|
|
|
|
তারাবাজি |
|
মালকিনদের কাপ্তানি
শিল্পা। প্রীতি। জুহি। নীতা। চার গিন্নি চুটিয়ে সংসার
চালাচ্ছেন আইপিএলের ময়দানে। লিখছেন মীর |
|
মহিলারা বাড়ি সামলান। বাচ্চা সামলান। বাজার সামলান।
এমনকী অফিসও বেশ ভালই সামলান। তাই বলে ক্রিকেট টিম!
হুঁ হুঁ, আইপিএল-য়ের বাজারে সবই সম্ভব মেসোমশাই।
এই তো রাজস্থান রয়্যালস, কলকাতা নাইট রাইডার্স, কিংস ইলেভেন পঞ্জাব আর মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, আইপিএল-য়ের চারটে টিম সামলাচ্ছেন চার সুন্দরী টিম মালিক। থুড়ি মালকিন, চার সুন্দরী টিম মালকিন।
প্রথমেই যাঁর নাম করতে হবে, তিনি হলেন শিল্পা শেঠি। নিঃসন্দেহে আইপিএল শিল্পের অন্যতম শিল্পী তিনি। ধনী শিল্পপতিকে পতি করার টাইমিংটা অসাধারণ। ফিল্ম কেরিয়ার পড়ল আর রাজ কুন্দরার সঙ্গে গাঁটছড়ার ব্যাট নেমে এল। ফল? সাঙ্ঘাতিক মাস্টারস্ট্রোক, বল মাঠের বাইরে। সে নিজের কেরিয়ার যতই রুপোলি পর্দার বাইরে বেরিয়ে যাক।
|
|
আইপিএল তো সেখানে পাটা উইকেটে সহজ কভার ড্রাইভ। যদিও খুব একটা কভারের ধার তিনি ধারেন না। লেহেঙ্গা চোলি পড়ে রাজস্থান রয়্যালস-এর সঙ্গে ‘হল্লা বোল’ করছেন, তো কখনও ছেলে ভিয়ানকে নিয়ে ডাগ আউট আলোকিত করছেন। রাজস্থান মরুভূমিতে এ রকম একটা ওয়েসিসই যথেষ্ট।
ছেলেকে মাঠে আনাটা শিল্পার আর এক স্ট্রেট ড্রাইভ। এমনিতেই সিনেমার কেরিয়ার তেমন একটা শিল্পমণ্ডিত নয়, বাকি ছিল রাজস্থান রয়্যালস। কিন্তু সেখানেও কি আর শান্তি আছে। প্রীতি আছে, জুহি আছে। সে রামও নেই, সে লঙ্কাও নেই। রাহুল দ্রাবিড় আছে, কিন্তু শেন ওয়ার্ন তো আর নেই। তাই ছেলে। ব্যস, মিডিয়া অ্যাটেনশনও চলে গেল শিল্পার দিকে। বেচারা শমিতা। সারাক্ষণ ডাগ আউটে বসে। কিন্তু কোনও লাইম লাইটই পাচ্ছে না।
লাইমের কথাই যখন উঠল তখন লঙ্কার কথা বলি। শুকনো লঙ্কার ব্যবসা করে কে কবে বড়লোক হয়েছে জানি না। তবে রেড চিলিজ ফাটিয়ে দিচ্ছে। বক্স অফিসেও, ক্রিকেটেও। এ লঙ্কা ঝোলেও আছে, অম্বলেও আছে। প্রথম দিকে বেশ কয়েক বার মুখ থুবড়ে পড়েছে। তবে গত বছর থেকে সামলে নিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স।
সামলাচ্ছেন জুহিও প্রথম থেকে। জুহির অ্যাপিলটাই আলাদা। অনেকটা জুঁই ফুলের মতো। প্রশান্ত। সর্বদা হাস্যময়। দেখে কে বলবে জীবনে কোনও টেনশন আছে! আমার তো দেখে মনে হয় মাটির মানুষ। মাঠেও সেটাই ফুটে ওঠে।
তবে মাঠে ফোটার ব্যাপারে প্রীতির নাম করতেই হবে। প্রিটি তো বটেই। পটাকাও বটে। লাল জার্সি পরে প্রীতি আপনার হয়ে ডাগ আউটে চিয়ার করছে। তার পরেও ম্যাচ হারা সম্ভব! জিতে ফিরলে তো আবার চিয়ারের সঙ্গে হাগ ফ্রি। যুবরাজের জন্য কষ্ট হয়। কী করতে যে কিংস ইলেভেন পঞ্জাব ছেড়ে গেল? কে জানে? নেসের দিক থেকে কোনও বারণ এসেছে বলে তো আমার কানে আসেনি।
প্রীতি কিন্তু ভেবেছিলেন ফিল্মি কেরিয়ারের পর নেসের সঙ্গে একটা জমাটি ইনিংস খেলবেন। কিন্তু কী করা যাবে, অনেক শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে সেই পার্টনারশিপ টিকল না। টিকে গেলেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। যদিও টিকে গেলেন বললে অর্ধেক বলা হয়। আসলে বয়সটা অর্ধেক করে থেকে গেলেন। বিয়াল্লিশ বছরের কিংস ইলেভেন পঞ্জাব-য়ের অধিনায়কের কাছে তো একুশের যুবকরাও কয়েক গোল খাবে। এই তো সে দিন কলকাতা নাইট রাইডার্সের ম্যাচ। ওই রকম ঝাঁপিয়ে পড়ে ওয়াইড বলে চার বাই রান না ঠেকালে ম্যাচ শেষে প্রীতির আর নাচতে হত না। প্রীতির শুভেচ্ছা-ভালবাসাই হয়তো গিলক্রিস্টের বয়স কমার পিছনে লুকিয়ে।
শেষ নামটা শেষে লিখছি বটে। কিন্তু তিনি মোটেই লুকিয়ে রাখার নন। তিনি নীতা। না ‘মেঘে ঢাকা তারা’র নীতা নন। বরং তাঁর মেঘে এখনই ঢাকা পড়ে গিয়েছেন অম্বানী পরিবারের আর এক বৌ, টিনা অম্বানী। ইনি নীতা অম্বানী। হ্যাঁ, পরিচয়ে মুকেশ অম্বানীর বৌ। তবে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স-য়ের ম্যাচে সম্পর্কটা উলটো করে বলাই ভাল। মুকেশ অম্বানী ওঁর বর।
এত ভাইব্র্যান্ট মহিলা আমি কমই দেখেছি। সচিনের মতোই জনপ্রিয় নীতা। ওই যে আগের সিনেমায় হিরো মেরিন ড্রাইভে দাঁড়িয়ে আরব সাগরের দিকে মুখ করে চিৎকার করত না, “বোম্বাই কা কিং কৌন হ্যায়?” উত্তর জানতে চান? টিকিট কেটে হলে ঢুকুন। কিন্তু যদি জানতে চান মুম্বই কা কুইন কৌন হ্যায়? আমি বলব, আইপিএল খুলে বসুন। উত্তর পেয়ে যাবেন। মুখে টেনশনের কোনও ছাপ নেই। মনে হয় হাতে একটা ছড়ি নিয়ে ঘুরছেন সব সময়। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স টিমের কারওকে পেলে জিজ্ঞেস করতাম, ছড়িটা নীতা রাখেন কোথায়? |
|
|
|
|
|