বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীর বাড়িতে ইলেকট্রিক সার্কিট বোমা ফাটানোর অভিযোগ উঠল এক যুবকের নামে। আলোর সুইচ টিপতেই ক্যালেন্ডারের পিছনে লুকিয়ে রাখা বোমাটি ফেটে ছাত্রী সহ পরিবারের তিন জন জখম হন। শনিবার রাতে কালিয়াচক থানার চরি অনন্তপুরের লালুটোলায় ঘটনাটি ঘটে। বিস্ফোরণে ছাত্রী, তাঁর মা ও বোনকে মালদহ মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। জেলা পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনায় যুক্ত সন্দেহে মনোজ মণ্ডল নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ওই যুবকের মোবাইল ফোন মেরামতের দোকান আছে। সেখানে বসে সে সার্কিট বোমা তৈরি করে।”
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় আম, লিচুর ব্যবসায়ী অশোক মণ্ডল ও নমিতার একমাত্র মেয়ে মাম্পি গোলাপগঞ্জ হাই স্কুল থেকে এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। স্কুল যাওয়ার পথে বাস স্ট্যান্ডের মোবাইল ফোন মেরামতের দোকানদার মনোজ মণ্ডল ওই ছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় বলে অভিযোগ। মাম্পি অস্বীকার করে। ওই ঘটনার পরে খেপে গিয়ে তিন মাস আগে চিকিৎসার জন্য বাবা-মা জেলার বাইরে গেলে মনোজ মাপ্পির বাড়িতে জোর করে ঢোকে বলে অভিযোগ। মনোজকে দেখে মাম্পি চিৎকার করলে বাসিন্দারা ছুটে এসে মনোজকে ধরে ফেলে। পিটিয়ে যুবককে তাড়িয়ে দেয়। মালদহ মেডিক্যালে শুয়ে জখম ছাত্রী বলেন, “বিয়েতে রাজি হইনি। তাই বদলা নিতে মনোজ বোমা ফাটিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারকে শেষ করতে চেয়েছিল।”
বাসন্তী পুজো দেখতে শনিবার সন্ধ্যায় মেয়ে মাম্পি, ভাইজি শম্পাকে নিয়ে অশোকবাবু ও নমিতা দেবী চরিঅনন্তপুর যান। নমিতাদেবী বলেন, “পৌনে বারোটা নাগাদ বাড়ি ফিরে দেখি সামনের ডাইনিং হলটা অন্ধকার। তালা খুলে ভিতরে ঢুকে ইলেকট্রিকের সুইচ দিতেই বিকট শব্দে বোমা ফাটে। এর পরে কিছু বলতে পারব না।”
ছাত্রীর মামাতো দাদা মানব মণ্ডল জানান, বিকট শব্দ শুনে তাঁরা ছুটে যান। দেখেন ঘরের মেঝেয় তিন জন পড়ে আছে। তিনি বলেন, “একটি ক্যালেন্ডারের পিছনে বোমাটি লুকানো ছিল। সুইচ টিপতেই গোটা বাড়ি কেঁপে ওঠে।” বোমা লাগানোর পাশাপাশি মনোজ রান্নাঘরের গ্যাস সিলিন্ডারেরে গ্যাস খুলে রেখে যায় বলে অভিযোগ।
পুলিশ তদন্তে নেমে জেনেছে, সন্ধ্যা সাত থেকে রাত পৌনে বারোটা পর্যন্ত বাড়িতে কেউ ছিল না। ওই সুযোগে মনোজ বাড়ির পিছনে বাতাবি লেবুর গাছে উঠে মাম্পিদের ছাদে উঠে ভিতরে ঢোকে। এরপর ডাইনিং হলের সুইচবোর্ডের লাইনের সঙ্গে পাশে একটি ক্যালেন্ডারের সঙ্গে ইলেকট্রিক বোমা লাগিয়ে পালিয়ে যায় মনোজ। |