বাগানের অনুশীলনে টোলগে-সুশান্ত। ছবি: উৎপল সরকার |
কিন্তু সেটা তিনি পারছেন কই? চার্চিল ব্রাদার্সের রিজার্ভ বেঞ্চে যিনি কোচ হয়ে বসবেন তিনি তো নিখাদ বাঙালিসুভাষ ভৌমিক। এবং যিনি বঙ্গসন্তান কোচ হিসাবে চমকপ্রদ রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে। যদি গোয়ার পারিবারিক দলটিকে তিনি এ বার আই লিগ দিতে পারেন তা হলে, তিনিই হবেন প্রথম কোচ যিনি বাংলার বাইরে গিয়ে কোনও ক্লাবকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন। সেখানে গোয়া-বাংলা তত্ত্ব কতটা কাজে দেবে বলা মুশকিল। নিট ফল, দুই কোচের ধুন্ধুমার ট্যাকটিকাল একটা মস্তিষ্ক-যুদ্ধ দেখার অপেক্ষায় থাকতেই পারেন ফুটবলপ্রেমীরা।
চালটা শুরু হয়েছে চব্বিশ ঘণ্টা আগে থেকেই। চোট সারিয়ে ফেরা টিমের প্রাণভ্রমরা বেটোকে মাঠে নামাবেন জানিয়ে দিয়েছেন চার্চিল কোচ। শুনে করিম হেসেছেন। কিছুটা অবিশ্বাস নিয়েই বলেছেন “বেটো নামবে? ইজ ইট ট্রু।” মুখটা দেখে মনে হল, এসব গুগলি তিনি অনেক সামলেছেন। মরোক্কান কোচের মন্তব্য, “ইচে নেই বলে ভাবছি না। কারণ গোয়ায় যে ম্যাচে (স্পোর্টিং ক্লুব) সবচেয়ে বেশি গোলে জিতেছি, ইচে সেখানে কিন্তু খেলেনি।” করিমের মুখ থেকে বেরিয়েছে, “ডেম্পোর বিরুদ্ধে চার্চিল প্রথম কুড়ি-পঁচিশ মিনিট কেমন টেনশনে ছিল দেখেছি।” সুভাষ ভৌমিক স্বীকার করেছেন, “আমরা খেতাবের খুব কাছে আছি। চাপ তো থাকবেই।”
করিম এবং সুভাষের মধ্যে সম্পর্ক বরাবরই ‘মধুর’। এ দিন কেউ অবশ্য কেউ কারও সম্পর্কে ‘সেরকম’ কিছু বলেননি। সকালে নিজেদের মাঠে করিম অনুশীলন শুরু করেছিলেন, ফুটবলারদের ‘হাততালি’ দিয়ে। টোলগে-ওডাফা, নবি-নির্মলরা লাফিয়ে লাফিয়ে একে অন্যের সঙ্গে তালি দিয়েছেন। কল্যাণীতে সুভাষের অনুশীলনে ছিল চাপ-মুক্ত আবহাওয়া অবস্থা দেখানোর চেষ্টা।
ওডাফা-টোলগে জুটিকে আটকাতে সুভাষ নিজের রক্ষণকে আটোসাঁটো করেছেন। মাঝমাঠে স্ট্র্যাটেজি বদলাচ্ছেন। করিম আবার টিম মিটিংয়ে বলেছেন, “সুয়েকা যদি ডেম্পোর রক্ষণ ভাঙে তা হলে আমরা কেন পারব না?” সে জন্যই রহিম নবি রাইট ব্যাক হয়ে গেলেও তিন স্ট্রাইকার থেকে পিছু হটছেন না করিম। অন্য দিকে সুভাষ আস্থা রাখছেন হেনরি-সুনীলের উপরই। ৪-৪-২ এ।
টানা এগারো ম্যাচে অপরাজিত করিম ব্রিগেড জিততে মরিয়া। সুভাষের টিমের পরিসংখ্যানও চমকে দেওয়ার মতোএখনও বাইরের কোনও ম্যাচ কিন্তু হারেনি চার্চিল। সবমিলিয়ে হেরেছে ২৩ ম্যাচে মাত্র তিনটি। দেখার, শেষপর্যন্ত কার ট্র্যাক রেকর্ড অক্ষত থাকে? |