ডাকঘরের গাফিলতিতে এক বৃদ্ধ দম্পতির পাঁচশো টাকার ‘মানি-অর্ডার’ নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছেছিল আড়াই মাস পরে।
এ নিয়ে মামলার প্রায় আট মাসের শুনানির পরে দম্পতিকে মানসিক যন্ত্রণা দেওয়া এবং হয়রানির দায়ে ডাকঘর বিভাগকে আট হাজার টাকা জরিমানা করল হুগলি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। আদালতের প্রধান বিচারক নারায়ণচন্দ্র চক্রবর্তী বুধবার ওই রায় দেন।
আদালতের নির্দেশ, ক্ষতিপূরণ হিসেবে তিন হাজার টাকা এবং মামলার খরচ বাবদ পাঁচ হাজার টাকা এক মাসের মধ্যে ডাক বিভাগকে ওই দম্পতির হাতে তুলে দিতে হবে। দেরি হলে নয় শতাংশ হারে সুদ সমেত ওই টাকা দিতে হবে।
বিচারক জানান, নির্দিষ্ট ‘চার্জ’ জমা দিয়েই ডাকঘরের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়েছিলেন ওই দম্পতি। নির্দিষ্ট সময়ে তা পৌঁছে দেওয়া ডাকঘরের দায়িত্ব। ডাকঘর বিভাগের গাফিলতিতেই এমন ঘটেছে।
আদালতের রায়ে খুশি চন্দননগরের আপনজন পার্ক এলাকার বাসিন্দা, ওই দম্পতি রবীন্দ্রনাথ এবং শুভ্রা ভট্টাচার্য। শুভ্রাদেবী বলেন, “ডাকঘরের পরিষেবায় আমাদের মানসিক যন্ত্রণা এবং হয়রানি হয়। তাই দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা চেয়েছিলাম।” ডাকঘর কর্তৃপক্ষ আদালতের কাছে স্বীকার করেছেন, পদ্ধতিগত ত্রুটির জন্য ‘মানি-অর্ডার’ পৌঁছতে দেরি হয়েছে। ‘মানইর্ডার’ পাঠানো নিয়ে কতটা ভুগতে হয়েছে ওই দম্পতিকে?
গত বছর ১৮ ফেব্রুয়ারি শুভ্রাদেবী চুঁচুড়ার ধরমপুর উপ-ডাকঘর থেকে ওই ‘মানি-অর্ডার’ পাঠান কলকাতার বাঘাযতীনে এক আত্মীয়ের কাছে। কিন্তু সেই টাকা প্রথমে পৌঁছয়নি। আদালতের কাছে শুভ্রাদেবীরা অভিযোগে জানান, কারণ জানতে গিয়ে নানা ভাবে তাঁদের ঘুরতে হচ্ছিল। শুভ্রাদেবী মুখ্য ডাকঘরের সুপারিন্টেন্ডেন্টের অফিসে চিঠি দিয়ে সমস্যার কথা জানালেও তা মেটেনি। ১৭ এপ্রিল রবীন্দ্রনাথবাবুর বন্ধু শুভেন্দু মজুমদার এ ব্যাপারে খোঁজ নিতে গিয়েও যথাযথ উত্তর পাননি। উপায়ান্তর না দেখে ৩০ এপ্রিল চন্দননগর থানায় বিষয়টি জানান শুভ্রাদেবীরা। পুলিশ বিষয়টির খোঁজ নিতে ডাকঘরে গেলে পরের দিনই ‘মানি-অর্ডার’ নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছে যায়। টাকা পৌছনোর পরে চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেলকে চিঠি দিয়ে ক্ষতিপূরণ দাবি করে ভট্টাচার্য পরিবার। কিন্তু ক্ষতিপূরণ মেলেনি। গত বছর অগস্ট মাসে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন তাঁরা। |