|
|
|
|
দুমকা বিশ্ববিদ্যালয় |
রাষ্ট্রপতির সফরের আগে বাংলা নিয়ে বিতণ্ডা |
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় • রাঁচি |
বাঙালিদের চাপে শেষ পর্যন্ত দুমকার সিধো-কানহো মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানের স্যুভেনিয়রে স্থান পেল বাংলা বিভাগের নাম।
আগামী ২৯ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানের দিন তাঁর হাতে তুলে দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে স্যুভেনিয়র ছাপাচ্ছেন তাতে প্রথমে বাংলা বিভাগের নাম বাদ দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশের যুক্তি ছিল, বাংলা বিভাগ ইউজিসি-র অনুমোদন প্রাপ্ত নয়। সেই কারণে স্যুভেনিয়রে বাংলা বিভাগের উল্লেখ থাকবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যুভেনিয়র কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের তুমুল বিরোধিতা করেন বাঙালি অধ্যাপকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফেটে পড়েন দুমকার বাঙালিরা। রাষ্ট্রপতি শাসিত ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল সৈয়দ আহমেদের সচিবালয়ে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে প্রতিবাদ পত্র পাঠায় দুমকার বাঙালিদের সংগঠন ঝাড়খণ্ড বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষা সমিতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে জনমত তৈরি করতে শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত ভিতরে ও বাইরে, বাঙালিদের ‘সাঁড়াশি’ চাপে পড়ে সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যুভেনিয়র কমিটি বাংলা বিভাগের নাম উল্লেখ করতে বাধ্য হন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের রিডার প্রশান্ত সেন বলেন, “এটা আমাদের নৈতিক জয়। ইউজিসি কোনও বিভাগকে অনুমোদন দেয় না। মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক দেয়। যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী বাংলা বিভাগ চলতে পারে, তবে কেন স্যুভেনিয়রে জায়গা হবে না।” বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান, হেমাদিত্য রায়চৌধুরীর কথায়, “বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর বাংলায় পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়া হচ্ছে। অনেকেই এখানে বাংলা ভাষা-সাহিত্য নিয়ে গবেষণা করছেন। আসলে যে কোনও উপায়ে বাংলাকে দূরে রাখার প্রচেষ্টা এখানে সব সময়ই চলে।” বাঙালি অধ্যাপকদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সরাসরি যুক্ত ১৩টি কলেজ। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন প্রাপ্ত আরও সাতটি কলেজ রয়েছে। সব মিলিয়ে কুড়িটির মধ্যে অন্তত তেরোটিতে বাংলা পড়ানো হয়। তা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একাংশ ইউজিসি-কে ‘শিখণ্ডি’ খাড়া করে স্যুভেনিয়র থেকে বাংলা বিভাগের নাম বাদ দিতে চেয়েছিলেন বলেই অভিযোগ বাঙালি অধ্যাপকদের একাংশের।
বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষা সমিতির সম্পাদক গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “ইউজিসি-র তালিকাভুক্ত না হলে বাংলা বিভাগ সাড়ে ছ’লক্ষ টাকা করে অনুদান পায় কী করে? প্রণববাবু রাষ্ট্রপতি হলেও তিনি বাঙালি। আর তিনিই বাংলা বিভাগের বিষয়ে জানতে পারবেন না, এটা মেনে নিতে পারিনি। এটা আমাদের আবেগের প্রশ্ন।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বসির আহমেদ খান অবশ্য বিতর্ক এড়াতে চেয়েছেন। তিনি বলেন, “এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বাংলা অ্যাকাডেমি খোলা হয়েছে। স্যুভেনিয়রে বাংলা বিভাগের উল্লেখও হচ্ছে।” তবে কেন বাংলা বিভাগের নাম প্রথমে স্যুভেনিরে রাখতে চাওয়া হয়নি, সে প্রশ্ন এড়িয়ে যান উপাচার্য। |
|
|
|
|
|