হাওড়ার তৃণমূল সাংসদ অম্বিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনাবসান হয়েছে। বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। বৃহস্পতিবার ভোরে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ২ এপ্রিল থেকে তিনি ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তাঁর স্ত্রী বেলা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দুই মেয়ে আছেন।
এই প্রবীণ নেতার মৃত্যুর খবর পেয়ে দলীয় নেতা-কর্মীরা তাঁর হাওড়া-শিবপুরের বাসভবনে ভিড় করেন। হাসপাতাল থেকে তাঁর মরদেহ প্রথমে বিধানসভা ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল ক্লাব হয়ে মরদেহ পৌঁছয় তাঁর শিবপুরের বাসভবনে। সন্ধ্যায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় শিবপুর শ্মশানঘাটে।
শিবপুরের ধর্মদাস কুণ্ডু লেনের বাসিন্দা অম্বিকাবাবু সকলের কাছে ‘টকাইদা’ নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন। শেষ দিন পর্যন্ত যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংস্থার সঙ্গে। তিনি ছিলেন সিএবি-র প্রাক্তন সহ-সভাপতি এবং কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। ছিলেন লন্ডনের মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের সদস্যও। অতীতে ইংল্যান্ডের ক্রিকেট দল ভারতে খেলতে এলে তিনি হতেন তাদের ‘লোকাল ম্যনেজার’। লন্ডনের হ্যাটফিল্ড টেকনিক্যাল কলেজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে অম্বিকাবাবু ব্যবসার সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৮২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত টানা ২৫ বছর মধ্য হাওড়া বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন তিনি। এর মধ্যে ’৯৮ সালে হাওড়া সদর কেন্দ্র থেকে লোকসভাতেও প্রার্থী হন। কিন্তু সিপিএম প্রার্থীর কাছে হেরে যান। প্রথমে কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পরে যোগ দেন তৃণমূলে। ২০০৯ সালে তিনি তৃণমূল প্রার্থী হিসেবেই হাওড়া সদর কেন্দ্র থেকে লোকসভায় নির্বাচিত হন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অম্বিকাবাবু বহু গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। ’৯৬ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত তিনি ছিলেন বিধানসভার সহকারী বিরোধী দলনেতা। বিধানসভার বিষয় সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত। ২০০৯ সালে সাংসদ হয়ে তিনি কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের সঙ্গে যুক্ত হন। |