শোলেতে গব্বরের সেই বিখ্যাত ডায়ালগ “যো ডর গ্যায়া, সামঝো মর গ্যায়া”এটাই এখন চার্চিল ব্রাদার্সের টিডি সুভাষ ভৌমিকের ভোকাল টনিক! আই লিগের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দর্শনও।
মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে কল্যাণী স্টেডিয়ামে শনিবার বিকেলে অনুশীলনের পর ছাত্রদের উদ্দেশ্যে সুভাষের বার্তা, “মাঠে নেমে নিজের খেলাটা খেল, ফল নিয়ে ভাবার দরকার নেই।”
হোসে মোরিনহো বা স্যার আলেক্স ফার্গুসনদের মতো বিশ্বের তাবড় কোচেরা ম্যাচের আগে ড্রেসিংরুমে কীভাবে দলকে উদ্বুদ্ধ করেন জানা নেই, মানছেন সুনীল ছেত্রী বা লেনি রডরিগেসরা। কিন্তু দলকে ‘শান্ত রাখতে’ সুভাষ ভৌমিকের এই ‘নো টেনশন’ বোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া এখন চার্চিলে সুপার হিট।
কোচের স্ট্র্যাটেজিতে যখন মুগ্ধ তাঁর ছাত্ররা, তখন পোড় খাওয়া সুভাষ অবশ্য আবেগকে সযত্নে সরিয়ে রেখেছেন। সুভাষের চার্চিল এই মুহূর্তে চ্যাম্পিয়নশিপের এক নম্বর দাবিদার। সেই দলকে নিয়ে বাংলার মাটিতে বসেও কী আশ্চর্যরকমের নির্লিপ্ত দু’দুবারের আই লিগ জয়ী কোচ। নিউ আলিপুর নিবাসী কোচকে দেখে কে বলবে, আজ রবিবার বাংলারই একটা দলকে হারিয়ে সাফল্য পাওয়ার জন্য নানা সিড়িভাঙা জটিল অঙ্কের সমাধানের চেষ্টা ঘুরছে তাঁর মাথায়! বাইরে নিজেকে যেভাবেই দেখানোর চেষ্টা করুন, ওডাফা-টোলগে, আইবর-নির্মল-নবি, করিম স্ট্র্যাটেজিঅসংখ্য সমস্যা সমাধানের ভাবনা ফুটে উঠছে সুভাষের কপালের বলিরেখায়।
গোয়ায় দীর্ঘদিন থাকার কারণেই সম্ভবত মুখের ভুগোল কিছুটা বদলেছে। মাথার চুলও পাতলা। অনেক উত্থান-পতনের সাক্ষী সুভাষ জানেন, কাল শুধু মোহনবাগানের সঙ্গে লড়াই নয়, লড়াইটা লাল-হলুদের সঙ্গেও। বোধহয় সে জন্যই ম্যাচের ২৪ ঘণ্টা আগে পেশাদারিত্বের কঠিন আবরণে নিজেকে মুড়ে ফেলেছেন চার্চিল টিডি। এতটাই যে, বলে দিচ্ছেন, “মোহনবাগান ভাল দল। শেষ কয়েকটা ম্যাচে ভাল খেলছে। ওদের গুরুত্ব তো দিতেই হবে।”
আজ করিম বিগ্রেডকে হারাতে পারলেই কার্যত চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে চার্চিল। বিপক্ষ রয়েছে অবনমনের আওতায়, তা সত্ত্বেও বাগানকে এত সমীহ! এটা কী আলাদা কোনও ট্যাকটিক্স? পরিচিত ভঙ্গিতে হেসে ওঠেন সুভাষ। হাসি থামিয়ে বললেন, “আরে যে দলটা ভাল খেলছে তাদের তো সমীহ করতেই হবে। টোলগে-ওডাফা-নবির ত্রিফলা আক্রমণকে গুরুত্ব তো দিতেই হবে।” শুনে মনে হয়, এই সুভাষ যেন বদলে গিয়েছেন। আই লিগ জয়ের হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়েও শান্ত থাকতে চাইছেন। এতটাই যে, অনেকবার শ্রীকৃষ্ণ বা রামকৃষ্ণ দেবের উদাহরণ টেনে চরম আধ্যাত্মিক হয়ে পড়তেও দেখা গেল তাঁকে। অনুশীলনে এবং ফুটবলারদের উপর অবশ্য নজর ছিল তীক্ষ্ন। কলকাতায় সুস্থ হতে কয়েক সপ্তাহ ঘাটি গেড়ে থাকা বেটোকে কখন নামাবেন তা নিয়েও ধোঁয়াশা রাখলেন। যেমন লুকিয়ে রাখলেন ওডাফা-টোলগে আটকাতে তাঁর স্ট্র্যাটেজি?
|
রবিবারে আই লিগ
মোহনবাগান: চার্চিল ব্রাদার্স (কল্যাণী ৩-৩০) |