|
|
|
|
গোয়েন্দা-জালে দুই অভিযুক্ত |
সমবায় ব্যাঙ্কের তছরুপেও কি সেই ইন্দ্রজিৎ-চক্র
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্য বিপণন পর্ষদ, পশ্চিমবঙ্গ পরিকাঠামো উন্নয়ন ও বিত্ত নিগম, প্রাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল অর্থ তছরুপে আগেই ধরা পড়েছে কয়েক জন। এ বার লালবাজারের জালে রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্কের ৬০ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় দুই অভিযুক্তও। কিন্তু ওই চক্রের মূল পাণ্ডা এখনও পলাতক।
তবে জালিয়াতির ওই চারটি ঘটনার মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বা মিল আছে বলে মনে করছে গোয়েন্দা পুলিশ। মিলটা ‘মোডাস অপারেন্ডি’ বা টাকা হাতানোর কায়দায়। তাই নিগমের তছরুপে মূল চক্রী বলে অভিযুক্ত ও ধৃত ইন্দ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে সমবায় ব্যাঙ্কের টাকা লোপাটেও যুক্ত কি না, তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।
পুলিশ জানায়, সমবায় ব্যাঙ্কের তছরুপের ঘটনায় শনিবার রাতে লেক টাউন এলাকা থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করেন কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল সেলের গোয়েন্দারা। ধৃতদের নাম দেবব্রত দে এবং রাজকুমার সিংহ। তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, এই চক্রের মূল পাণ্ডা কোথায় আছে এবং চক্রে আরও কত জন জড়িত, তা জানতে দেবব্রত ও রাজকুমারকে
জেরা করা হচ্ছে। তবে সেই জেরায় কিছু মিলেছে কি না, তা জানাতে চায়নি পুলিশ।
বিত্ত নিগমের ১২০ কোটি টাকা তছরুপের ঘটনায় ইন্দ্রজিৎ ধরা পড়ার পরে নিগমের এক কর্তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন ব্যাঙ্কের এক কর্তাও। ওই নিগম, রাজ্য বিপণন পর্ষদ এবং পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা লোপাটের ঘটনায় একটি চক্রেরই হাত আছে বলে পুলিশের সন্দেহ। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, বিত্ত নিগমের ১২০ কোটি টাকা উধাওয়ের অভিযোগ মেলার দিন চারেক পরেই রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্কের ৬০ কোটি টাকা লোপাটের কথা জানা যায়। এবং দেখা যায়, নিগমের মতো সমবায় ব্যাঙ্কেও জালিয়াতির কায়দা একই। বিত্ত নিগমের ১২০ কোটি টাকা ইউকো ব্যাঙ্কের সার্কাস অ্যাভিনিউ শাখায় স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ করা হয়েছিল। মিলেছিল শংসাপত্রও। পরে দেখা যায়, ওই সব শংসাপত্র জাল। একই কায়দায় টাকা লোপাট করা হয়েছিল বিপণন পর্ষদ এবং প্রাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও। গোয়েন্দাদের ধারণা, ওই সব তছরুপের মতো একই কায়দায় সমবায় ব্যাঙ্কের টাকাও হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কী ভাবে?
তদন্তকারীরা জানান, সমবায় ব্যাঙ্কের ৬০ কোটি টাকা তিনটি ব্যাঙ্কে স্থায়ী আমানত হিসেবে বিনিয়োগ করা হয়েছিল। তছরুপের ব্যাপারে সমবায় ব্যাঙ্কের কর্তাদের আগে কোনও রকম সন্দেহ হয়নি। কিন্তু বিত্ত নিগমের বিপুল অর্থ গায়েবের খবর চাউর হতেই সমবায় ব্যাঙ্কের কর্তারা তাঁদের স্থায়ী আমানতের খোঁজ নিতে যান। তখনই জানা যায়, জালিয়াতি করে তাঁদের টাকাও তুলে নেওয়া হয়েছে।
বিত্ত নিগমের তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মহানগরে একাধিক জালিয়াতির ঘটনায় অভিযুক্ত ইন্দ্রজিৎ এবং তাঁর শাগরেদরা ব্যাঙ্কের প্রতিনিধি সেজে বিভিন্ন সংস্থায় গিয়ে বেশি সুদে স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তার পরে সেই টাকা নিজেদের তৈরি ভুয়ো অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নিতেন তাঁরা। সমবায় ব্যাঙ্কের টাকা লোপাটেও একই কায়দার হদিস পেয়েছেন তদন্তকারীরা। এক গোয়েন্দাকর্তা জানান, দেবব্রত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়ে সমবায় ব্যাঙ্কে গিয়ে বেশি সুদে স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগের টোপ দিত।
গোয়েন্দাদের একাংশের সন্দেহ, জালিয়াতি করে বিপণন পর্ষদ, বিত্ত নিগম, প্রাণী বিশ্ববিদ্যালয় এবং সমবায় ব্যাঙ্কের টাকা হাতানোর ঘটনার মধ্যে শুধু মিল নয়, যোগও আছে। তাই নিগমের টাকা লোপাটে ধৃত ইন্দ্রজিতের সঙ্গে দেবব্রতের যোগাযোগ আছে কি না, তার খোঁজ শুরু করে দিয়েছেন তদন্তকারী অফিসারেরা।
|
পুরনো খবর: নিগমের তছরুপেও সেই ইন্দ্রজিৎ, বলছে পুলিশ
|
আম গাছের পোকার আক্রমণে ক্ষতি বেগুন চাষে
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
পোকার আক্রমণে ধসা রোগের সংক্রমণে মার খাচ্ছে রাজ্যের চলতি মরসুমের বেগুন চাষ। ওয়েস্ট বেঙ্গল ভেন্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়েছে, এই মরসুমে স্বাভাবিক আবহাওয়ায় এক বিঘা বেগুন খেতে ১২ থেকে ১৫ টন ফলন হওয়ার কথা। কিন্তু এ বার পোকার আক্রমণে বেগুনের উৎপাদন বিঘা প্রতি ৫-৬ টনে নেমে এসেছে। জোগান কমে যাওয়ায় রাজ্যের পাইকারি বাজারগুলিতে বেগুনের দাম রবিবারও ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে ওঠা-নামা করেছে বলে জানিয়েছেন ওয়েস্ট বেঙ্গল ভেন্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি এবং রাজ্য সরকার গঠিত টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে। কমলবাবু জানান, চলতি মরসুমে রাজ্যে প্রায় বিশ রকমের বেগুন চাষ হয়। এই সময়ে বেগুন খেতে পোকার স্বাভাবিক আক্রমণ তো আছেই। একই সঙ্গে এ বার আম গাছ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পোকা হানা দিয়েছে বেগুন খেতে। ধসা রোগের সংক্রমণে বেগুন গাছের ডগা হেলে পড়ছে। ফুল-ফল খসে পড়ছে। ওই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে গোটা বেগুন খেতে। চলতি মরসুমে বেগুন খেতে আম গাছের পোকার আক্রমণের কথা জানিয়েছেন কৃষি বিপণনমন্ত্রী অরূপ রায়ও। তিনি জানান, পোকার আক্রমণ থেকে বেগুন চাষ বাঁচাতে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। |
|
|
|
|
|