রাতে বউয়ের মাথায় অ্যাসিড ঢেলে দিয়েছিল মদ্যপ স্বামী। পরদিন সকালে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে স্বামীর মাথার চুল কাটিয়ে পুলিশ ডেকে তাকে গ্রেফতার করালেন স্ত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাটের চাঁপাপুকুরে।
ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাটের চাঁপাপুকুর রেল স্টেশনের কাছে। স্ত্রীর মাথায় অ্যাসিড ঢেলে দেওয়া ও তাঁর উপর অত্যাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত রঘুনাথ মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বসিরহাট থানার আইসি শুভাশিস বণিক বলেন, “যে অ্যাসিডটি ছোঁড়া হয়েছিল তা ততটা মারাত্মক না হওয়ায় বড় ধরনের বিপদ থেকে বেঁচে গিয়েছেন ওই মহিলা। তিনি চান তাঁর স্বামী কিছুদিন জেলে থাকুক।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কুড়ি বছর আগে আন্দুলপোতা গ্রামের সীতার সঙ্গে বিয়ে হয় চাঁপাপুকুর রোল কলোনীর বাসিন্দা রঘুনাথের। কখনও ভ্যান চালানো, কখনও বা অন্যর বাড়ির শৌচালয় পরিষ্কারের কাজ করত রঘুনাথ। রোজগারের টাকায় নিয়মিত মদ খেত সে। মারধর করত স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের। সম্প্রতি সেই অত্যাচারের মাত্রা বেড়েছিল। এরফলে প্রায়ই বাপের বাড়িতে গিয়ে থাকতে শুরু করেন সীতাদেবী। সম্প্রতি সংসার চালানোর জন্য তিনি ঠিকেদারের অধীনে কাজ শুরু করেছিলেন। |
সীতাদেবীর অভিযোগ, শনিবার রাত আটটায় কাজ সেরে তিনি যখন চাঁপাপুকুর স্টেশনে নামেন তখনই তাঁর মাথায় অ্যাসিড ঢেলে দেন রঘুনাথ। তাঁর চিৎকারে ছুটে আসেন আশেপাশের বাসিন্দারা। প্রাথমিকভাবে তাঁর মাথায় প্রচুর জল ঢালার হয়। তারপর বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে।
রবিবার সকালে রঘুনাথকে দেখতে পেয়ে তাকে ধরতে যায় স্থানীয় বাসিন্দারা। তখন সে পাথর ছুড়তে শুরু করে। প্রথমে হতচকিত হয়ে গেলেও রঘুনাথকে ধরে ফেলে জনতা। শুরু হয় গণধোলাই। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চলে আসেন সীতাদেবী। তিনিও দেন দু’চার ঘা। কেটে নেওয়া হয় রঘুনাথের মাথার চুল। পরে পুলিশ এসে গ্রেফতার করে রঘুনাথকে।
সীতাদেবী বলেন, “আমার স্বামীর অত্যাচারে আমার ও আমার ছেলেমেয়েদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ওর মদ খাওয়ার জন্যই আমার ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া শিখতে পারল না। আমি চাই কিছুদিন ওর জেল হোক। যদি শিক্ষা হয়।” দীর্ঘদিন ধরে মার খেতে অভ্যস্ত স্ত্রীর এই পরিবর্তনে ঘাবড়ে গিয়ে রঘুনাথ এখন শুধু বিড়বিড় করে চলেছে, “যত ভাবি মদ ছাড়ব, ততই মদ আমায় টানে। কী যে করি!” |