হামলায় বন্ধ ৮৫ অফিস, অভিযোগ সিপিএমের
দিল্লিতে অমিত মিত্রকে নিগ্রহের ঘটনার পরে বর্ধমান জেলার গ্রামীণ এলাকায় সিপিএম-সহ বামফ্রন্টের নানা শরিক দল এবং বিভিন্ন শাখা সংগঠনের মোট ৮৫টি অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার সঙ্গে দেখা করে এমনই অভিযোগ করলেন সিপিএম নেতার।
বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দিতে যাওয়া দলে ছিলেন সিপিএমের চার জেলা নেতা আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল, আইনুল হক, গনেশ চৌধুরী ও তাপস সরকার। সিপিএম নেতাদের অভিযোগ, দিল্লির ওই ঘটনার পরে তাঁদের অফিসগুলিতে ভাঙচুর, লুঠতরাজ ও আগুন লাগানো হয়েছে অবাধে। তৃণমূলের লোকজন তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলা চালাচ্ছে। অথচ, আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের না করে আক্রান্তদের বিরুদ্ধেই তা করছে পুলিশ। পুলিশ সুপার সিপিএম নেতাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। বন্ধ থাকা অফিসগুলি খুলতে চাইলে পুলিশকে আগে জানাতে বলেন। সে ক্ষেত্রে পুলিশ মোতায়েন করে সেগুলি খুলতে সাহায্য করা হবে বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।
এসপি অফিসে নেতারা। —নিজস্ব চিত্র।
সিপিএমের নেতারা এ দিন স্মারকলিপিতে মোট ১৪টি জোনাল কমিটি এলাকায় তৃণমূলের হামলার অভিযোগ তুলে তার বিবরণ দিয়েছেন। বর্ধমান শহর, বর্ধমান সদর, খণ্ডঘোষ, রায়না, মাধবডিহি, মেমারি, জামালপুর, কালনা, মঙ্গলকোট, গুসকরা, ভাতার, বুদবুদ-গলসি ও কাঁকসা এলাকায় তাঁদের সদস্য-সমর্থকদের উপরে হামলা ও মারধর, তাঁদের দোকান বন্ধ করে দেওয়া, বোমাবাজি, সন্ত্রাস সৃষ্টি ইত্যাদির অভিযোগ করেছে সিপিএম। দলের নেতাদের দাবি, প্রতিটি জায়গায় তাঁদের পতাকা পোড়ানো হচ্ছে। মাইক লাগিয়ে জনসভা করে নিজেদের কর্মী-সমর্থকদের সিপিএমের লোকজনকে আক্রমণে ইন্ধন জোগাচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশের উপস্থিতিতেই সিপিএমের অফিসে ভাঙচুর বা আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটছে বলেও তাঁদের অভিযোগ।
এখানেই শেষ নয়। সিপিএমের ওই নেতাদের আরও অভিযোগ, পথঘাটে সর্বত্র চলছে তাঁদের সব স্তরের কর্মী-সমর্থকদের মারধরের ঘটনা ঘটছে। কালনায় দলের জেনাল কমিটির সদস্য শ্যামল পালের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর হয়েছে। তার প্রতিবাদ করায় স্থানীয় দুলেপাড়ার ২১টি বাড়ির লোকজনের উপরে চড়াও হয় তৃণমূলের লোকেরা। বাড়ি ফেরার পথে আক্রন্ত হন লোকাল কমিটির সদস্য বরুণ পাল। মেমারি এলাকায় দলের নেতা শিশির চট্টোপাধ্যায়কে মারধর, শ্রীধরপুর গ্রামে সিপিএম সমর্থক জয়দের মিত্রকে মারধর, নেতা তাপস চট্টোপাধ্যায় ও অনিল মাইতির বাড়িও ভাঙচুর হয়েছে বলে অভিযোগ।
সিপিএম নেতৃত্ব পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছেন, গত ১০ এপ্রিল মাঝেরগ্রামে সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্পাদক নিলু ভট্টাচার্যকে মারধর করা হয়েছে। একই দিনে ভাতার ১ লোকাল কমিটির নেতা প্রকাশ রায়চৌধুরী, অমলেন্দু কোঙার, প্রাক্তন শিক্ষক রাখহরি রায়, বাবর আলিও একই ভাবে তৃণমূলের লোকেদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন। আউশগ্রামের বোরেণ্ডা পঞ্চায়েতের বসন্তপুর গ্রামে সিপিএমের সদস্য মোজারুল মণ্ডল ও আব্দুল আলিমের বাড়িতে তৃণমূলের লোকজন চড়াও হয়। তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি বাড়ির গরু, ছাগলও। প্রতিটি ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে দাবি সিপিএম নেতাদের।
পুলিশ সুপার অবশ্য পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ মানেননি। তাঁর বক্তব্য, “প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই পুলিশ অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করারও চেষ্টা করেছে। যেমন, রাজ কলেজের কাছে সিপিএমের একটি অফিসে আগুন লাগাতে যাওয়ার অভিযোগে পাঁচ জনকে ধরা হয়েছে। তবে এলাকায় না থাকায় সব ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের ধরা পুলিশের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনি।”
তৃণমূলের বর্ধমান জেলার অন্যতম পর্যবেক্ষক অলোক দাস তাঁর দলের লোকজনের বিরুদ্ধে হামলা বা মারধরে জড়িত থাকার কথা মানতে চাননি। তাঁর পাল্টা দাবি, “সিপিএম ৩৪ বছর ধরে যে অত্যাচার চালিয়েছে, তাতে মানুষ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। তাই গণরোষে কিছু গোলমালের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.