|
|
|
|
নারী ও শিশু নিগ্রহ মামলায় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট চান কবীর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিষয়টি নিয়ে প্রচারমাধ্যমের সচেতনতা এ দেশের বিচার-ব্যবস্থার সামনে সোনার সুযোগ এনে দিয়েছে বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীর। তাঁর মতে, এই পরিস্থিতিতে প্রতিটি রাজ্যের উচিত নারী-শিশু নির্যাতনের মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তি ঘটাতে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গড়ে তোলা। বুধবার হাইকোর্টের সার্ধশতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক সভায় এ কথা বলেন কবীর।
এই ধরনের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গঠনের অবকাশ পশ্চিমবঙ্গেও রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশের প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “সব রাজ্যের প্রধান বিচারপতিদের বলেছি, এই সুযোগ! সব রাজ্য সরকারকে মহিলাদের জন্য ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিষয়ে রাজি করান। কেন্দ্র টাকা দেবে। পশ্চিমবঙ্গেও এর যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।” কবীর জানিয়েছেন, বেশির ভাগ মুখ্যমন্ত্রীই ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিষয়ে আগ্রহী। পশ্চিমবঙ্গে এখনও আলাদা করে মহিলাদের জন্য কোনও ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট নেই। কিন্তু সরকারি সূত্রের দাবি, শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য ৪৫টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গঠনের প্রস্তাবে রাজ্য মন্ত্রিসভা সায় দিয়েছে। কোথায় কোর্টগুলি হবে, তা হাইকোর্টকে চিহ্নিত করতে অনুরোধ করা হয়েছে। |
|
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীরের (বাঁ দিকে) সঙ্গে হাইকোর্টের
প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র।
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের এক অনুষ্ঠানে। —নিজস্ব চিত্র |
বিচার-ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা ও তার সংস্কার নিয়ে বলতে উঠে গত ডিসেম্বরে দিল্লির নির্ভয়ার ঘটনাটিও এ দিন স্মরণ করেন কবীর। বলেন, অত বড় একটি ঘটনার পর-পরই দিল্লির আদালতে ছুটি ছিল। তখনই তিনি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গঠনের বিষয়টি নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ও মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। এর পর এ বছরের ২ জানুয়ারি আদালত খোলার সঙ্গে-সঙ্গেই দিল্লির সাকেতে নতুন ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের পথ চলা শুরু হয়। তার পর থেকে দিল্লিতে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের প্রতিবিধানে মোট ৬টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গড়ে উঠেছে।
শুধু মহিলারা নন, নাবালকদের প্রতি অবিচার নিয়েও এ দিন আক্ষেপ করেন প্রধান বিচারপতি কবীর। পরে এ বিষয়ে সবিস্তার আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করে তিনি বলেন, অনেক নাবালকই ঠিকঠাক তদারকির অভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রযোজ্য সাজায় দণ্ডিত হয়। নষ্ট হয় তাদের শৈশব। তিহাড় জেলে বন্দি এমন কয়েকশো বালকের কথা এ দিন শুনিয়েছেন তিনি।
কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র এ দিন আক্ষেপ করে বলেন, পশ্চিমবঙ্গে নিষ্পত্তি হওয়া মামলার হার অত্যন্ত কম। এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, “সব রাজ্যেই প্রধান বিচারপতিদের বিচারকের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য সওয়াল করতে বলেছি।” এ দেশে প্রতি ১০ লক্ষ লোকে বিচারকের সংখ্যা বড়জোর ১৫ জন। এই অনুপাত অন্তত দ্বিগুণ করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন কবীর। ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলার নিষ্পত্তির বিভিন্ন স্তরে দেরি ও তার মোকাবিলার উপায় নিয়ে এ দিন বিস্তারিত বলেন তিনি। উঠে আসে পুলিশি-তদন্তে টালবাহানা ও পুলিশি-ব্যবস্থার সংস্কারের প্রসঙ্গও।
দিল্লির বিমান ধরার তাড়া থাকায় বক্তৃতা বেশি দীর্ঘায়িত করেননি কবীর। “রাতেই দিল্লি ফিরতে হবে। কাল কোর্ট আছে” এ কথা বলেই বক্তৃতায় দাঁড়ি টানেন দেশের প্রধান বিচারপতি। |
|
|
|
|
|