যে দিকে তাকানো যাচ্ছে শুধুই ধ্বংসস্তূপ। বাড়িতে বাড়িতে ফাটল। জায়গায় জায়গায় বাড়ি একেবারে মাটিতে মিশে গিয়েছে। ২০০৮-এর স্মৃতি এখনও ভুলতে পারেনি। তারই মধ্যে শনিবার স্থানীয় সময় সকাল আটটা নাগাদ দফায় দফায় ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল উত্তর-পশ্চিম চিনের সিচুয়ান প্রদেশ। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ৭।
চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী ধ্বংসস্তূপের তলা থেকে এখনও পর্যন্ত ১৬১ জনের দেহ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। আহতের সংখ্যা সাত হাজারের বেশি। অনেকেই এখনও ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ে রয়েছে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আমেরিকার ভূতত্ত্ব বিভাগ জানিয়েছে, ভূকম্পটির উৎসস্থল সিচুয়ান প্রদেশের ইয়ান শহরের কাছে মাটির ১৩ কিলোমিটার গভীরে।
ভূমিকম্পে ইয়ান ও তার আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক সম্পত্তি ও জীবনহানির খবর এসেছে। সিচুয়ানের রাজধানী চেংদুতে আজ যে দিকে তাকানো যাচ্ছে অক্ষত কিছু চোখে পড়ছে না। ভূকম্পনের তাণ্ডবে বাড়িঘর-গাছপালা নিশ্চিহ্ন সবই। পাহাড়ে ঘেরা সবুজ চেংদু পরিণত হয়েছে ধুলোবালি আর মৃতের স্তূপে।
চেংদু-র এক বাসিন্দা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আমি তখন ১৩ তলার ফ্ল্যাটে ছিলাম। হঠাৎ দেখলাম চোখের সামনে সব কিছু কাঁপছে। তার মধ্যেই ঘরের টাইল খুলে পড়ল। ভূমিকম্প হচ্ছে বুঝতে পেরেই নীচে নেমে এলাম।” |
ইতিমধ্যেই উদ্ধারকার্যের জন্য একটি দল গঠন করা হয়েছে। এই দলে রয়েছেন ১৮০ জন ডাক্তার এবং ৬ হাজার সেনা। ইয়ান শহরের আশপাশের রাস্তা পরিষ্কারের কাজ চলছে। যদিও অনেক দুর্গম এলাকায় এখনও পর্যন্ত উদ্ধারকারীরা পৌঁছতে পারেননি। সেই সব জায়গার অবস্থা বুঝতে ড্রোন থেকে ছবি তোলা হচ্ছে।
জায়ান্ট পান্ডাদের শহর ইয়ানে আশার কথা শুনিয়েছেন স্থানীয় প্রাকৃতিক উদ্যানের মুখপাত্র। তিনি জানান, ভূকম্পে উদ্যানের বিষাক্ত সাপ ও পান্ডাদের কোনও ক্ষতি হয়নি। এর আগে সিচুয়ানে ২০০৮ সালে ভূমিকম্প হয়েছিল। সে বার রিখটার স্কেলে ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৮। প্রায় ৭০ হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছিলেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শনিবারের ভূকম্পের খবর পাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন। তাঁরা জানান, “সরকারের তরফ থেকে মৃত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সব সাহায্য করা হবে।” গত ১৭-ই এপ্রিল ইরান-পাকিস্তান সীমান্তে ৭.৯ মাত্রার কম্পনের জেরে কেঁপে উঠেছিল উত্তর-পূর্ব ভারতের অঞ্চল। সে বার রেহাই পেলেও এ বার আঘাত এড়াতে পারল না চিন। |