ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে অর্থলগ্নিকারী সংস্থা
কোনও অফিস আগেই জনতার ক্ষোভের আঁচ পেয়েছে। কোনওটি তালাবন্ধ, কর্মচারী থেকে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার দেখা নেই কারও। আবার অনেকেই এখনও দিব্যি কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন। কোথাও আবার দেওয়া হয়েছে ফ্লেক্স। তাতে বড় বড় করে লেখা ‘আরবিআই অনুমোদিত’। জেলায় ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা আর্থিক সংস্থাগুলির বেশির ভাগেরই দাবি, প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়েই তাঁরা কাজ করছেন। অবশ্য একই দাবি ছিল ভুঁইফোড় আর্থিক সংস্থা ‘সারদা’রও।
রামপুরহাটের ভাঁড়শালা পাড়া। জাতীয় সড়কের ধারে রয়েছে বেশ কয়েকটি আর্থিক সংস্থার অফিস। একটি বাড়ির বিভিন্ন তলাতেই পাঁচটি সংস্থার অফিসের খোঁজ মিলল। সাম্প্রতিক পরিস্থিতির চাপে দিন চারেক আগেই তালা পড়েছে সেই বাড়ির নীচের তলায় থাকা ‘অ্যাঞ্জেল এগ্রিটেক লিমিটেডে’র অফিসে। নীচের তলারই অন্য একটি ঘরে অবশ্য খোলা আছে ‘ফ্লিডেক্স ইনভেস্ট কোম্পানি’ নামে একটি সংস্থার অফিস। সংস্থার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম-এর দাবি, “আমরা ঠিক সময়েই গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিচ্ছি।” একই বাড়ির দোতলায় রমরমিয়ে চলছে ‘বর্ধমান সানমার্গ’। এ মাসেই ‘গ্রিন রে ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড’ নামে একটি সংস্থা তাদের অফিস খুলেছে ওই বাড়িতেই। সংস্থার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার সঞ্জয় রাম-এরও দাবি, “আমাদের কোনও অসুবিধা হচ্ছে না।” একই বাড়িতে থাকা ‘সিলিকন প্রজেক্ট লিমিটেড’ নামে অপর একটি সংস্থার অফিসে অবশ্য ‘রিসেপশনিস্ট’ ছাড়া আর কাউকে পাওয়া যায়নি। অন্য দিকে, অনেকদিন আগেই গ্রাহকেরা ‘বোস গ্রুপ কোম্পানি’র তালাবন্ধ ঘরে জানালায় কাদা ছুঁড়েছিলেন। ব্যবসা গুটিয়ে যাওয়ায় প্রাপ্য টাকা মেলেনি। সে দিন গ্রাহকদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ করেছিলেন এ ভাবেই।
রামপুরহাটের একটি অফিস। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
শহরের লোটাস প্রেস মোড় ছাড়িয়েই জাতীয় সড়কের ধারে ‘রোজভ্যালী’র রামপুরহাট শাখা অফিস। সেখানে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মিলনকুমার ভট্টাচার্য বললেন, “গ্রাহকদের মধ্যে যাঁরা শিক্ষিত, তাঁরা পরিস্থিতির কথা বুঝতে পারছেন। তবে অনেকেই কোম্পানির পরিস্থিতি জানতে ভিড় করছেন। তাঁদের আমরা বোঝাচ্ছি।” জাতীয় সড়কের ধারেই আর এক সংস্থা ‘ভিবজিওর অ্যালায়েড ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিলেড’। এজেন্টদের ভিড় দেখা গেল। মুকাদ্দর শেখ নামে এক এজেন্ট জানালেন, “তিন বছর আগে ‘সম্পদ ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি’র নলহাটি শাখার এজেন্ট ছিলাম। গ্রাহকদের থেকে নিয়ে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই টাকা গ্রাহকেরা আজও ফেরত পাননি।” মাঝপথেই ওই সংস্থা ছাড়তে হয় তাঁকে। বাসস্ট্যান্ড চত্বর এলাকায় থাকা বেশ কিছু আর্থিক সংস্থার অফিস ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। খোলা ছিল ‘এমজিএইচ ফিনান্স কোম্পানি’ নামে একটি সংস্থার অফিস। বছর দেড়েক আগে খোলা সেই সংস্থা অবশ্য এখন নতুন করে ‘আরবিআই অনুমোদিত’ দাবি করে অফিসের বাইরে বড় করে ফ্লেক্স দিয়েছে। সংস্থার এক কর্তার দাবি, “২০১২-র অগস্ট মাসে আমাদের সংস্থা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমোদন পেয়েছে।”
খোলা রয়েছে সাঁইথিয়ার ইউনিয়ন মোড়ের ‘রোজভ্যালী’র শাখা অফিসটিও। ওই শাখা সূত্রে খবর, গত দু’ বছর ধরে সেখানে প্রায় ২০০ জন এজেন্ট কাজ করছেন। সাঁইথিয়ার লাউতোড় মোড়ে ‘র্যামেল কোম্পানি’র মাসে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকার ব্যবসা করে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সংস্থার বহু গ্রাহক কমে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সাঁইথিয়াতে প্রায় ১২টি ভুঁইফোড় অর্থলগ্নি সংস্থার খোঁজ মিলেছে। বোলপুরের দর্জি পাড়া, শ্রীনিকেতন রোড, রবীন্দ্র বীথি বাইপাস-সহ শহরের বহু জায়গায় রয়েছে নানা অর্থলগ্নি সংস্থা। অনেকের অফিসেই ‘ভারতীয় জীবন বিমা নিগমে’র লোগো দেওয়া বোর্ডও ঝুলতে দেখা যায়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অবশ্য সবাই কুলুপ এঁটেছেন। ডিএম জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে সংস্থাগুলিকে খতিয়ে দেখব। আজ, শুক্রবার এই নিয়ে একটি প্রশাসনিক বৈঠক করা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.