। তবে ফুটবলে সব কিছু ঘটতে পারে।
৪) একেবারেই না। রিয়াল-বার্সা ম্যাচ ঘিরে যে উত্তেজনা থাকে, সেটা কখনও বায়ার্ন-বরুসিয়া ম্যাচে থাকবে না। এখানে ইস্ট-মোহন ম্যাচ নিয়ে যে উত্তেজনা, সেটা কি চার্চিল- ডেম্পো ম্যাচে থাকে?
৫) ফুটবলে যেমন গোল করবে, তেমনই গোল খাবেও। কিছুটা ‘লাক ফ্যাক্টর’ও কাজ করে। এই নিয়ে বাড়তি ভাবনার প্রয়োজন নেই। |
ডেরেক পেরিরা
১) জার্মান দল দুটো জয় পেতে প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত ছিল। যেটা রিয়াল বা বার্সার মধ্যে দেখা যায়নি।
২) জার্মানির দুই ক্লাবই পাওয়ারের সঙ্গে নিজেদের স্কিলও মিশিয়েছে। যে কারণে সফল হয়েছে।
৩) ভীষণ কঠিন লড়াই। তবে বার্সা আর রিয়াল বলেই বোধহয় ঘরের মাঠে উঠে দাঁড়ানোর একটা ক্ষীণ আশা রয়েছে।
৪) জার্মানির ‘এল ক্লাসিকো’ মানে কিন্তু বায়ার্ন বনাম বরুসিয়া লড়াই-ই। এই ম্যাচের দিকেও গোটা ফুটবল বিশ্বের চোখ থাকবে।
৫) বিশ্ব ফুটবলে প্রায় সব বড় টিমই এখন প্রধানত আক্রমণাত্মক খেলছে। যে কারণে কোনও কোনও ম্যাচে নিজেরাও কাউন্টার অ্যাটাকে গুচ্ছের গোল হজম করছে। ভারতীয় ফুটবলে এই ধারাটা সড়গড় হতে কিছুটা সময় লাগবে।
করিম বেঞ্চারিফা
১) মেসি পুরো ফিট না থাকাট বার্সার কাছে বড় ধাক্কা। নিজেদের খেলাটাই খেলতে পারেনি। তবে বায়ার্ন অসাধারণ খেলেছে। ডটর্মুন্ডের ঘরের মাঠে ওরাই রাজা। জার্মানিতে বায়ার্নের তুলনায় ওদের সমর্থক বেশি। গোটা স্টেডিয়াম যখন গলা ফাটায়, বিপক্ষ এমনিতেই চাপে পড়ে। রিয়াল ভাল খেলেছে সেটাও অবশ্য বলতে পারছি না।
২) গত বিশ্বকাপ আর ইউরো থেকেই জার্মানি যে আরও উন্নতি করেছে সেটা টের পাওয়া গেছে। অনেক তরুণ মুখ এসেছে। তারুণ্যের কাছেই পিছিয়ে পড়েছে স্প্যানিশ ক্লাব দু’টো। এখন কিছু বছর জার্মানি হয়তো বিশ্ব ক্লাব ফুটবল শাসন করবে।
৩) খুব কঠিন। তবে ৯০ মিনিটের লড়াইয়ে অনেক হিসেবই বদলে যেতে পারে।
৪) ইস্ট-মোহন ম্যাচ ঘিরে এখানে যেমন উন্মাদনা থাকে, জার্মানিতে বায়ার্ন-বরুসিয়া ঘিরে সেই উত্তেজনা। তবে গোটা বিশ্বে রিয়াল আর বার্সার তুলনায় জার্মানির দুই ক্লাবের ভক্তের সংখ্যা কিছুটা কম। তাই সব মিলিয়ে উত্তেজনা, আগ্রহ একটু কমতে পারে।
৫) এখানে কেন ‘গেল গেল’ রব ওঠে সত্যিই বুঝি না!
আর্মান্দো কোলাসো
১) বায়ার্ন খুব ভাল দল। বার্সাকে হারানোটা ওদের কাছে মোটেও বড় বিষয় নয়। আর রোনাল্ডোরা তো ছন্নছাড়া ফুটবল খেলেছে। রিয়াল আরও বেশি গোল খেলে অবাক হতাম না।
২) তিকিতাকা আর সুপার-স্পিড ফুটবলের ওষুধ পাওয়া গেছে, ভাবলে ভুল হবে। দু’টো আলাদা দলের খেলার স্টাইল, স্ট্র্যাটেজিও আলাদা হবে। এটাই স্বাভাবিক। তবে বিপক্ষের স্ট্র্যাটেজি যে দল ভাঙতে পারবে, তারাই সফল হবে।
৩) ফিরতি ম্যাচেও মেসির চোটই বার্সার বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে। ও এখনও আনফিট। আর ডর্টমুন্ডের বিরুদ্ধে রিয়াল যে ফুটবল খেলেছে তাতে ওদের ফাইনালে ওঠার আশা কম।
৪) বায়ার্ন-বরুসিয়া যে রকম ফুটবল খেলছে তাতে জার্মানির দুই ক্লাব মুখোমুখি হলে ‘এল ক্লাসিকো’র উন্মাদনাকেও ছাপিয়ে যাবে।
৫) এ দেশের ফুটবল-পণ্ডিতরাই এর উত্তর দিতে পারবেন। |