জমির সমস্যা শুধু শিল্পে নয়। দক্ষিণবঙ্গে সীমান্ত-চৌকি তৈরির জন্যও জমি পেতে সমস্যা হচ্ছে। যথেষ্ট সংখ্যায় সীমান্ত-চৌকি তৈরি করতে না-পারার এটা একটা বড় কারণ বলে মনে করেন সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বা বিএসএফের ডিরেক্টর জেনারেল সুভাষ জোশী।
দক্ষিণেশ্বরের আলমবাজারে বিএসএফের আঞ্চলিক সদর দফতরে বুধবার এক অনুষ্ঠানে জোশী জানান, জমির সমস্যা আছে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জায়গাতেই। তাঁর কথায়, “জমি-সমস্যা নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা মিটে গিয়েছে। অন্যান্য ক্ষেত্রেও এই সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে।” তিনি জানান, সুন্দরবন এলাকায় কিছু ভাসমান সীমান্ত-চৌকি তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে।
বিএসএফ-প্রধানের এ দিনের বক্তব্যে এটা স্পষ্ট যে, সীমান্ত পেরিয়ে এ রাজ্যে জাল নোট, মাদক দ্রব্য ও ফেনসিডিল সিরাপ বেশি মাত্রায় ঢুকছে। তাঁর কথায়, “ইদানীং এই সব সামগ্রী বাজেয়াপ্ত হচ্ছে বেশি পরিমাণে। এগুলো আটকানোর ক্ষেত্রে আমাদের দায়িত্ব রয়েছে ঠিকই। তবে এগুলো কোথা থেকে আসছে, কারা আনছে, তা দেখার দায়িত্ব রাজ্যের বিভিন্ন সংস্থারও।” এ-সব আমদানি ঠেকানোর জন্য নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে বলে জানান জোশী।
শুধু নিষিদ্ধ সামগ্রী নয়, সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশও যে বাড়ছে, তা স্বীকার করে নেন বিএসএফের ডিজি। অনুপ্রবেশ রুখতে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিজিবি-র সঙ্গে বিএসএফ যৌথ টহলদারি চালাচ্ছে বলে জানান তিনি। জোশী জানান, ভারতে থাকা বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে গত মার্চেই বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে কথা হয়েছে। সরকারি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পরেই ভারতে থাকা বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো হবে।
প্রাণঘাতী নয়, এমন অস্ত্র ব্যবহার করার ফলে সীমান্তে সাধারণ মানুষের প্রাণহানি ও রক্তপাত অনেক কমেছে বলে দাবি করেন বিএসএফের প্রধান। তবে এই ধরনের অস্ত্র ব্যবহারেও যে ঝুঁকি আছে, তা মেনে নেন তিনি। জানান, এই ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা সত্ত্বেও এক বছরে ৩৭ জন বিএসএফ জওয়ান আহত হয়েছেন এবং বনগাঁ সীমান্তে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।
ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু পাঠানোকে বৈধতা দেওয়ার জন্য বিএসএফের প্রাক্তন ডিজি ইউ কে বনশল একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু এই ব্যাপারে এখনও সরকারি অনুমোদন মেলেনি। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জোশী বলেন, “একটা পরিকল্পনা হয়েছিল। সরকারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। আমরা প্রস্তাব দিতে পারি। কিন্তু তা রূপায়ণ করার ক্ষমতা তো সরকারের হাতে।”
|
অটোয় মিটার বসানোর ব্যাপারে সময় চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে রিভিউ পিটিশন করতে চলেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বুধবার জানান, অটোয় মিটার বসানোর বিরোধী ট্যাক্সি ও অটো ইউনিয়নগুলি। অথচ, আট সপ্তাহের মধ্যে অটোয় মিটার বসাতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এর প্রেক্ষিতে সরকারের কী করা উচিত, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাছে। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, অটোয় মিটার বসানোর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে ট্যাক্সি ইউনিয়নগুলি। তাদের যুক্তি, অটোয় মিটার বসলে ট্যাক্সিতে যাত্রী পাওয়া কঠিন হবে। লোকসান হবে ট্যাক্সিমালিকদের। আদালতের নির্দেশ মেনে সরকার অটোয় মিটার বসানোর সিদ্ধান্ত নিলে ট্যাক্সিমালিকেরা আদালতে যাবেন বলে হুমকি দিয়েছেন বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের নেতা সুমন গুহ। একই ভাবে, অটো ইউনিয়নগুলিও তাদের গাড়িতে মিটার বসানোর বিরোধী। অটো ইউনিয়নের নেতারা তাঁদের আপত্তির কথা সরকারকে জানিয়েও দিয়েছেন। |