৬.৪% বৃদ্ধির পূর্বাভাস, জ্বালানিতে ভর্তুকি ছাঁটাইয়ের প্রস্তাব
সুদিন ফেরার ইঙ্গিত রঙ্গরাজনের
খারাপ সময় শেষ। ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশের অর্থনীতি। প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের ভবিষ্যদ্বাণী, গত অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হার ৫% থাকলেও, এ বছর তা ছোঁবে ৬.৪%। কিন্তু এখনও চিন্তার প্রধান কারণ সেই চলতি খাতে বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি বা কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিট। যার জেরে বৈদেশিক মুদ্রা ভাণ্ডারে টান পড়ার আশঙ্কা। পরিষদের চেয়ারম্যান সি রঙ্গরাজন বলেন, “এই মুহূর্তে বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ।” আর সে জন্য জ্বালানিতে ভর্তুকি কমানোরই দাওয়াই দিচ্ছেন তিনি। অর্থাৎ সওয়াল করছেন তেল ও রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ানোর পক্ষে।
আজ ২০১২-’১৩-র আর্থিক পর্যালোচনা প্রকাশ করে রঙ্গরাজন বলেন, গত অর্থবর্ষে বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি ছিল জাতীয় আয়ের ৫.১%। এ বছর তা কমে ৪.৭ শতাংশে নামবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু তা-ও যথেষ্ট বেশি বলে মনে করছেন মনমোহন সিংহের প্রধান আর্থিক উপদেষ্টা। তাঁর বক্তব্য, “বাণিজ্য ঘাটতির সব থেকে বড় দিক, তেল ও সোনা আমদানির খরচ। আমদানি খরচ কমাতে পেট্রোপণ্যের দাম ও ভর্তুকি সংক্রান্ত সংস্কারের বাকি কাজটুকু সেরে ফেলতে হবে। একইসঙ্গে পণ্য ও পরিষেবা রফতানি বাড়ানো জরুরি।” ঘাটতি মেটাতে বিদেশি লগ্নি টানাও প্রয়োজন বলে তাঁর মত। অন্য দিকে লাতিন আমেরিকা ও আফ্রিকার যে-সব দেশে বৃদ্ধির হার বেশি, সেখানে রফতানি বাড়াতে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নিতে হবে বলেও দাওয়াই দিচ্ছেন রঙ্গরাজন।
মার্চ মাসে মূল্যবৃদ্ধির হারও ৬ শতাংশের নীচে নেমে এসেছে। রঙ্গরাজন মনে করছেন, দু’দিক থেকে এর সুফল মিলবে। প্রথমত, মূল্যবৃদ্ধির চড়া হারের জন্য এত দিন মানুষ সোনায় লগ্নি করাটই বেশি লাভজনক বলে মনে করছিলেন। এ বার সোনার চাহিদাও কমবে। লগ্নির অন্য মাধ্যমগুলির চাহিদা বাড়বে। সেগুলিকে তাই আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। দ্বিতীয়ত, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষেও ঋণনীতির ফাঁস আলগা করে সুদ কমানো সহজ হবে বলে মত আরবিআইয়ের প্রাক্তন গভর্নর রঙ্গরাজনের। তাঁর ইঙ্গিত, চলতি অর্থবর্ষে মূল্যবৃদ্ধি ৬ শতাংশের আশেপাশেই থাকবে।
লোকসভা ভোটের আর বছর খানেক দেরি। যাকে ঘিরে রাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যে মনমোহন সিংহ বা পি চিদম্বরম কতখানি আর্থিক সংস্কারের কাজ করতে উঠতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। রঙ্গরাজন অবশ্য যুক্তি দিচ্ছেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলালেও অর্থনীতির মূল বিষয়গুলি বদলাবে না। তার উপর ভিত্তি করেই এই বৃদ্ধির পূর্বাভাস। আর্থিক পর্যালোচনা অনুযায়ী, মূলত কৃষি ও কারখানায় উৎপাদনে উন্নতিই বৃদ্ধির হারকে ৫% থেকে এক ধাক্কায় ৬.৪ শতাংশে ঠেলে তুলতে সাহায্য করবে। গত বছর কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ছিল মাত্র ১.৮%। যা এ বার বেড়ে ৩.৫% হবে। কারখানার উৎপাদন ১.৯% থেকে বেড়ে ছোঁবে ৪%। তা ছাড়া আর্থিক বৃদ্ধিকে চাঙ্গা করতে সেপ্টেম্বর থেকেই অর্থ মন্ত্রক বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে। বিদেশি লগ্নি টানার চেষ্টা হয়েছে এবং বিভিন্ন প্রকল্পে দ্রুত ছাড়পত্র দিতে বিনিয়োগ বিষয়ক মন্ত্রিসভার কমিটি গঠিত হয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে এর সুফল মিলতে শুরু করবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।
রঙ্গরাজনের যুক্তি, “গত অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধি তলানিতে পৌঁছলেও বিনিয়োগের হার খারাপ ছিল না। নিশ্চিন্ত বোধ করার সেটা একটা কারণ। কিন্তু বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি। সেই কারণেই শিল্পপতিরা নতুন বিনিয়োগ করতেও উৎসাহ দেখাচ্ছিলেন না।” এই সঙ্গে লগ্নি ও সঞ্চয়ের হার আরও বাড়লে আর্থিক বৃদ্ধি ফের ৮-৯ শতাংশের কাছাকাছি চলে যেতে পারে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.