রাজ্যের অন্য অংশের সঙ্গে উত্তরবঙ্গে প্রশিক্ষণ ছাড়া আপার-প্রাইমারি স্কুলে চাকরিরত শিক্ষক-শিক্ষিকার বিএড পড়ার ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার। বুধবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠক করে এ কথা জানিয়েছেন নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুভশঙ্কর সরকার। সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, সর্বশিক্ষা অভিযানের দূরশিক্ষা প্রকল্পের অধিকর্তা চন্দ্রভূষণ শর্মা, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য সমীর মজুমদার, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার শ্যাম সুন্দর বৈরাগ্য, ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইন্দ্রজিৎ রায়-সহ অনেকেই। ‘ওপেন ডিসটেন্স লার্নিং’ পদ্ধতিতে ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিএড পড়ানোর ব্যবস্থা হবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। খরচের সিংহভাগ বহন করবে রাজ্য সরকারই। স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে ওই সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গে ৩৫টি বিএড কলেজের মাধ্যমে এই শিক্ষাবর্ষ থেকেই প্রশিক্ষণ হবে।
শিক্ষার অধিকার আইন মেনে ২০১৫ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে মধ্যে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকার প্রশিক্ষণ নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অন্যথায় তাঁরা স্কুলে পড়াতে পারবেন না। তাই ওই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা বলে জানান উপাচার্য শুভশঙ্করবাবু। তিনি বলেন, “স্কুলগুলিতে প্রাইমারি এবং আপার প্রাইমারির শিক্ষকদের অনেক ক্ষেত্রে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস নিতে হয়। প্রায় ২৯৫১৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন আপার প্রাইমারি স্কুলগুলিতে যাদের শিক্ষক প্রশিক্ষণ নেই। তাঁদের জন্য এ ব্যবস্থা হয়েছে।”
স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রাথমিক স্কুলের ৭৫ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা যাঁদের প্রশিক্ষণ নেই তাঁদের জন্য ইতিমধ্যেই ‘ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টারি এডুকেশন’-এর ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। এ বার আপার-প্রাইমারির যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ নেই তাঁদের জন্য এই ব্যবস্থা করা হল। আগামী মে মাস থেকেই ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হবে। ২ বছরের ওই প্রশিক্ষণ দিতে ছুটির দিনগুলিতে নির্দিষ্ট বিএড কলেজগুলিতে ক্লাস হবে। পুজোর, গরমে এবং শীতে স্কুল ছুটির সময় কাজে লাগিয়ে বিএড কলেজগুলিতে পড়ানো হবে। এমনকী প্রশিক্ষণরত শিক্ষক-শিক্ষিকার পাঠ্য বিষয়ে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে জানানোর ব্যবস্থা করা হবে রেডিও, টিভির অনুষ্ঠানের মাধ্যমেও। প্রার্থীরা পড়ার নথি সেখান থেকে সংগ্রহ করবেন। রাজ্যে ১৮৪টি এনসিটিসি অনুমোদিত বিএড কলেজগুলিকে কেন্দ্র হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কাকে কোনও বিএড কলেজে প্রশিক্ষণ নিতে হবে তা ওসেব সাইটে প্রকাশ করা হবে। এ দিন প্রশিক্ষণের বিষয়টি কোথায় কী ভাবে করা হবে তা নিয়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মশালা হয়। উচ্চ শিক্ষা দফতর, ভারত সরকারের মানব সম্পদ উন্নয়ন দফতর, নেতাজি মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, সর্ব শিক্ষা অভিযান প্রকল্প তাতে সহায়তা করছে। |