|
|
|
|
উদ্যোগী মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী |
মায়ানমারের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়নে জোর |
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি |
প্রতিবেশী মায়ানমার থেকে আসা রোগীদের জন্য চিকিত্সা পরিষেবা ও সিজা হাসপাতাল চত্বরে রোগীর আত্মীয়দের থাকার ব্যবস্থা করছে মণিপুর সরকার। মায়ানমারের ছাত্রদের জন্য মেডিক্যালে আসনও সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের বিদ্যুত্ সরবরাহ করে তামু শহর আলোকিত করতেও রাজি মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী। পরিবর্তে মায়ানমারের কয়লা কেবল ভারতকে বিক্রির আর্জি জানালেন তিনি।
মণিপুরের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়াতে গত কাল থেকে ৬ এপ্রিল অবধি, মায়ানমারের ১১ জন প্রতিনিধি মণিপুর সফরে এসেছেন। প্রতিনিধি দলে আছেন সাগাইং অঞ্চলের সাংসদ তথা মায়ানমারের বিদ্যুত্মন্ত্রী ইউ কিয়াওউইন, দুই সাংসদ ও সেদেশের বাণিজ্য মন্ত্রকের আমলারা। মায়ানমারের সীমান্তবর্তী বেশ কিছু এলাকার মানুষ চিকিত্সার জন্য মণিপুরের উপরে নির্ভরশীল। প্রতিনিধিরা লাঙ্গোল এলাকায় সিজা হাসপাতাল ঘুরে দেখেন। হাসপাতালের অধিকর্তা কে পালিন জানান, মায়ানমার থেকে আসা রোগীদের জন্য হাসপাতালে আ সন সংরক্ষিত থাকে। রোগীর আত্মীয়দের থাকার জন্য হাসপাতাল চত্বরেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মায়ানমারের বিভিন্ন শহরে সিজা হাসপাতালের বারোটি তথ্য কেন্দ্রও খোলা হচ্ছে। পালিন বলেন, “আমরা অদূর ভবিষ্যতে এখানে একটি অক্সিজেন প্ল্যান্টও বানাতে চলেছি। সেখান থেকে উত্তর-পূর্ব ভারত ছাড়াও মায়ানমারে অক্সিজেনের জোগান দেওয়া হবে। কেবল তাই নয়, ভারতের ‘স্মাইন ট্রেন’ প্রকল্পের আদলে মায়ানমারের সাগাইং রাজ্যের মনিওয়া হাসপাতালে বিনামূল্যে কাটা ঠোঁট ও তালু জোড়ার দেওয়ার প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে। এ নিয়ে সাগাইং-এর মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ইতিমধ্যেই প্রস্তাবপত্র পাঠানো হয়েছে।”
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবি সিংহ বলেন, “মায়ানমারের মেধাবী ছাত্রদের জন্য মণিপুরের মেডিক্যাল কলেজে আসন সংরক্ষণ করা যেতে পারে।” প্রধান সচিব ও নবকিশোর বলেন, “চিকিত্সার জন্য মণিপুরে আসা মায়ানমারের নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার ব্যাপারটি যাতে দ্রুততার সঙ্গে কার্যকর করা যায় তা রাজ্য সরকার দেখবে।” মায়ানমারের মন্ত্রী ইউ কিয়াওউইন বলেন, “মায়ানমারবাসীর চিকিত্সার জন্য মণিপুর সরকার ও সিজা হাসপাতাল যে সাহায্য করছেন তার জন্য ধন্যবাদ। মণিপুরের তরফে জমা দেওয়া প্রস্তাবগুলি নিয়ে দেশে ফিরে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মায়ানমারের প্রতিনিধিরা সীমান্ত শহর তামুর জন্য ২ থেকে ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ সরবরাহের আর্জি জানিয়েছিলেন। মণিপুর থেকে বিদ্যুত্ কেনার ব্যাপারে একটি লিখিত প্রস্তাবও তাঁরা জমা দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রের সবুজ সংকেত পেলেই মোরে সাব স্টেশন থেকে তামুতে বিদ্যুত্ পাঠানো যাবে। বর্তমানে তামু শহরে আলো জ্বালাবার জন্য ডিজেল চালিত জেনারেটর ব্যবহার করা হয়। যা অত্যন্ত খরচসাপেক্ষ ও পরিবেশ-বিরোধী। ইউ কিয়াওউইন তামুতে তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্র গড়ার জন্য ভারতীয় লগ্নিও আহ্বান করেন। ইবোবি মায়ানমারের প্রতিনিধিদের আর্জি জানিয়েছেন, দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত করতে মালয়শিয়া নয়, কেবল মাত্র ভারতকেই কয়লা বিক্রি করুক মায়ানমার।
মণিপুরের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধির উদ্দেশে মায়ানমারের তরফে ইম্ফলে একটি কনসুলেট খোলার ব্যাপারেও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের শিল্প-বাণিজ্যমন্ত্রী কুংথৌজাম গোবিন্দাস বলেন, “জুলাইয়ে ইম্ফল বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্বীকৃতি পেতে চলেছে। ইম্ফল বিমানবন্দরকে ভিত্তি করে মণিপুর ও মায়ানমারের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও বাড়তে চলেছে।” চলতি মাসের শেষে গোবিন্দাসের নেতৃত্বে মণিপুরের একটি প্রতিনিধি দল মায়ানমারে সৌজন্য সফরে যাচ্ছেন। |
|
|
|
|
|