নাসিকের সঙ্গে পাল্লা দিতে বর্ষার পেঁয়াজ ছয় জেলায় |
গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় • কলকাতা |
নাসিকের পেঁয়াজ না এলে বাঙালির পাতে ঝাঁঝ নেই। ব্যবসায়ীদেরও মাথায় হাত।
ভিন্ রাজ্যের উপরে নির্ভরতার এই ছবিটা বদলাতে এ বার মাঠে নেমেছে রাজ্যের উদ্যানপালন দফতর। হুগলি, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং বীরভূম এই ছয় জেলায় অসময়ের পেঁয়াজ চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ৭০০ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। খড়্গুরের আইআইটি-তে ইতিমধ্যেই ৬০ জন চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজও হয়ে গিয়েছে।
উদ্যানপালন দফতরের মন্ত্রী সুব্রত সাহা বলেন, “আমাদের রাজ্যে মোট প্রয়োজনের অর্ধেক পেঁয়াজই অন্য রাজ্য থেকে আমদানি করতে হয়। এই নির্ভরতা কমাতে এবং চাষিরা যাতে দাম পান, চার জন্যই পেঁয়াজ চাষে চাষিদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।” উৎসাহী চাষিদের উন্নত বীজ ছাড়াও কিছু আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে বলে সরকারি সূত্রের খবর।
প্রতি বছরই পুজোর আগে রাজ্যে পেঁয়াজের দাম চড়া থাকে। কেননা এ রাজ্যে যে সামান্য পেঁয়াজ চাষ হয়, তার জোগান সেই সময়ে ফুরিয়ে যায়। ব্যবসায়ীদের প্রায় পুরোপুরি মুম্বইয়ের নাসিক থেকে পেঁয়াজ আমদানির উপরে নির্ভর করতে হয়। তার জেরে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। অন্তত ২৫ থেকে ৩০ টাকা কিলো দরে বিকোয় পেঁয়াজ। বর্ষা বেশি হলে দাম আরও চড়ে। রাজ্যের নিজস্ব উৎপাদন না থাকায় দাম নিয়ন্ত্রণেরও কোনও সুযোগ থাকে না।
গত মরসুমে পরীক্ষামূলক ভাবে রাজ্যের কিছু জেলায় পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছিল। মূলত যে জেলাগুলিতে কম বৃষ্টিপাত হয় সেই সব জেলাতেই এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়। বাঁকুড়া-সহ অন্য কয়েকটি জেলায় ভাল ফল পাওয়া গিয়েছে। তার ফলেই এ বার ছয় জেলায় বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষে উদ্যোগী হয়েছে উদ্যানপালন দফতর। যে সব জেলায় কম বৃষ্টি হয়, মূলত সেগুলিকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। কেননা গাছের গোড়ায় জল জমলে তা কখনওই পেঁয়াজ চাষের পক্ষে অনুকূল নয়।
উদ্যানপালন দফতর সূত্রের খবর, যে সব চাষি এতে উৎসাহী হচ্ছেন, তাঁদের থেকে আবেদনপত্র নেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। যাঁরা অন্তত এক বিঘে জমিতে চাষ করবেন, তাঁদের ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত অনুদান দেবে রাজ্য সরকার। উন্নত মানের বীজও সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। হুগলির উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিক দীপক ঘোষ বলেন, “গত মরসুমে আমাদের জেলার বিভিন্ন জায়গায় ভাল মানের পেঁয়াজ হয়েছে। চাষিরা ভাল দাম পেয়েছেন। সেই কারণে এ বারও এই জেলার চাষিরা এই চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।” |