আরামবাগেও‘গো ব্যাক’ শুনতে হল বাম নেতাদের
বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের গাড়ি ঘিরে দিন কয়েক আগে খানাকুলে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল তৃণমূল। মঙ্গলবার আরামবাগে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, প্রবীন ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা অশোক ঘোষদের দেখে ‘গো ব্যাক’ ধ্বনি তোলে তারা। বিমানবাবুর সঙ্গে দেখা করতে আসার পথে সিপিএমের এক কর্মীকে মারধরের অভিযোগও উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সিপিএম নেতা মোজাম্মেল হোসেনকে ধাক্কাধাক্কি করে পুলিশ। গোলমাল পাকানোর অভিযোগে মোজাম্মেলের ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আরামবাগের আইসি-র বিরুদ্ধে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর বক্তব্য, “পুলিশকে জানিয়ে প্রবীণ বাম নেতৃবৃন্দ যাওয়ার পরেও এমন আচরণ হচ্ছে যে, নিন্দার ভাষা নেই। যত এমন করবেন, মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হবেন!”
গত ১০ এপ্রিল দিল্লিতে রাজ্যের মন্ত্রীদের নিগ্রহের জেরে হুগলি জেলা জুড়ে সিপিএমের বেশ কিছু পার্টি অফিস আক্রান্ত হয়। সেই ক্ষয়ক্ষতি দেখতেই এ দিন হুগলিতে আসেন বিমানবাবু-সহ ফ্রন্টের বেশ কয়েক জন নেতা। ছিলেন সিপিএমের রবিন দেব, ফরওয়ার্ড ব্লকের অশোক ঘোষ, সিপিআইয়ের মঞ্জুকুমার মজুমদার প্রমুখ।
সিপিএম নেতা মোজাম্মেল হোসেনকে সরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। মঙ্গলবার আরামবাগে।
বর্ধমানের দিক থেকে বেলা ১২টা নাগাদ বাম নেতাদের গাড়ি ঢোকে আরামবাগে। নৈসরাইয়ে একটি ভাঙা পার্টি অফিসে আসেন বিমানবাবুরা। আগে থেকেই সেখানে জমায়েত ছিল তৃণমূলের লোকজন। বাম নেতাদের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ হবে কিনা, তা নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বচসা-ধাক্কাধাক্কি বাধে। বিমানবাবুর সঙ্গে দেখা করতে সে সময়ে জনা পঁচিশ কর্মী-সমর্থককে নিয়ে নৈসরাইয়ের দিকে আসছিলেন সিপিএমের আরামবাগ জোনাল কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক মোজাম্মেল। তৃণমূলের লোকজন তাদের দিকে তেড়ে যায়। পুলিশ তখনকার মতো পরিস্থিতি সামাল দেয়।
কিন্তু পুলিশের সঙ্গেই বচসা বাধে সিপিএমের লোকজনের। অনুমতি ছাড়া কেন মিছিল করছেন মোজাম্মেলরা, সে প্রশ্ন তোলেন আরামবাগের আইসি সুকোমল দাস। সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের লাঠি চালিয়ে হঠিয়ে দেওয়া হয়। মোজ্জামেলের পাঞ্জাবির কলার ধরে টানাটানি করা হয়। গ্রেফতার করা হয় তাঁর ছেলে শেখ আরাফতকে। অন্য দিকে, সিপিএমের লোকজনের উপরে চড়াও হয় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। লাঠির ঘায়ে মাথা ফাটে কাজল সাঁতরা নামে এক সিপিএম কর্মীর। বিমানবাবুদের গাড়ি ঢুকলে ‘গো ব্যাক’ লেখা পোস্টার দেখান হয় তাঁদের, স্লোগান দেওয়া হয়।
আরামবাগের নৈসরাইয়ে সিপিএমের পার্টি অফিসে ভাঙচুর হয় দিন কয়েক আগে।
মঙ্গলবার তা ঘুরে দেখেন বাম নেতারা। ছবি: মোহন দাস।
পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে বিমানবাবু পরে বলেন, “গণতন্ত্রের টুঁটি টিপে ধরার চেষ্টা হচ্ছে। বিধানসভা ভোটের পর থেকে হুগলি জেলায় প্রায় বারোশো বাম কর্মী-সমর্থক ঘরছাড়া।” মোজাম্মেলের কথায়, “প্ররোচনা ছাড়াই আমাদের উপরে হামলা চালাল পুলিশ। তৃণমূলের উসকানিতেই এমন কাণ্ড ঘটেছে।” তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি দিলীপ যাদব অবশ্য বলেন, “মিছিলের অনুমতি ছিল না। ওরা বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করেছিল। মানুষের দীর্ঘ দিনের ক্ষোভ সিপিএমের উপরে। তাঁরাই বাধা দিয়েছেন।” পুলিশ কর্তারা এ ব্যাপারে কেউ মুখ খুলতে চাননি। এ দিন নৈসরাইয়ের পরে পুড়শুড়া এবং তারকেশ্বরে দলীয় কার্যালয়ে যান বাম নেতারা। সেখানেও ভাঙচুর হয়েছিল ক’দিন আগে। পরে সিঙ্গুরে কর্মিসভা করেন বিমানবাবু।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.