চার বছর কেটে গেল, তবু হল না স্টেডিয়াম
চার বছর কেটে গেলেও স্টেডিয়াম হল না উলুবেড়িয়ার বাজারপাড়ার প্রায় চার একর মাঠটি ঘিরে।
নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকেও এই মাঠে ছিল স্টেডিয়াম। ছিল ড্রেসিংরুম। খেলাও হত নিয়মিত। নিমদিঘি স্পোর্টিং ক্লাব বা উলুবেড়িয়া টাউন ক্লাবের মতো বেশ কিছু ক্লাবের খেলা দেখতে উপচে পড়ত মাঠ। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে গিয়েছে সব। উঠে গিয়েছে মাঠের ঘাস। নেই স্টেডিয়ামের চিহ্ন। বন্ধ উলুবেড়িয়া থানা লিগ।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন ক্লাব এবং ক্রীড়াপ্রেমীদের দাবিতে স্টেডিয়ামটি নতুন ভাবে গড়ার জন্য ২০০৯ সালে উদ্যোগী হন উলুবেড়িয়ার তৎকালীন সিপিএম সাংসদ হান্নান মোল্লা। তাঁর উদ্যোগেই কেন্দ্রীয় যুবকল্যাণ দফতর স্টেডিয়ামটি তৈরির জন্য ৪৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে। নকশাও তৈরি হয়। মহকুমা প্রশাসন ও পূর্ত দফতরের সহযোগিতায় শুরু হয় মাঠ ঘিরে পাঁচিল দেওয়ার কাজ। কিছুটা পাঁচিল দেওয়ার পরেই চলে আসে ২০১১ সালের বিধানসভা ভোট। বন্ধ হয়ে যায় নির্মাণকাজ।
বাসিন্দাদের দাবি, ভোটের প্রচারে এসে রাজ্যের তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই মাঠে স্টেডিয়াম তৈরির প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু মমতার নেতৃত্বাধীন সরকার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে কাজ এগোয়নি একচুলও। ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন খেলোয়াড় তরুণ দে, সমর ভট্টাচার্য অথবা মহমেডানের প্রাক্তন খেলোয়াড় অইদুল ইসলাম এই মাঠে নিয়মিত খেলেছেন। এখনও স্টেডিয়াম গড়ে না ওঠায় স্বাভাবিক ভাবেই হতাশ তাঁরা।
গোলপোস্টে ঝুলছে কাপড়। —নিজস্ব চিত্র।
তরুণ দে বলেন, ‘‘আমি ওই মাঠে খেলে বড় হয়েছি। বিধানসভা নির্বাচনের পর উলুবেড়িয়া স্টেডিয়াম তৈরির জন্য একটি কমিটি তৈরি হয়। তাতে আমি ছিলাম। কিন্তু পরে আমার সঙ্গে সে ভাবে যোগাযোগ করা হয়নি।” সমর ভট্টাচার্য বলেন, “স্টেডিয়াম তৈরির জন্য বেশ কিছু আলোচনা হয়েছে। কমিটির সদস্য হওয়ায় কয়েকটি আলোচনায় আমি ছিলাম। তারপর কী হল জানি না।” এলাকারই বাসিন্দা, স্থানীয় এক ফুটবলার বলেন, “মাঠ কবে সংস্কার হবে, কবে স্টেডিয়াম হবে, কিছুই জানি না। প্রশাসনের উদাসীনতাতেই এই হাল। জমিও দখল হয়ে যাচ্ছে।”
কেন স্তব্ধ হয়ে গেল স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ? জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে পালাবদলের পরে স্টেডিয়াম তৈরির বিষয়টি দেখভালের জন্য ২৬ জনের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির চেয়ারম্যান হন তৃণমূল সাংসদ সুলতান আহমেদ। কমিটিতে আছেন পুরপ্রধান দেবদাস ঘোষ, মহকুমাশাসক সুজয়কুমার আচার্য, প্রাক্তন খেলোয়াড় তরুণ দে, সমর ভট্টাচার্য প্রমুখ। সদস্যেরা নতুন করে প্রস্তাবিত স্টেডিয়ামের সমীক্ষা করেছেন। মহকুমাশাসক বলেন, “নতুন কমিটির তরফে প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) জেলাশাসকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক সেটি রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়েছেন। অনুমোদিত হয়ে এলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।” উলুবেড়িয়ার পুরপ্রধান দেবদাস ঘোষ বলেন, “প্রকল্পটি অনুমোদন পেয়ে গেলে এই আর্থিক বছরেই মাঠটির কাজ শুরু হয়ে যাবে।” জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যকরী সভাপতি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “২০১০ সালের পর থেকে উলুবেড়িয়া থানা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন জেলা ক্রীড়া সংস্থায় নিজেদের সদস্যপদও নবীকরণ করেনি। এই এলাকার খেলোয়াড়েরা এখন জেলার অন্য ক্লাবের হয়ে খেলেন। যদি খেলা শুরু হয় তা হলে স্টেডিয়াম তৈরির জন্য প্রশাসনে তদ্বির করা যেতে পারে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.