পাঁচতারা হোটেল বা পার্কস্ট্রিটের অভিজাত রেস্তোরাঁ নয়, চাইনিজ খেতে গৌতম গম্ভীর ছুটলেন একেবারে চায়নাটাউন! তা-ও একা নয়, স্ত্রী-পরিবার নিয়ে। এর পরেও নাইট অধিনায়ককে ঘিরে ভিড় জমবে না?
শনিবার চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে হারের পর দিন কলকাতা নাইট রাইডার্স কাটাল ক্রিকেট থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে। নাতাশার সঙ্গে নিজের মা, মামা, কাজিনদের নিয়ে যেমন গম্ভীর গেলেন চায়নাটাউনে। শহরের প্রথম সারির সব রেস্তোরাঁ বাদ দিয়ে হঠাৎ চায়নাটাউন কেন? জানা গেল, টিম হোটেলের লোকজনকে নাইট অধিনায়ক জিজ্ঞেস করেছিলেন, কলকাতার সেরা চিনা খাবার কোথায় পাওয়া যাবে? হোটেল থেকেই চায়নাটাউনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এবং পরিবার নিয়ে সোজা সেখানকার এক নামী রেস্তোরাঁয় হাজির হন গম্ভীর। যেখান থেকে বেরোতে না বেরোতে নাইট-ভক্তদের ভিড় ঘিরে ধরে তাঁকে। কোনও মতে টিম হোটেলে ফেরেন গম্ভীররা।
কেকেআরের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই গম্ভীর বরাবর বলে আসছেন, কলকাতা থেকে যত ভালবাসা, যত সমর্থন তিনি পেয়েছেন, নিজের শহর দিল্লি তাঁকে কোনও দিন সেই সমর্থন দেয়নি। কলকাতাকেও কম ফিরিয়ে দেননি গম্ভীর। আইপিএল ফাইভে যেমন নিজে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েও পুরস্কার তুলে দিয়েছিলেন বাংলার দেবব্রত দাসের হাতে। বারবার তাঁর কথায় উঠে এসেছে কলকাতার প্রতি তাঁর ভালবাসার কথা। মহাতারকাদের পছন্দের সব রেস্তোরাঁ ছেড়ে সাধারণ খাদ্যরসিক বাঙালির গন্তব্য বেছে নিয়ে যেন আরও এক বার গম্ভীর বুঝিয়ে দিলেন, জন্মসূত্রে দিল্লিওয়ালা হলেও তিনি এখন কলকাতারই। |
অধিনায়কের সূচিতে এ রকম চমক থাকলেও বাকি নাইটদের রবিবার কাটল আর পাঁচটা ‘অফ ডে’র মতোই। ছেলেকে নিয়ে কেনাকাটা করতে বেরোলেন ব্রেট লি। কালিস, ওয়েন মর্গ্যানরা যা মোটামুটি নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে, এ দিনও সেটাই করলেন। রবিবারের সকাল-দুপুর কাটালেন দক্ষিণ কলকাতার এক গল্ফ কোর্সে। যে গল্ফ কোর্সেই আবার পেপসি আইপিএলে কামব্যাক ঘটানোর টোটকা খুঁজছে নাইট শিবির।
ছ’টা ম্যাচের চারটেয় হেরে প্লে-অফের রাস্তা ক্রমশ কঠিন হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় ক্রিকেটারদের স্পিরিট ধরে রাখার জন্য গল্ফ কোর্সে টিম ‘রিবিল্ডিং’ সেশনের ডাক দিয়েছে নাইট ম্যানেজমেন্ট। ইডেন নয়, সোমবার দুপুরেই গোটা টিমের পৌঁছে যাওয়ার কথা গল্ফ কোর্সে। ব্যাট-বলের ব্যর্থতা ভুলতে তাঁরা হাতে তুলে নিতে চলেছেন গল্ফ ক্লাব। সেরা ‘গল্ফার’দের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে।
টিম ‘রিবিল্ডিং’ সেশনের চব্বিশ ঘণ্টা আগে অবশ্য যথেষ্ট চিন্তিত নাইট কোচ ট্রেভর বেলিস। শনিবার মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের কাছে হারের পরপরই বলেছিলেন, ‘স্কুলবয়’-এর মতো ভুলে ম্যাচটা হারতে হল। এ দিনও তাঁর মুখে এক কথা। বলছেন, “টুর্নামেন্টে এখন আমরা যে জায়গায় আছি সেটা অত্যন্ত হতাশাজনক। আর তার জন্য অনেকটাই দায়ী আমাদের ব্যাটিং। বিশেষ করে মিডল অর্ডার।” কোচের আরও ব্যাখ্যা, “গত বার আমাদের টপ অর্ডার ভাল রান পেয়ে যাওয়ায় নীচের দিকের ব্যাটসম্যানদের উপর খুব একটা চাপ পড়েনি। এ বার গোটা ব্যাটিং বিভাগই ব্যর্থ।” এর মধ্যেও অবশ্য আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন বেলিস। “গত বছরও এ রকম সময়ে কেকেআরের অবস্থা এ রকমই ছিল। সেখান থেকে যদি আমরা ফিরে এসে ট্রফি জিততে পারি, তা হলে এ বারই বা পারব না কেন?” |