কুবের উবাচ
• রুমানা বেগম (৪৬) • স্বামী হাসির মল্লিক (৪৯)

• ছেলে তিতাস (১৭) রুমানা সরকারি হাসপাতালের নার্স • সেখানে পিএফ ও স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা রয়েছে
• ছেলে পড়ে একাদশ শ্রেণিতে • নিজেদের ফ্ল্যাট • স্বামীর উপার্জন সামান্য • সংসার চালানো নিয়ে চিন্তিত
• ভাবনা রয়েছে ছেলের পড়াশোনার খরচ জোগানো নিয়ে • অবশ্যই ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয়ে আগ্রহী

রুমানার আয়
২৬,৭৭২
হাসিরের আয়
১০,০০০
টাকা রাখেন (বছরে)
• পিএফ ১৩,৯২০
• রেকারিং ডিপোজিট ১২,০০০ (২০১৩-র ডিসেম্বর পর্যন্ত)
• এলআইসি মানি ব্যাক ১,২৬৮
(২০২৫ পর্যন্ত, বিমা মূল্য ২৫,০০০)
• এলআইসি জীবন সরল ১২,০১০
(২০২৯ পর্যন্ত, বিমা মূল্য ২.৫ লক্ষ)
• এলআইসি এনডাওমেন্ট ২৫,০০০
(২০১৭ পর্যন্ত, বিমা মূল্য প্রায় ২.৫ লক্ষ)
• এলআইসি মানি ব্যাক ২,২৩৪
(২০১৬ পর্যন্ত, বিমা মূল্য ৪০,০০০)
• পিপিএফ ৫০,০০০ (সবে শুরু)
খরচ (মাসে)
• সংসার চালাতে
১৩,০০০
• গৃহঋণ ৩,৩৩৫ (১০ বছর বাকি)
• স্বাস্থ্য বিমা ৫৫৭
সম্পদ
• স্থায়ী আমানত
২,০০,০০০ (২০১৩-র ডিসেম্বর পর্যন্ত)
• নিজেদের ফ্ল্যাট
রুমানার মতো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ পেতে পারেন আপনিও।

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
রুমানার পেশাই হল মানুষের সেবা করা। যে ভাবে রোগীদের সুস্থ জীবনে ফিরে যেতে তিনি সাহায্য করেন, ঠিক সে ভাবেই সংসারের যাবতীয় ঝড়-ঝাপটাও সামলান দক্ষ হাতে। আপাতত তাঁর সামনে কয়েকটি লক্ষ্য রয়েছে। আর তা নিয়েই তিনি জানতে চেয়েছেন আমাদের কাছে। তাই আসুন দেখে নিই কী ভাবে তিনি সেগুলি পূরণ করতে পারেন। মূল তিনটি লক্ষ্য ছেলের পড়াশোনা, বিমার সুরক্ষা ও অবসর পরিকল্পনা।

বিমার সুরক্ষা

রুমানা পরিবারের মূল উপার্জনকারী। সে কারণে তাঁর বিমার সুরক্ষার পরিমাণ অন্যদের থেকে বেশি হওয়া উচিত। তাই আমি পরামর্শ দেব, তাঁর নিজের নামে একটি টার্ম পলিসি করে নিতে। ১৫ বছরের জন্য ২৫ লক্ষ টাকার টার্ম পলিসি করাতে রুমানার প্রিমিয়াম পড়বে বছরে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। কিন্তু এতে শুধুমাত্র বিমার সুরক্ষা মেলে, অর্থাত্‌ বিমা চলাকালীন লগ্নিকারীর মৃত্যু হলে তবেই টাকা পাওয়া যায়। মেয়াদ শেষে কিন্তু কোনও অর্থ ফেরত পাওয়া যায় না। এই অর্থ প্রয়োজনের তুলনায় বেশি মনে হতে পারে।
কিন্তু ভেবে দেখতে পারেন, সাধারণত এলআইসি এনডাওমেন্ট পলিসিগুলিতে প্রিমিয়ামের ১০ গুণ বিমা কভারেজ পাওয়া যায়, সেই হিসাবে রুমানার এই পলিসিতে পাওয়ার কথা প্রায় ২.৫ লক্ষ টাকা। আর তাঁর বাকি বিমার অঙ্ক ২.৭৫ লক্ষ টাকা। অর্থাত্‌ বর্তমানে রুমানার নামে প্রায় ৫.২৫ লক্ষ টাকার বিমা রয়েছে। আর তাঁর স্বামীর নামে রয়েছে ৪০ হাজারের বিমা। কিন্তু রুমানার যদি হঠাত্‌ কোনও দুর্ঘটনা ঘটে, তা হলে পরিবারের সুরক্ষার কথা মাথায় রাখলে এই অঙ্ক যথেষ্টই কম। তাই এই টার্ম পলিসি করিয়ে নেওয়া জরুরি।

