জাল নোটের কারবারে জেরবার দুই জেলা প্রশাসন। মালদহের বৈষ্ণবনগরের চর দিয়ে ফরাক্কা ও ধুলিয়ানে ঢুকছে জাল নোট। গত দু’বছরে মুর্শিদাবাদ থেকে উদ্ধার হওয়া জাল নোটের আশি শতাংশই মিলেছে ওই এলাকায়। মালদহের কালিয়াচক, বৈষ্ণবনগর এবং মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা ও সামশেরগঞ্জ জুড়ে চলতে থাকা জাল নোটের কারবারে উদ্বিগ্ন দুই জেলার প্রশাসন। গত বছর জাল নোট সহ ধরা পড়েছিল ১১০ জন। এ বছর এখনও পর্যন্ত ১৫ লক্ষ জাল নোট সহ ধরা পড়েছেন ২৬ জন।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “জাল নোট পাচারে বৈষ্ণবনগরের পদ্মা লাগোয়া চরের ব্যবহার করে পাচারকারীরা। ওই এলাকায় সীমান্তের বেশিরভাগ জায়গাতেই কাঁটাতার না থাকায় তারা ফেরিঘাট দিয়ে ফরাক্কা ও ধুলিয়ানে জাল নোট আনছে। তারপর জাতীয় সড়ক ও ট্রেনপথে তা ছড়িয়ে পড়ছে।” গত ১৪ ডিসেম্বর পনেরো লক্ষ টাকার জাল নোট সহ ধরা পড়ে সাওকাত আলি ও মোস্তাফিজুর রহমান। তাদের বাড়ি সীমান্তের বাখরাবাদে। সাওকাতের বাড়িতেই জাল নোট আসত। পুলিশ সুপার বলেন, “উন্নত প্রযুক্তিতে কোরিয়ান কাগজে নোট ছাপানোয় এখন জাল ধরতে সমস্যা হচ্ছে।” বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জের বাঁদরবনিতে জাল নোট ছাপানো হচ্ছে বলে জেনেছে পুলিশ। জাল নোট কারবারে যুক্ত মহব্বতপুর, চর অনন্তপুর, হাজিনগর সহ অন্তত ৯টি গ্রামকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল থাকায় বৈষ্ণবনগরে জাল নোট ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে ধুলিয়ান ও ফরাক্কাকে।
বিএসএফের মালদহ রেঞ্জের ডিআইজি অমরজিৎ সিংহ বলেন, “মানুষের দারিদ্রের সুযোগ নিচ্ছে পাচারকারীরা। এর জন্য কর্ম সংস্থান বাড়াতে হবে। বিএসএফ প্রায় ছ’শো তরুণকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, যাতে তারা আধা সামরিক বাহিনীতে কাজ পায়।” বিএসএফের ২০ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের কমান্ডিং অফিসার অরবিন্দ ঘোরডিয়াল বলেন, “এ দেশ থেকে গরু পাচারের পরিবর্তে ওপার থেকে মিলছে জাল নোট। ওই এলাকায় সীমান্তে প্রায় সাত কিলোমিটার কাঁটা তার না থাকায় পদ্মার চরে পাহারা বসিয়েও জাল নোট ঢোকা আটকানো যাচ্ছে না।” |