|
|
|
|
শিশু-ধর্ষণের ঘটনায় কেন্দ্রকে সংসদে বিঁধতে তৈরি বিরোধীরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
রাজধানীতে শিশু-ধর্ষণের ঘটনার ধাক্কা লাগতে চলেছে সংসদের অধিবেশনেও। আগামিকাল থেকে সংসদের বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হচ্ছে। কিন্তু প্রথম দিনেই সমস্ত বিরোধী দল শিশু-ধর্ষণের ঘটনা এবং রাজধানীর পুলিশের টাকা দিয়ে তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার জন্য কেন্দ্রকেই নিশানা করতে চলেছে। ফলে প্রথম দিনেই স্তব্ধ হতে পারে সংসদের অধিবেশন।
মাত্র পাঁচ মাস আগেই বাসে গণধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল হয়েছিল দিল্লি। ফের তেমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা করে এ বার আগেভাগেই সক্রিয় হয়েছে মনমোহন সরকার তথা কংগ্রেস। কিন্তু ক্ষোভের আঁচ তাতেও চাপা দেওয়া যাচ্ছে না।
গত কাল প্রধানমন্ত্রী ও সনিয়া গাঁধী এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। সনিয়া নিজে হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে যান। আজও প্রধানমন্ত্রী বিজ্ঞান ভবনে সিভিল সার্ভিস দিবসের অনুষ্ঠানে এই ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, “একটি ছোট শিশুর উপর জঘন্য অত্যাচার আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে, এই ধরনের নৈতিক অধঃপতন সমাজ থেকে দূর করতে আমাদের এক হয়ে কাজ করতে হবে।” ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার যে তৎপরতার সঙ্গে কঠোর আইন তৈরির পদক্ষেপ করেছে, তা-ও বলেছেন তিনি।
কিন্তু তাতেও বিরোধীদের আক্রমণ কমছে না। দিল্লিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অমিত মিত্রের হেনস্থার ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে আগামিকাল সংসদে গাঁধীমূর্তির পাদদেশে অবস্থান-বিক্ষোভে বসবে তৃণমূল কংগ্রেস। সংসদ অচলেরও হুমকি দিয়েছে তারা। দলের নেতাদের যুক্তি, হেনস্থার ঘটনার পর মমতা নিজেও জানিয়ে গিয়েছিলেন, দিল্লি নিরাপদ নয়। একের পর এক ধর্ষণ এবং পুলিশি গাফিলতিতে তাঁর কথাই সঠিক বলে প্রমাণিত হয়েছে। রাজ্যসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক ডেরেক ও’ব্রায়েন প্রশ্নোত্তর পর্ব স্থগিত রেখে এই বিষয়ে আলোচনার দাবি জানিয়েছেন। ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে সুর চড়াবেন বামেরাও।
পাশাপাশি, যোজনা কমিশনের ঘটনার পর থেকে গোটা রাজ্যে বামেদের উপর তৃণমূলের হামলার অভিযোগ তুলতেও কোমর বেঁধে তৈরি হচ্ছেন তাঁরা। সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজবাদী পার্টির মতো কেন্দ্রের সমর্থক দলগুলিও শিশু-ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে সরব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সরব হবে বিজেপিও। একই সঙ্গে, দুর্নীতির অস্ত্রেও মনমোহন সরকারকে বিঁধতে চায় তারা। এক দিকে টু-জি কাণ্ডের তদন্তে জেপিসি-র রিপোর্টে যে ভাবে প্রধানমন্ত্রীকে দায়মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে, তার প্রতিবাদ জানাবে বিজেপি। অন্য দিকে, কয়লা খনি বণ্টনে দুর্নীতির তদন্তে সিবিআই রিপোর্টে ইউপিএ সরকারের নাক গলানো নিয়েও প্রশ্ন তোলা হবে। বিজেপির অভিযোগ, জেপিসি-র রিপোর্টে অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের উপরেই দোষ চাপাতে চেয়েছে কংগ্রেস। দলের সভাপতি রাজনাথ সিংহের বক্তব্য, “কংগ্রেসের বন্ধুদের বলতে চাই, আমরা সব সহ্য করতে পারি। কিন্তু বাজপেয়ীর নাম কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা বিজেপি মেনে নেবে না।”
এই পরিস্থিতিতে মনমোহন সিংহ তথা পি চিদম্বরমের আর্থিক সংস্কারের কর্মসূচি কতখানি কার্যকর হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। চিদম্বরম আমেরিকা-কানাডায় গিয়ে লগ্নিকারীদের আশ্বাস দিয়ে এসেছেন, সরকার বিমা ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগের সীমা বাড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে। কিন্তু প্রধান
বিরোধী দল বিজেপির সাহায্য ছাড়া বিমা বা পেনশন বিল পাশ করানো অসম্ভব। এমনকী বিজেপি বেঁকে বসলে জয়রাম রমেশের পক্ষে
জমি বিলও পাশ করানো সম্ভব নয়। আইনশৃঙ্খলার সমস্যা থেকে
দুর্নীতির অভিযোগ বহুমুখী চ্যালেঞ্জ কেন্দ্র এখন কী ভাবে সামলায়, সেটাই দেখার। |
|
|
|
|
|