টাকার বস্তা সহ ধৃত আর্থিক সংস্থার কর্তা
সারদার মতোই একটি ভুঁইফোড় আর্থিক সংস্থার মালিক প্রসেনজিৎ মজুমদারকে বুধবার গ্রেফতার করল পুলিশ। ‘অ্যানেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে ওই সংস্থার ‘চিফ ম্যানেজিং ডিরেক্টর’ প্রসেনজিৎবাবু শিলিগুড়ির বাসিন্দা। ২৬ মার্চ থেকে বেপাত্তা ছিলেন প্রসেনজিৎবাবু। বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরে রামকৃষ্ণপল্লি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে নগদ ৭২ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে। বিস্কুটের পেটি করে তিনটে বস্তায় রাখা ছিল ওই টাকা। তাঁকে জগদ্দল থানায় আনা হলে অ্যানেক্সের এজেন্টরা তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার কে জয়রামন বলেন, “অ্যানেক্সের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছি। বেশ কিছু তথ্যও হাতে এসেছে। সংস্থাটির কর্তা প্রসেনজিৎবাবুকে শিলিগুড়ি নিয়ে আসতে আমাদের দল রওনা হয়েছে।”
অ্যানেক্সের এজেন্টরা জানিয়েছেন, প্রসেনজিৎবাবু গত ২৫ মার্চ তাঁর শিলিগুড়ির অফিসে কিছু এজেন্টকে নিয়ে বৈঠক করেন। পর দিনই আমানতকারীদের ৩ কোটি টাকা পাওনা মেটানোর কথা ছিল। সে দিন সকালেই শিলিগুড়ি চয়নপাড়ার বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে বাবা ও স্ত্রীকে নিয়ে প্রসেনজিৎবাবু পালিয়ে যান বলে অভিযোগ।
ধৃত অ্যানেক্স কর্তা প্রসেনজিৎ মজুমদার। —নিজস্ব চিত্র
পরপর চেক বাউন্স করার ৩০ মার্চ সোদপুরে অ্যানেক্সের অফিসে ভাঙচুর হয়। সংস্থাটির এজেন্টের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। আমানতকারী লক্ষাধিক। শাখা রয়েছে অসম, বিহার, ত্রিপুরাতেও। শুধু উত্তরবঙ্গেই আছে ২৪টি। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জেনেছে, এক বছর ধরে মাসে কয়েক কোটি টাকার প্রিমিয়াম জমা পড়ত। দু’দফায় বেশ কিছু আমানতকারীকে পাওনা টাকা মিটিয়েও দেওয়া হয়। তার পরেই শুরু হয় গণ্ডগোল।
শ্যামনগরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে এসে উঠেছিলেন প্রসেনজিৎবাবু। এ দিন দুপুর থেকেই বাড়িটির উপরে পুলিশ নজর রাখছিল। বিকেলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রসেনজিৎবাবুর বাবা সুব্রত সরকার প্রাক্তন সেনাকর্মী। তিনিও ওই সংস্থার এক জন ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছিলেন। বছর তিনেক আগে শিলিগুড়ির আশ্রমপাড়ার নিজস্ব ফ্ল্যাট বিক্রি করে হাকিমপাড়ায় ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করেন তাঁরা। সে সময় একটি অর্থলগ্নিকারী সংস্থার এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন প্রসেনজিৎ। ব্যবসা কিছুটা জমে উঠতেই চয়নপাড়ার কালি সাহা মোড়ের কাছে তিনতলা বাড়ি তৈরি করেন। একটি স্করপিও ও একটি বোলেরো গাড়িও কেনেন তিনি।
অ্যানেক্স সংস্থার চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ মজুমদারের ছবি নিয়ে বিক্ষোভ।
শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের সামনে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
প্রসেনজিৎ শিলিগুড়ির ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএমের প্রাক্তন কাউন্সিলর রেবা সরকারের ভাইপো। রেবাদেবী বলেন, “প্রসেনজিৎ সম্পর্কে নানা কথা শুনেছি। অন্যায় কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এই সমস্ত সংস্থা নিয়ে কমিশন তৈরি করেছেন। সংস্থার পক্ষে কয়েক জন আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। সে কথা তাঁদের বলেছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.