ধৈর্য ধরার ঝুঁকি নেবে কে, টাকা চেয়ে বিক্ষোভ
বিক্ষোভের পরেই টাকা তুলে নিতে ইচ্ছুক লগ্নিকারীদের চেক দিতে শুরু করেছিল রোজভ্যালীর রানিগঞ্জ শাখা। এ বার টাকা ফেরত চেয়ে বিক্ষোভ হল দুর্গাপুরেও।
সোমবার রোজভ্যালীর তমলুক অফিসে ভাঙচুর হয়। বিক্ষোভ হয় রানিগঞ্জে। সন্ধ্যায় সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর শিবময় দত্ত বলেন, ‘অযথা আতঙ্কিত’ হওয়ার দরকার নেই। যাঁরা টাকা ফেরত চাইবেন, তাঁদের চেক দিয়ে দেওয়া হবে। ওই রাত থেকেই রানিগঞ্জে চেক দেওয়া শুরু হয়।
সেই খবর চাউর হতেই বুধবার দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে রোজভ্যালীর অফিস খোলার আগেই ভিড় জমান বেশ কিছু লগ্নিকারী। অফিস খোলার পরে সেই ভিড় ক্রমশ বাড়তে থাকে। প্রথমে বাইরে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে লোকজন ভিতরেও ঢুকে পড়ে। তাঁদের দাবি ছিল, সুদ না মিলুক, লগ্নি করা টাকা ফেরত দিতে হবে। চিৎকার-চেঁচামেচিতে কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে নামেন বেশ কয়েকজন এজেন্ট। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে।
রোজভ্যালীর অফিসে। —নিজস্ব চিত্র।
লগ্নিকারীরা সরাসরি তাঁদেরকেই তৎক্ষণাৎ টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করার জন্য চাপ দিতে শুরু করেন। চিরণ রায় এক লগ্নিকারী সংস্থার পর্যটন বিভাগে ৫ বছরের জন্য ৮৪০০ টাকা লগ্নি করেছিলেন। আরও এক বছর বাদে দ্বিগুণ ফেরত পাওয়ার কথা। এক এজেন্ট তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, “ধৈর্য ধরে এক বছর অপেক্ষা করুন না! তাতে আপনারই লাভ।” চিরণবাবু উল্টে তাঁকে বলেন, “আপনাকে আমার এত ভাল দেখতে হবে না। এখনই আমার আসল ফেরতের ব্যবস্থা করে দিন।” বেগতিক দেখে এজেন্ট পিঠটান দেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
রোজভ্যালীর তরফে প্রথম থেকে বলে আসা হচ্ছিল, টাকা ফেরত দিতে অসুবিধা নেই। কিন্তু সুদ তো মিলবেই না, বরং আসলেরও কিছু টাকা কাটা যাবে। দুর্গাপুর শাখার ম্যানেজার শিলাদিত্য সিংহ জানান, এক বছর মেয়াদের আমানতের ক্ষেত্রে কাটা যাবে আসলের ২৫ শতাংশ। তেমনই ৫ বছর মেয়াদের আমানতে ১০% কেটে নেওয়া হবে। এ কথা শুনেই খেপে ওঠেন লগ্নিকারীদের একাংশ। তাঁরা দাবি করেন, রানিগঞ্জে আসলের পুরোটাই ফেরত দেওয়া হয়েছে। শিলাদিত্যবাবু তা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “হতেই পারে না। সংস্থার নিয়ম সারা দেশে এক। মেয়াদ শেষের আগে লগ্নি ফেরত নিলে ‘ক্যানসেলেশন চার্জ’ বাবদ কিছুটা কেটে নেওয়া হয়।”
লগ্নিকারীদের একাংশ অবশ্য তাঁর বক্তব্য মানতে চাননি। তাঁরা বারবার রানিগঞ্জের উদাহরণ টানতে থাকেন। রোজভ্যালীর রানিগঞ্জ অফিস থেকে চেক দেওয়া শুরু হয়েছিল সোমবার রাত ১২টা থেকে। চলে রাত ৩টে পর্যন্ত। সংস্থা সূত্রের খবর, ওই তিন ঘণ্টায় ২২ জনকে ১৭ লক্ষ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ৪৩৫ জনকে ৬০ লক্ষ টাকার চেক দেওয়া হয়। এ দিনও একই ভাবে চেক দেওয়া চলেছে। রানিগঞ্জ শাখার ম্যানেজার জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যিনি যেমন লগ্নি করেছেন, তেমনই ফেরত দেওয়া হচ্ছে।” তবে দুর্গাপুরে জট খোলার সমাধান সূত্র মেলেনি। এ দিনই সিটি সেন্টারে আরও একটি ছোট লগ্নি সংস্থায় লগ্নিকারীরা আসল ফেরতের দাবিতে ভিড় জমান। আধিকারিকেরা প্রথমে তাঁদের এড়িয়ে পালালেও পরে ফিরে এসে জানান, নিয়ম মেনে আবেদন করা হলে লগ্নিপ টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.