আন্দোলন লাটাগুড়িতে
দূষণ ছড়াচ্ছে কিছু রিসর্ট
মুখে পরিবেশ বান্ধব রিসর্ট তৈরির আশ্বাস। বাস্তবে নিয়ম ভাঙা চলছে। পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগের যে গরুমারা সংলগ্ন লাটাগুড়ি অঞ্চলে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ ওঠা শুরু হয়েছে জঙ্গল লাগোয়া বেসরকারি রিসর্টের মালিকদের একাংশের বিরুদ্ধে।
একই অভিযোগে সম্প্রতি একটি রিসর্টে তালা ঝুলিয়ে দেন ক্ষুব্ধ স্থানীয় কিছু বাসিন্দা। বহুবার আর্জি জানানো সত্ত্বেও ওই রিসর্ট কর্তৃপক্ষ দূষণ রুখতে ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ। তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হলে কলকাতার একটি সংস্থার শতাধিক পর্যটক আটকে পড়েন। পুলিশ গেলে ঘণ্টাখানেক পরে তালা খোলে জনতা। লাটাগুড়ি রিসর্ট মালিকদের সংগঠনের সদস্যদের তরফেও বাসিন্দাদের দাবির যৌক্তিকতা স্বীকার করা হয়েছে। যে রিসর্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁর কর্ণধার পার্থ রায় অবশ্য দূষণের মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “অভিযোগ যখন রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করে সমস্যার সমাধানসূত্র খোঁজা যায়। পর্যটকদের আটকে রাখা মেনে নেওয়া যায় না।”
অথচ পূর্ব লাটাগুড়ির মহাকালপাড়া এলাকার বাসিন্দারা জানান, পার্থবাবুর রিসর্টের শৌচাগার থেকে বের হওয়া দুর্গন্ধে বসবাস করা সম্ভব হচ্ছে না। যে জায়গায় রিসর্টের শৌচাগারের ট্যাঙ্ক, তার পাশে বাবলু মহম্মদ, হর রায় সহ অন্তত ১৫ জনের বাড়ি। হরবাবু বলেন, “এক মাস ধরে সমস্যা চলছে। কুয়োর জলে ফেনা উঠেছে। রিসর্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে কয়েক বার অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি।” স্থানীয় সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাবের কর্তা কল্যাণ সিংহ বলেন, “রিসর্টের পর রিসর্ট হচ্ছে কিন্তু পরিকাঠামো নেই।”
গ্রিন লেভেল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির কর্ণধার অনির্বাণ মজুমদারের অভিযোগ, পরিবেশ বান্ধবের কথা মুখে বলা হলেও অনেকে তা মানছেন না দমদমের বাসিন্দা দুই পর্যটকও বলেন, “এত সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র কিন্তু সবটাই আগোছালো। জঙ্গল এলাকায় প্লাস্টিক দেখে খারাপ লাগে।”
লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৯ সাল নাগাদ এখানে রিসর্ট গড়ে উঠতে শুরু করে। গোড়ায় পরিবেশ রক্ষার কথা বলা হয়। কিন্তু ২০০০ সাল পর্যন্ত তা মেনে চলা হলেও পরে ব্যবসা মুখ্য হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ। সবুজ গাছগাছালি মুখ ঢাকতে শুরু করে কংক্রিটের জঙ্গলে। রিসর্টের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪০টি। আরও কিছু তৈরির মুখে। ক্রমশ বিনিয়োগ বেড়ে চলায় জনপদের আদল দ্রুত পাল্টাতে শুরু করে। ব্যবসা, কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়ে চলে। কিন্তু অপরিকল্পিত সমৃদ্ধির গা বেয়ে দূষণের মতো সমস্যা উঁকি দিতে আতঙ্ক ছায়া মেলতে শুরু করে।
কিছু রিসর্ট কর্তৃপক্ষ পরিবেশের কথা না ভেবে শুধুমাত্র ব্যবসার জন্য যা খুশি করছেন বাসিন্দাদের ওই অভিযোগ অস্বীকার করেননি লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কমল ভৌমিক। তাঁর কথায়, “শুধুমাত্র মুনাফার জন্য এলাকার পরিবেশ নষ্ট হতে দেব না। এ জন্য প্রত্যেককে চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হবে।” লাটাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান গোবিন্দ দাস বলেন, “আমি নিজে ঘুরে দেখেছি সাধারণ নিয়মের তোয়াক্কা করছেন না অনেক রিসর্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.