পড়তি বাজারে শেয়ার কেনার হিড়িক। আর তার জেরে হু হু করে বাড়ছে সূচক। বৃহস্পতিবার আরও এক দফা বেড়ে সেনসেক্স ফের ফিরে এসেছে ১৯ হাজারের ঘরে। এই দিন এক লাফে সূচকের বৃদ্ধি হয়েছে ২৮৫.৩০ পয়েন্ট। বাজার বন্ধের সময়ে সেনসেক্স ছিল ১৯,০১৬.৪৬ অঙ্কে।
চলতি সপ্তাহে গত চার দিনের লেনদেনেই সেনসেক্স বেড়েছে ৭৭৩.৯০ পয়েন্ট। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরেছে বলে মানছেন না বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, শেয়ার বাজারের মৌলিক উপাদানগুলির এখনও পরিবর্তন হয়নি। আগে বেশ কিছু দিন ধরে সূচক টানা পড়েছিল। যার ফলে বহু ভাল সংস্থার শেয়ার এখন কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। পড়তি বাজারের এই সুযোগ নিতেই শেয়ার কিনতে শুরু করেছেন লগ্নিকারীরা। তবে বাজার কালই যে পড়বে না, এই কথা হলফ করে বলা সম্ভব নয়।
তবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আগামী ৩ মে ঋণনীতির পর্যালোচনায় ফের সুদ কমানোর রাস্তায় হাঁটতে পারে বলে বাজারে আশার সৃষ্টি হয়েছে। কেন এই আশার সৃষ্টি হল? প্রথমত, মূল্যবৃদ্ধির হার নীচের দিকে নামছে। দ্বিতীয়ত, গত তিন মাস ধরে ভারতের রফতানি বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে চলতি খাতে বাণিজ্য ঘাটতি কমার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তৃতীয়ত, বিশ্ব বাজারে অনেকটাই কমে এসেছে অশোধিত তেলের দাম। যার ভাল প্রভাব মূল্যবৃদ্ধির সূচকের উপর পড়াটাই স্বাভাবিক। এই সব কারণেই বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ বার সুদ কমাতে পারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। চতুর্থত, রাজনীতিতে যে চরম অনিশ্চিয়তা দেখা গিয়েছিল, তা আপাতত অনেকটাই কম। জমি অধিগ্রহণ বিল নিয়ে বিজেপি-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে সহমত সৃষ্টি হওয়ায় লগ্নিকারীরা, বিশেষ করে বিদেশি বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলি উৎসাহিত।
বাজার বিশেষজ্ঞ অজিত দে বলেন, “এটা ঠিক, বাজারের মোলিক উপাদানগুলির অবস্থান এখন ভাল নয়। তবে সুদ অবশ্যই একটি মৌলিক উপাদন। তা কমলে তার প্রভাব শেয়ার বাজারের উপর পড়বে বলেই বিশ্বাস। কিন্তু শিল্পের হাল ফেরাতে চাহিদা বাড়া প্রয়োজন। সার্বিক ভাবে দেশের আর্থিক অবস্থার উন্নতি না-হওয়া পর্যন্ত শিল্পে চাহিদা কতটা বাড়বে, তা নিয়ে কিন্তু সন্দেহ রয়েছে।” বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের সমস্যা খারাপ মোড় নিলে ভারতের অভ্যন্তরীণ ভাল প্রভাবকে তা মুছে দিতে পারে। তাই সাধারণ ক্ষুদ্র লগ্নিকারীদের অজিতবাবুর পরামর্শ, “কমপক্ষে দু’বছরের মেয়াদে অল্প অল্প করে শেয়ার কিনলে হাত পোড়ানোর সম্ভাবনা কম।” |