একেই বোধহয় বলে ‘গোদের উপর বিষফোঁড়া’। এপ্রিলের শুরু থেকে দফায় দফায় শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে কান্দি মহকুমার কৃষকরা। এরই মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে কান্দির বড়ঞা ব্লকের পাঁচটি অঞ্চলে ব্যাপক শিলাবৃষ্টিতে বোরো চাষিরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত। এ ছাড়াও তিল, কচু, পেঁয়াজ ও গ্রীষ্মকালীন সব্জির চাষও ব্যাপক মার খেয়েছে বলে দাবি কৃষকদের।
বোরো চাষের শুরু থেকেই আবহাওয়া বিরূপ। চাষিদের দাবি, বীজতলা তৈরির পর কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশের সঙ্গে কনকনে ঠাণ্ডায় বীজের অঙ্কুর ঠিকমতো বের হয়নি। মার্চ মাসের মাঝামাঝি তাপমাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় সেচ পাম্পের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জল চাষের কাজে লাগানো হয়। কিন্তু ভোল্টেজ কম থাকায় প্রথমে সেচের জল তুলতে অসুবিধা হলেও পরে বিদ্যুৎ দফতরের তৎপরতায় কোনও কোনও চাষিরা ফসল বাঁচাতে সক্ষম হন। তবে তাতে শেষ পর্যন্ত বাদ সাধে প্রকৃতি। কালবৈশাখীর ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হয় ফসলের। |
নুয়ে গিয়েছে ধান গাছ। —নিজস্ব চিত্র। |
মঙ্গলবার দুপুরের বড়ঞা ১ ও ২ নম্বর ব্লক, সাহোড়া, কুরুন্নুরুন, সুন্দরপুরে শিলাবৃষ্টির কারণে ধানের শিষ পাঁচ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে প্রায় দু’হাজার হেক্টর জমির ধান নষ্ট আধিকারিকদের। শিলাবৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা অনেক কমে যাওয়ায় ফসলের আরও ক্ষতির ভয়ে আশঙ্কিত চাষিরা। কুরুন্নুরুনের দূর্গিগ্রামের চাষি শান্তি ধীবর বলেন, “ছ’বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। প্রথমে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের হাত থেকে ফসলকে বাঁচাতে পারলেও শিলাবৃষ্টিতে মারাত্মক ক্ষতি হয়ে গেল। এখন কি করব বুঝতে পারছি না।”
বোরো ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত তিলের চাষও। শিলাবৃষ্টিতে তিল গাছের মাথা ভেঙে গেছে। ওই ব্লকে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির তিল নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কৃষি আধিকারিকরা। বুধবার বড়ঞার সহ কৃষি উন্নয়ন অধিকর্তা রবিশঙ্কর দাস ও বড়ঞা পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ শ্রীজিৎ মুখোপাধ্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান। শ্রীজিৎবাবু বলেন, “বোরো ধান ফলনের মুখে শিলা বৃষ্টিতে ধানের উৎপাদন হবে না বলেই মনে হচ্ছে। বিষয়টি বিডিওর মাধ্যমে জোলাশাসককে জানানো হবে।” রবিশঙ্কর বাবু বলেন, “বৃষ্টিতে বোরো চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলার কৃষি অধিকর্তাকে বিষয়টি জানাবো।” |