রাজারকেন্দ জুনিয়ার হাইস্কুল বলতে সাকুল্যে একটি মাত্র ঘর। সেখানেই ক্লাস চলে পঞ্চম, ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়াদের। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা মাত্র ৩৬। দুই শিক্ষিকা নিযুক্ত থাকলেও এক জন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকায় বর্তমানে এক শিক্ষিকাকেই স্কুল চালাতে হয়। অভিযোগ, পরিকাঠামোগত এই সমস্যার জন্যই এই রাজনগরের এই স্কুলের প্রতি আকর্ষণ হারাচ্ছে পড়ুয়া ও অভিভাবকেরা। অভিভাবকদের ক্ষোভ, আরেকজন শিক্ষককে ডেপুটেশনে নিয়োগ করা হলেও পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকায় সেটাও ফলপ্রসূ হয়নি।
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে রাজনগরের গাংমুড়ি জয়পুর পঞায়েত এলাকার সিসাল ফার্মের কাছাকাছি থাকা রাজারকেন্দ গ্রামে ওই স্কুলটি হওয়ায় খুশি হয়েছিলেন বাঁশবোনা, ভুরকুণ্ডা, ঢাকা, মুশাবুনি, গুরুচণ্ডী প্রভৃতি গ্রামের মানুষ। তাঁদের খুশি হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল, পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হতে বাচ্চাদের পাঁচ কিলোমিটার দূরের আলিগড় উচ্চবিদ্যালয় যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। কিন্তু পরিকাঠামোগত সমস্যার জন্য আভিভাবকেরা ছেলে মেয়েদের এ বার পঞ্চম শ্রেণিতেও ওই জুনিয়ার স্কুলে কম ভর্তি করেছেন এমনটাই দাবি আভিভাবক মিলন মণ্ডল, সনথ পাল, কবিরাজ কিস্কু, বাবুরাম মাড্ডি ও আজিত বাগদিদের। তাঁদের প্রশ্ন, “এক শিক্ষিকা ও একটি ঘরে কী তিনটি ক্লাসের পড়ুয়াদের পড়ানো সম্ভব? আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছিলাম যে, স্কুলের এক শিক্ষিকা থাকছেন না সেই সময় আরেকজনকে ডেপুটেশনে নেওয়া হোক। দাবি মেনে দিন কয়েকের জন্য একজন ডেপুটেশনের শিক্ষক নিয়েগ করা হলেও মাত্র কয়েক দিন স্কুলে এসে আর আসেননি। এর ফলে শিক্ষক সমস্যা রয়েই গিয়েছে।” বর্তমানে ওই স্কুলের একমাত্র শিক্ষিকা পামেলা সরকারও আসুবিধার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, “মে মাসেই মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে অপর শিক্ষিকা কাজে যোগ গিলে সমস্যা মিটবে। তবে ক্লাস ঘরের সমস্যাটা থেকেই যাচ্ছে।”
একই কথা বলেছেন রাজনগরের এআই দেবাশিস রায়। তবে তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে এই সময়কালে ডেপুটেশনে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। আর পরিকাঠামের প্রশ্নে রাজনগরের বিডিও প্রভাংশু হালদার বলেন, “ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত সমিতির টাকায় ওই স্কুলের রান্নাঘর ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আরেকটি ঘর তৈরির টাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই সমস্যা মিটবে।” |