ফের পুলিশের আচরণে মুখ খুলল সুপ্রিম কোর্ট। সম্প্রতি গুড়িয়া-কাণ্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে খোদ দিল্লি পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্তার হাতে হেনস্থা হতে হয়েছিল এক তরুণীকে। সেই প্রসঙ্গেই কোর্টের প্রশ্ন, শিশুকন্যার ধর্ষণের প্রতিবাদ করতে গিয়ে কেন মার খেতে হল এক মহিলাকে? দিল্লি পুলিশের উদ্দেশ্যে বিচারপতি জি এস সিঙ্ঘভির নেতৃত্বে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চের বক্তব্য, “আপনাদের বিচার-বিবেচনা কোথায় গিয়েছে? এক নিরস্ত্র মহিলার গায়ে কী ভাবে হাত তুললেন পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্তা?”
মাসখানেক আগে পঞ্জাবের তরনতারনে এক তরুণীকে মারধর করার জন্য পঞ্জাব পুলিশকে একই ভাবে ভর্ৎসনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। আর আজ দিল্লি পুলিশকে এক হাত নিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। দিন কয়েক আগে দিল্লিতে পাঁচ বছরের শিশুকন্যার ধর্ষণের প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুলিশের হাতে নিগৃহীত হন এক তরুণী। ওই তরুণীকে বার পাঁচেক চড় মেরেছিলেন পুলিশের এসিপি। সংবাদমাধ্যমে সেই ছবি প্রকাশিত হওয়ার পরে দেশ জুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সাসপেন্ড করা হয় ওই পুলিশ কর্তাকে। সেই ঘটনা প্রসঙ্গেই দিল্লির পুলিশ কমিশনারের কাছ থেকে জবাবদিহি চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
একই সঙ্গে আলিগড়ে এক পঁয়ষট্টি বছরের বৃদ্ধাকে মারধরের জন্যও উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তীব্র নিন্দা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিবকে এ বিষয়ে একটি হলফনামা পেশ করার নির্দেশও দিয়েছে আদালত। রাজধানীতে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায় উদ্বিগ্ন দিল্লি হাইকোর্টও। প্রধান বিচারপতি ডি মুরুগেসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের এক বেঞ্চ বলে, দিল্লির পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। এর প্রকৃত কারণ জানতে দিল্লি পুলিশ ও কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশও দিয়েছে আদালত। হাইকোর্টের বক্তব্য, “মহিলাদের প্রতি অত্যাচার, যৌন নির্যাতনের ঘটনা এ শহরে কেন দিন দিন বাড়ছে, তার মূল কারণ খুঁজে বার করা হোক।” গুড়িয়া কাণ্ডের প্রেক্ষিতেই যে হাইকোর্টের এই নির্দেশ তা বলাই বাহুল্য। সর্বোচ্চ আদালতের সুরেই সম্প্রতি গুড়িয়া-সহ বেশ কয়েকটি ধর্ষণ সংক্রান্ত মামলার তদন্তে পুলিশের ভূমিকার আজ সমালোচনা করেছে হাইকোর্ট।
দিল্লির ওই পাঁচ বছরের সেই শিশুকন্যা গুড়িয়াকে ধর্ষণে অভিযুক্ত মনোজ শাহকে ৫ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অন্য অভিযুক্ত প্রদীপের সঙ্গে মনোজের বয়ান মিলিয়ে দেখার জন্য তার হেফাজত চেয়েছিল দিল্লি পুলিশ। সেই আর্জি মঞ্জুর করেছেন অতিরিক্ত দায়রা বিচারক। একই সঙ্গে মনোজের রক্ত মাখা জামা যাতে উদ্ধার করা যায়, তাই তাকে বিহারের মুজফ্ফরপুরে নিয়ে যাওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
|