নির্ধারিত দিনে লটারির পুরস্কার নিতে এসে লোকজন দেখলেন, সব ভোঁ-ভাঁ যে ক্লাবের উদ্যোগে লটারির আয়োজন হয়েছিল, সেই ক্লাব সদস্যেরাই গরহাজির।
ভুঁইফোঁড় আর্থিক সংস্থার দুর্নীতির অভিযোগে যখন রাজ্য জুড়ে তোলপাড় চলছে, তখন রবিবার শেওড়াফুলির এই ঘটনায় সহজেই ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙে জনতার। সংশ্লিষ্ট ক্লাবের কর্মকর্তা তথা এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে চড়াও হয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শেওড়াফুলির নোনাডাঙা সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি এবং নেতাজি সঙ্ঘের উদ্যোগে কয়েক মাস ধরে লটারি খেলা চলছিল। প্রতি সপ্তাহে রবিবার সঙ্ঘ ভবনেই বসেছিল আসর। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ১৫ দফা খেলায় প্রায় ৭২ লক্ষ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে।
রবিবার, ২১শে ফেব্রুয়ারি ছিল শেষ খেলার দিন। পুরস্কারও দেওয়ার কথা ছিল। সেই মতো এ দিন বহু মানুষ সঙ্ঘে পৌঁছন। কিন্তু খেলার মূল পরিচালক, মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা অপরিচিত এক ব্যক্তি অনুপস্থিত ছিলেন। সঙ্ঘের সদস্যেরাও কেউ আসেননি।
উত্তেজিত জনতা নেতাজি সঙ্ঘের সম্পাদক তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা তোতন ঘোষের বাড়ির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এক ক্লাব সদস্যের ছাপাখানায় হামলা চালায় এক দল লোক। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। তোতনবাবু ‘মুচলেকা’ দিয়ে জানান, ২৩শে এপ্রিল ফের খেলা হবে। প্রতিশ্রুতি মতোই খেলা হবে এবং পুরস্কারও দেওয়া হবে বলে পরে বলেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, লটারি পরিচালনার কোনও বৈধ অনুমতি নেই ওই ক্লাবের। সে কথা জানিয়েছেন পুলিশ কর্তাদের একাংশও। তবে শুরুতেই সেই তথ্য পুলিশের হাতে এলেও জেলার এক প্রভাবশালী তৃণমূল বিধায়কের হস্তক্ষেপে বিষয়টি নিয়ে আর এগোয়নি পুলিশ। ওই বিধায়কের ‘স্নেহধন্য’ হওয়ায় ক্লাবকর্তা তোতনবাবুর বিরুদ্ধেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ। প্রশাসনের কাছে খেলার আগাম অনুমতি নেওয়া হয়নি, সে কথা অবশ্য মেনে নিয়েছেন তোতনবাবুও। এ দিনের ঘটনার পরে জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেলে ওই লটারি নিয়ে তদন্ত শুরু হতে পারে।”
|