এক দিকে টিমের তিন-তিন জন ক্রিকেটারের চোট। জাক কালিস— হাঁটু ঘুরে গিয়েছে। মনোজ তিওয়ারি— হাত ফেটেছে। লক্ষ্মীরতন শুক্ল— হাঁটুর চোটে অন্তত দশ দিন বাইরে।
তার উপর বুধবারের দুর্দশার পর নাইট রাইডার্সকে নিয়ে নতুন প্রশ্নও উঠে পড়ল। সাত ম্যাচে পাঁচ হার, কেকেআরের প্লে-অফের আশা কি তা হলে এখানেই শেষ? আর ইডেন ফেরত বিধ্বস্ত জনতার মুখে মুখে প্রশ্ন, বারবার এ রকম হচ্ছে কেন?
কেকেআরের জন্মলগ্নে যিনি অধিনায়ক ছিলেন, মাঝে একটা বছর বাদ দিয়ে ফের তুলে নিয়েছিলেন নাইট অধিনায়কত্বের মুকুট, সেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এ দিন ক্লাবহাউসে এসেছিলেন ম্যাচ দেখতে। এবং মাঠ ছাড়ার সময় সৌরভকে নাইটদের প্লে অফ ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বলে গেলেন, “এখনই সব শেষ বলা যায় না। বেশ কিছু ম্যাচ তো আছে এখনও। দেখা যাক, কী হয়।” কিন্তু কেকেআর বারবার এ ভাবে ক্লোজ ম্যাচ হেরে যাচ্ছে কেন? মোহালিতে শেষ ওভারে হার। ইডেনে পাঁচ ওভারে ৫০ দরকার— এই অবস্থা থেকে চেন্নাই ম্যাচ নিয়ে চলে গিয়েছে। বুধবার মুম্বইয়ের শেষ ওভারে দরকার ছিল দশ। রজত ভাটিয়ার প্রথম বলে পোলার্ড আউট। কিন্তু তার পরেও হার। কেন? সৌরভের ব্যাখ্যা, “টি টোয়েন্টিতে এ রকম হতেই পারে। ক্লোজ ম্যাচ হারাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। ম্যাচে তো হার-জিত থাকেই।”
|
চ্যাম্পিয়নদের আপডেট
সাত ম্যাচে পাঁচ হার। লিগ টেবিলে সাতে। নেট রানরেট মাইনাসে চলে গিয়েছে।
আর একটা হারলেই কার্যত প্লে অফের বাইরে। |
|
সৌরভের তত্ত্ব সমর্থন করছেন সুনীল নারিনও। তাঁরও মনে হচ্ছে এখনই হাল ছেড়ে দেওয়ার মতো কিছু হয়নি। কেকেআর স্পিনার বলছিলেন, “হাতে এখনও ন’টা ম্যাচ আছে আমাদের। কাজটা কঠিন হয়ে গেল ঠিকই। কিন্তু একেবারে অসম্ভব নয়। তবে আজকের স্কোরটা আমাদের ডিফেন্ড করা উচিত ছিল। ১৬০ যথেষ্ট রান। আর ব্যাটিং নিয়ে বলতে হলে বলব, প্রথম দিকে যে ভাবে রান উঠছিল, সেটা আর পরে ওঠেনি। ফায়দাটা তোলা গেল না।”
শহরের আশাও বেঁচে আছে। বাংলার নামী অফস্পিনার সৌরাশিস লাহিড়ী যেমন। রাত জেগে কেকেআরের খেলা দেখার পর বলে দিচ্ছেন, “টিমটা খারাপ নয়। ওরা যদি চারটে ম্যাচ হারে, তা হলে পরপর চারটে ম্যাচ জেতারও ক্ষমতা আছে। তবে এ বার থেকে ওদের জীবন দিয়ে খেলতে হবে। সমস্ত আশা শেষ, বলব না।” কিন্তু সমস্যাটা কোথায় হচ্ছে? সৌরাশিসের ব্যাখ্যা, “আসলে পাওয়ার প্লেতে যে ভাবে রান উঠছে পরের দিকে আর সেটা ধরে রাখা যাচ্ছে না। কেকেআরের এমন এক জন ব্যাটসম্যান চাই যে দু’শো-আড়াইশো স্ট্রাইক রেট নিয়ে হাফসেঞ্চুরি করে যাবে। দশ-বারো রান নয়। ম্যাকালামকে খেলানো দরকার।”
ঘটনা হচ্ছে, টিমের অবস্থা যা, ম্যাকালাম এ বার সম্ভবত অটোমেটিক চয়েস হতে যাচ্ছেন। এ দিন রান নিতে গিয়ে ডান হাঁটু ঘুরে গিয়েছে কালিসের। ফিল্ডিংও করেননি। টিমের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আরও চব্বিশ ঘণ্টা না গেলে কিছু বলা যাবে না। মনোজ? রায়ডুর ক্যাচ ধরতে গিয়ে ডান হাত ফাটল। পাঁচ-ছ’টা স্টিচ পড়েছে এবং রাতেই তাঁকে হাসপাতাল নিয়ে যেতে হয়। অবস্থা যা, শুক্রবারের কিংস ইলেভেন পঞ্জাব ম্যাচ তো বটেই, হয়তো আরও দু-এ’কটা ম্যাচে এঁরা দু’জনেই অনিশ্চিত। আর সকালে লক্ষ্মীর হাঁটুর এমআরআই করে জানা যায়, দশ দিন তিনি নেই।
কেকেআর হাসপাতালে— সব অর্থেই বোধহয় কথাটা খেটে যাচ্ছে! |