কাঁথিতে সারদা-র বিরুদ্ধে মামলা, মেচেদায় বিক্ষোভ
সারদা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে পূর্ব মেদিনীপুরে। শুক্রবারের পরে শনিবারও কাঁথি, মেচেদায় সারদার অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান এজেন্ট ও গ্রাহকরা। কাঁথি থানায় দু’টি প্রতারণার মামলা দায়ের হল। সারদা গ্রুপের নামে কাঁথি শহরের বাইপাস রাস্তার ধারে ১৯ তলার একটি আবাসন হওয়ার কথা। নির্মীয়মাণ ওই আবাসন প্রকল্পের ঠিকাদার শম্ভুনাথ দাস শনিবার সন্ধ্যায় সারদা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছেন। আর কেয়ারটেকার দুলাল চন্দ দীর্ঘ দিন ধরে বেতন পাননি বলে থানায় অভিযোগ করেছেন।
শুক্রবার সারদা গ্রুপের অফিসে আমানতকারীদের বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের পর শনিবার দিঘা রাস্তায় ওই আবাসন প্রকল্পে কয়েকশো উত্তেজিত জনতা হামলা চালায়। পাঁচিল ঘেরা কয়েক একর জমির মধ্যে আবাসন তৈরির কোনও চিহ্ন অবশ্য নেই। শুধু একটি টিনের চালাঘর, বেশ কয়েকটি মাটি কাটার জেসিপি মেশিন, বয়লার, ট্রাক্টর, লরি, ডায়নামো, সিমেন্টের বস্তা ও যন্ত্রপাতি ছিল। উত্তেজিত জনতা তাই লুঠপাট করতে থাকে। খবর পেয়ে কাঁথি থানার আইসি সোমনাথ দত্তের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বেশ কিছু লুঠ করা জিনিসপত্রও পুলিশ উদ্ধার করে।
দোষীদের শাস্তির দাবিতে তমলুকে ডিএসও-র বিক্ষোভ।—নিজস্ব চিত্র।
এ দিকে শনিবার বেশ কিছু আমানতকারী ও এজেন্ট শহরের শেরপুর বাইপাসের ধারে সারদা রিয়েলিটির অফিসে হামলা চালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। সারদা গ্রুপের কাঁথি শাখার আধিকারিক অনিল হোতার বাড়ির সামনেও বিক্ষোভ দেখান আমানতকারীরা। যদিও অনিল হোতা-সহ সারদার অধিকাংশ অফিসকর্মী ও এজেন্টরা গা ঢাকা দিয়েছেন। অফিসগুলিতে পুলিশ পাহারা দিচ্ছে। রবিবার সকালে মেচেদা বাজারের শান্তিপুর এলাকায় হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের ধারে সারদা গোষ্ঠীর বন্ধ অফিসের সামনে জড়ো হয়েছিলেন এজেন্ট ও গ্রাহকরা। সারদার মেচেদা শাখার এজেন্ট স্থানীয় দেড়িয়াচক গ্রামের বাসিন্দা সুনীল মিদ্যা, বারাসতি গ্রামের নারায়ণ পাত্রও বলেন, ‘‘প্রায় চার বছর আগে সংস্থার মেচেদায় শাখা অফিস খোলার সময় থেকে কাজ করছিলাম। এলাকার বাসিন্দাদের বুঝিয়ে আমরা কয়েক লক্ষ টাকা সংস্থায় জমা দিয়েছিলাম। এখন গ্রাহকরা টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। কী করব জানি না।”
উদ্বিগ্ন গ্রাহকদের মধ্যে ছিলেন কাঁকটিয়ার যুবক অনুপ পাত্র। দোকানের কর্মী অনুপ বলেন, ‘‘গত দেড় বছর ধরে প্রতি মাসে দেড় হাজার টাকা করে জমা দিয়ে আসছিলাম। ৩৬ হাজার টাকা দেওয়া হয়ে গিয়েছে। আর ছ’মাস পরেই টাকা ফেরত পাওয়ার সময় ছিল। তার আগে যে এমন ভাবে সংস্থা বন্ধ হয়ে যাবে ভাবতে পারিনি। জমা পড়া টাকা আদৌ ফেরত পাব কি না বুঝতে পারছি না।” মেচেদার শান্তিপুর গ্রামের প্রতিবন্ধী যুবক মনোয়ার হোসেন একটি পান দোকান চালান। মনোয়ার বলেন, “প্রতিবেশী এক এজেন্ট এসে বোঝানোর পর গত প্রায় দেড় বছর ধরে প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে মোট ১৬ হাজার টাকা জমা দিয়েছিলাম সারদায়। সংস্থার এমন পরিণতির কথা শোনার পর গত পরশু থেকে ঘুমোতে পারছি না। আমার দুই শিশু সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে অনেক কষ্টে টাকা জমিয়েছিলাম। এখন দেখছি আমরা প্রতারিত হয়েছি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.