ছেলের পড়াশোনা

তিতাসের বয়স ১৭। একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। অর্থাত্‌ কলেজে পড়ার আগে তার হাতে এক বছর সময় রয়েছে। আগামী ৪-৫ বছর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো কোনও পেশাগত পাঠ্যক্রমে পড়াশোনার জন্য এই সময়ে তার ৬ লক্ষ টাকা প্রয়োজন হবে। কিন্তু স্থায়ী আমানতের ২ লক্ষ টাকা এবং রেকারিং ডিপোজিটের অর্থ (মেয়াদ শেষ হবে ২০১৩-র ডিসেম্বর) ছাড়া অন্য কোনও সঞ্চয় এই মুহূর্তে রুমানার নেই।
রেকারিং ডিপোজিট থেকে প্রায় ৪২ হাজার টাকা পাবেন তিনি। এর সঙ্গে স্থায়ী আমানত থেকে যদি ১.৫৮ লক্ষ টাকা নেন, তা হলে মোট হবে ২ লক্ষ টাকা। স্থায়ী আমানতের বাকি টাকা কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য ফের কোনও জমা প্রকল্পে রাখতে হবে তাঁকে। এর পরও রুমানার প্রয়োজন ৪ লক্ষ টাকা। সে জন্য তাঁকে শিক্ষাঋণ নিতে হবে।
আসুন দেখে নিই শিক্ষাঋণ নিলে তার মাসিক কিস্তি কত পড়বে—
৪ লক্ষ
১০%
৫ বছর
১%
প্রায় ৮,৫০০ টাকা

অবসর পরিকল্পনা

১) পিপিএফে প্রতি বছর ন্যূনতম ৫০ হাজার টাকা লগ্নি চালিয়ে যেতে হবে। বেতন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই খাতে লগ্নি আরও বাড়াতে পারলে ভাল।

২)
২০২৫ পর্যন্ত চলা এলআইসি-র মানি ব্যাক পলিসি এবং জীবন সরল প্রকল্প দু’টি মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত চালিয়ে যান। অবসর পরিকল্পনা করতে যা সাহায্য করবে।

৩)
এনডাওমেন্ট প্রকল্পটি ২০১৭ সালে শেষ হবে। তার থেকে যে অর্থ পাবেন, সেই টাকার পুরোটাই ডাকঘর মাসিক প্রকল্পে রাখুন। অথবা তা করছাড়যুক্ত কোনও সরকারি বন্ডে রাখার বুদ্ধিও নেহাত মন্দ হবে না।

৪)
মাসে যাবতীয় খরচের পরেও রুমানা ও হাসিরের হাতে প্রতি মাসে ১,৫৮৭ টাকা থাকছে। এর পর রেকারিং ডিপোজিটটি বন্ধ হলে হাতে আরও ১,০০০ টাকা আসবে। অর্থাত্‌ সেই সময়ে তাঁদের হাতে থাকবে ২,৫৮৭ টাকা। এই টাকা থেকে বিভিন্ন খাতে সঞ্চয় করতে পারেন
• ব্যাঙ্কে প্রতি মাসে ১,০০০ টাকা করে একটি রেকারিং ডিপোজিট খুলুন। যার মেয়াদ হবে ১ বছর। ওই ১ বছর শেষ হলে যে টাকা পাবেন, তা তুলে নিয়ে আপনি গৃহঋণ শোধ করার কাজে লাগাতে পারেন। যা আপনার ঋণের আসলের অঙ্ক থেকে বাদ যাবে। ফলে ঋণ শোধের মেয়াদও কমে আসবে।
পরিবর্তনশীল সুদের আওতায় থাকলে এখন অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাঙ্কগুলি আগে ঋণ ফেরত দিলে কোনও চার্জ নেয় না। তাই এই প্রক্রিয়াটি (অর্থাত্‌ রেকারিং করা এবং সেই টাকা দিয়ে ঋণ শোধ) চালিয়ে যান যত দিন না গৃহঋণ পুরোপুরি শেষ হচ্ছে।
• এর পরেও রুমানার হাতে যে ১,৫০০ টাকা থাকছে, তা সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান (এসআইপি)-এর মাধ্যমে কোনও ডাইভার্সিফায়েড ইক্যুইটি ফান্ডে রাখতে পারেন। অবসর নেওয়া পর্যন্ত এ ভাবে লগ্নি চালিয়ে যান। এই খাতে প্রায় ৬.৫ লক্ষ টাকা জমবে (১৪ বছরে ১২% রিটার্ন ধরে)।

৫)
শিক্ষাঋণ শেষ হলে রুমানার হাতে প্রতি মাসে ৮,৫০০ টাকা আসবে।
• এর মধ্যে মাসে ১,০০০ টাকা সেভিংস অ্যাকাউন্টে রাখুন। যা সময়ে-অসময়ে কাজে লাগবে।
• ১,০০০ টাকা স্বাস্থ্যবিমার টপ-আপ হিসাবে রাখতে পারেন।
• বাকি ৬,৫০০ টাকা অবসর পর্যন্ত সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যানের মাধ্যমে লগ্নি করুন। এতে প্রায় ১২.৫ লক্ষ টাকা পাবেন।

৬)
প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা অবসরের জন্য রাখুন।
অবসর নেওয়ার পরে যাবতীয় টাকা একত্র করে ঋণপত্র নির্ভর কম ঝুঁকির কোনও প্রকল্পে রাখুন, যা থেকে প্রতি মাসে আপনি আয় করতে পারবেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.