আবার কবে জিতবে করিমের বাগান
পুণে এফসি ৩ (ডুহু, মোগা, কর্মা)
মোহনবাগান ১ (ওডাফা)
ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে ওডাফা-টোলগেরা ড্রেসিংরুমে ঢুকে পড়লেও, করিম বেঞ্চারিফা মাঠ ছাড়লেন মিনিট দশেক পরে। বিষণ্ণ মুখে একদৃষ্টিতে মাঠের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে। যেন কিছু খুঁজছেন!
মরক্কান কোচ কী খুঁজছেন তা বাইরে থেকে বোঝা যায়নি। সম্ভবও নয়। কিন্তু নিজেদের ড্রেসিংরুমে ঢুকতেই ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেল তাঁর। চরম চিৎকার-চেঁচামেচির শব্দ তখন ড্রেসিংরুমের বাইরে থেকে শোনা যাচ্ছে। প্রায় এক ঘণ্টার ক্লাস নিলেন ফুটবলারদের।
নতুন মরসুমের জন্য মোহনবাগানের চার বিদেশি প্রায় নিশ্চিত। ওডাফা, টোলগে এবং ইচেকে রেখে জেকব কুইনটনের পরিবর্তে নেওয়া হচ্ছে কাতসুমিকে। জাপানি ফুটবলার এলে কী হবে তা সময় বলবে। তার আগেই যে কুইনটনের অনুপস্থিতিতে বাগান মাঝমাঠের হাড়-কঙ্কাল বেরিয়ে পড়ল কল্যাণীতে। অবনমনের গর্ভ থেকে টেনে তুলে সূর্যের আলো হয়তো করিম এনে দেবেন বাগানে! কিন্তু যে উদ্যম নিয়ে পরের মরসুমের দল গোছাচ্ছেন, তা দিয়ে কি ভারত জয় করা সম্ভব? বুধবারের কল্যাণী স্টেডিয়ামে যে ফুটবল খেললেন নবিরা, তা নিঃসন্দেহে আশঙ্কার তাপমাত্রা বাড়িয়ে তুলবে করিমের মস্তিষ্কেও! মোহনবাগান কোচ নিজেও বলছিলেন, “পুণে আজ যোগ্য দল হিসেবেই জিতেছে। এ রকম জঘন্য ফুটবল আমরা আগে কখনও খেলিনি। গোটা টিমই ব্যর্থ হয়েছে আজ।”
বিমর্ষ ওডাফা। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
বুধবারের ম্যাচে মোহনবাগানকে হারাল ফুটবলারদের আলস্য। বিশ্বজিৎ সাহা, স্নেহাশিসদের দেখে মনে হচ্ছিল সদ্য ঘুম থেকে উঠে মাঠে নেমে পড়েছেন। বল তাড়া করার কোনও তাগিদ নেই। ট্যাকল, ব্লকিং কিংবা বিপক্ষকে আটকানোর কোনও সদিচ্ছাও চোখে পড়ল না। ঘুরে-ফিরে সেই একই খেলা, ‘বল ধরো আর ওডাফার পায়ে তুলে দাও।’ কিন্তু যে দিন নাইজিরিয়ান গোলমেশিন আটকে যাবেন, সে দিন মোহনবাগানেও লোডশেডিং হয়ে যাবে!
ফুটবল খেলতে গেলে উসেইন বোল্ট বা আসাফা পাওয়েল হওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে সামান্য দৌড়োতে তো হবেই। ‘ডাউন দ্য মিডল’ দিয়ে পুণের ফুটবলাররা ড্যাং ড্যাং করে ছুটে বেড়াচ্ছেন। আর ডেনসন-জুয়েল রাজারা দর্শকদের মতো ‘মজা’ লুঠছেন। পুণের তিনটে গোলের মধ্যেই মোহনবাগান ফুটবলারদের ‘কুঁড়েমি’ লুকিয়ে আছে। পাইতের ক্রস থেকে ডুহুর প্রথম গোলের সময় ইচে-আইবরের পাত্তাই নেই রক্ষণে। বিরতির পরে মোগার দৌড়কে নাগালেই পেলেন না ইচে। বেচারা শিল্টনকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গোল খেতে হল। আর কর্মার গোলের সময় মাঝমাঠ থেকেই হাল ছেড়ে দেওয়া হল। তিন গোল খাওয়ার জন্য শিল্টনকে সমর্থকদের গালাগালি শুনতে হল ঠিকই। কিন্তু তিনি না থাকলে যে আরও তিন গোল খেতে হত বাগানকে। মোগাদের দাপট আর গরমে ম্যাচের পর আইবর মাঠেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। বমি করতে করতে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হল তাঁকে।
মোহনবাগান হারলে সাধারণত যা দেখা যায় না, সেটাও দেখা গেল কল্যাণীতে। সবুজ-মেরুন জনতার ক্ষোভের হাত থেকে বাঁচলেন না ওডাফাও। এ দিন তাঁকেও জুতো দেখানো হল। করিমের নামে উঠল ‘গো ব্যাক’-এর স্লোগান। যা শুনে ঠান্ডা মাথার করিমও সমর্থকদের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়লেন। জনতা বিক্ষোভের ঘটনা অবশ্য মোহনবাগানে এখন নতুন নয়। প্রায় রোজেরই ব্যাপার। তবে প্রশ্ন একটাই, আর কত দিন? ওডাফা রোজ গোল করবেন না। করিমও মাঠে নেমে খেলবেন না। ফুটবলাররা নিজেদের দায়িত্ব কবে বুঝবেন? করিমকে দেখে মনে হল, সেই মন্ত্র খুঁজতে অনেক বিনিদ্র রাত কাটাতে হবে!




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.