সংখ্যালঘু ভবন নির্মাণে দ্বিতীয় দফার টাকা মেলেনি |
বরাদ্দের অভাবে কাজ বন্ধ মাঝপথে |
অনির্বাণ রায় • জলপাইগুড়ি |
প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়ে বরাদ্দ না মেলায় মাঝপথে থমকেছে জলপাইগুড়ি জেলার সংখ্যালঘু ভবন নির্মাণ। এ মাসের শুরুর দিন থেকেই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি সংস্থা ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ করেছে বলে জানা গিয়েছে। প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হওয়ার পরে পূর্ত দফতর থেকে পরিদর্শন করে, বরাদ্দের জন্য ট্রেজারিতে নথিপত্রগুলি পাঠানোর পরেও বরাদ্দ টাকার চেক মেলেনি বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। সংখ্যালঘু ভবন তৈরির জন্য রাজ্য সরকারের থেকে পৃথক কোনও তহবিলে বরাদ্দ হয়নি। জেলাশাসকের পিএল অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা মেটাতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পিএল অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা আছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। অভিযোগ, ভবন তৈরির নির্দিষ্ট তহবিল না থাকায় নথি তৈরি করতে মাসখানেকের বেশি সময় লাগছে বলে কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
রাজ্য সরকার সব জেলায় সংখ্যালঘু ভবন তৈরির নির্দেশ দেয়। এই ভবনে সংখ্যালঘু সেল ছাড়া, সংখ্যালঘু উন্নয়ন নিগম ও মাদ্রাসা সমূহের কাজ হবে বলে জানানো হয়। সংখ্যালঘুদের প্রশাসনিক কাজের বিভিন্ন দফতরে না ঘুরে যাতে একটি দফতরেই কাজ হয়ে যায়, সে জন্য সব জেলায় একটি করে ভবন তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। গত মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ডুয়ার্সের সরকারি সভায় জলপাইগুড়ির সংখ্যালঘু ভবনের কাজ দ্রুত শেষ হবে বলে আশ্বাস দেন। মুখ্যমন্ত্রীর সভার আড়াই সপ্তাহ পরেই কাজ থমকেছে।
গত বছরের অগস্ট মাসে পূর্ত দফতর জেলায় ভবন তৈরির কাজ শুরুর নির্দেশ দেয়। সেই মত ভবনের তিন তলার ভিত, দেওয়াল ও পিলার তৈরি হয়। পূর্ত দফতর সূত্রে জানান গিয়েছে, প্রায় ৭২ লক্ষ টাকার নির্মাণ কাজের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থা প্রথম পর্যায়ের ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ চায়। সেই মত কাজ পরিদর্শন করে পূর্ত দফতর থেকে বিল তৈরি হয় বলে জানা গিয়েছে। এর পরে আরও মাসখানেক কেটে যায়। গত মাসের শেষ সপ্তাহে পূর্ত দফতরের কাছে টাকা না পেয়ে কাজ বন্ধ করে রাখার সিদ্ধান্তের কথা লিখিত ভাবে জানিয়েও দেয় ঠিকাদার সংস্থা।
মঙ্গলবার দেখা যায় নির্মীয়মাণ ভবনের চারপাশে কাঠ এবং লোহার পাত পড়ে রয়েছে। নির্মাণ সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, “বরাদ্দ না দিলে কাজ শুরু সম্ভব নয়। প্রশাসন কর্তারা আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন।” পূর্ত দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার দীপক দেববর্মন বলেন, “পরিদর্শন করে টাকা বরাদ্দের রিপোর্ট দিয়েছি। টাকা দেওয়া হবে।”
মুখ্যমন্ত্রী যে প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেছেন সেই প্রকল্পের কাজ মাত্র ১০ লক্ষ টাকার অভাবে থমকে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূলও। দলের জেলা সভাপতি চন্দন ভৌমিক বলেন, “টাকা থাকা সত্ত্বেও কেন সরকারি প্রকল্পের এই হাল সেটা খোঁজ নিতে হবে। কাদের গাফিলতিতে সময় লাগছে, তাদের উদ্দেশ্য কী তাও খতিয়ে দেখা দরকার।” যদিও জেলার সংখ্যালঘু সেল দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক শুভ্রজিত মণ্ডল বলেন, “সব শুনেছি। ভবন নির্মাণের জন্য টাকার অভাব হওয়ার কথা নয়। কেন বরাদ্দ মঞ্জুরিতে দেরি হচ্ছে খোঁজ নেব। পূর্ত দফতরের সঙ্গেও এ নিয়ে আলোচনা করব।”
|