একটি ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থার ‘সর্ব ভারতীয় লিডার’-এর বাড়িতে বুধবার দুপুরে ভাঙচুর চালাল আমানতকারী ও এজেন্টরা। ‘সম্বন্ধ’ নামে ওই সংস্থার ‘লিডার’-এর নাম রাজেশ সিংহ। বাড়ি লালগোলার কালমেঘা গ্রামে। টাকা ফেরত ও রাজেশ সিংহ-সহ ‘সম্বন্ধ’-এর মালিক ও পরিচালকদের গ্রেফতারের দাবিতে এ দিন দুপুরে তাঁর দোতলা বাড়িতে ভাঙচুর চালায় একদল আমানতকারী ও এজেন্টরা। পরে পুলিশ পৌঁছে অবস্থা সামালায়। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “সম্বন্ধ নামের ওই সংস্থার ‘সর্ব ভারতীয় লিডার’-এর বাড়িতে ভাঙচুর হয়েছে। নির্দিষ্ট অভিযোগ এলে সংস্থার কর্তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অন্যদিকে ওই সংস্থার এজেন্ট ও আমানতকারীদের অনেকের দাবি, দিন তিনেক ধরে ভগবানগোলা ও লালগোলা থানায় গিয়ে হয়রান হলেও তঁদের কাছ থেকে পুলিশ অভিযোগ নেয়নি বলেই এ দিন চড়াওয়ের ঘটনা ঘটেছে। ‘সম্বন্ধ’-এর লালগোলার এজেন্ট নিশীথ হালদার বলেন, “২০১০ মালতী রাহা ও তাঁর ছেলে দীপক রাহা ‘সম্বন্ধ’ নামের একটি অর্থলগ্নি সংস্থা খোলে। প্রধান কার্যালয় কলকাতার চ্যাটার্জি ইন্টারন্যাশানলের ১৪ তলায়। ওই সংস্থার ‘সর্ব ভারতীয় লিডার’ পদে কাজ করেন রাজেশ সিংহ। তাঁর অধীনেই আমরা এজেন্ট হিসাবে কাজ করি। আমানতকারীদের থেকে সংগ্রহ করা প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা গত বছরের মার্চে ম্যাচিওর হয়েছে। আজও মেলেনি সেই টাকা। উপরন্তু রাজেশ সিংহ বেপাত্তা। তাঁর মোবাইলও বন্ধ রয়েছে। সেই ক্ষোভ আজ আছড়ে পড়েছে রাজেশ সিংহের সদ্য নির্মিত বিশাল দোতলা বাড়ির উপর।”
লালগোলার কালীবাগ গ্রামের প্রদ্যুৎ ভাস্করও ওই সংস্থার এজেন্ট। আমনতকারীদের থেকে সংগ্রহ করে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা তিনিও জমা দিয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, “সুদ-আসল মিলিয়ে সব টাকা ফেরত দেওয়ার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে বছর খানেকের উপর। অথচ টাকা ফেরত না দিয়ে রাজেশ বেপাত্তা। লালগোলা ও ভগবানগোলা থানায় গিয়ে এফআইআর করতে যাই। বলা হয়, “ওই বিষয়ে আইনত পুলিশের কিছু করার নেই।’’ ফলে মানুষ ক্ষেপে গিয়ে ভাঙচুর করেছে। এক আমানতকারী লালগোলার সোমনাথ সরকার ‘সম্বন্ধ’-এর তহবিলে ১৬ হাজার টাকা জমা দেন। তিনি বলেন, “গরিব মানুষদের টাকায় গ্রামে বিশাল বাড়ি করছেন রাজেশ সিংহ। ফলে প্রতারিত মানুষজনের ক্ষোভের প্রকাশ এ দিনের ভাঙচুরের ঘটনা।” |