|
|
|
|
|
জমিয়ে খান কমিয়ে নয়
নববর্ষের দিন থেকেই চলছে জম্পেশ খাওয়াদাওয়া! তবে ফিট থাকাটাও সমান জরুরি।
হেভি খাওয়ার পর কী কী ওয়ার্ক আউট করবেন? পরামর্শ দিলেন ফিটনেস বিশেষজ্ঞ চিন্ময় রায় |
|
আবার একটা নতুন বছর। আবার জমিয়ে খাওয়া-দাওয়া।
জমিয়ে লুচি বা পোলাও-মাংস, কিংবা বিরিয়ানি আর চাঁপ। স্বাদ বদলে যারা কন্টিনেন্টাল খেলেন, তাঁরা তো বেঁচে গেলেন।
কিন্তু ঘি-গরম মশলা দেওয়া জমাটি বাঙালি খাবার খেলে ক্যালোরি তো বাড়বেই। তাতে এত দিন সাবধানে সামলে রাখা শরীরের একেবারে দফারফা। তাই খাওয়ার দিকটা সচেতন ভাবে খেয়াল রাখার পাশাপাশি এক্সারসাইজেও কিছু বদল আনুন।
ভেবে খান
তেল-মশলা, সোদক লবণ, জাফরান দিয়ে বানানো সুস্বাদু খাবার যে প্রক্রিয়াকরণের মধ্যে দিয়ে যায়, ,সেটা শরীরে গেলে প্রচুর টক্সিন তৈরি হয়।
বুঝতেই পারছেন যে টক্সিন কখনওই শরীরের জন্য ভাল নয়। টক্সিন শরীরের ফ্যাট ধরে রাখে। তাই পয়লা বৈশাখে চিংড়ি মাছের মালাইকারি, পনির বাটার মশালা, আর কৃত্রিম মিষ্টি বানানোর কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি করা কুলফি বা ফিরনি খেলে শরীরে জমবে প্রচুর টক্সিন। সঙ্গে অ্যালকোহল হলে তো কথাই নেই। টক্সিনের একেবারে পোয়াবারো! বেশি খেয়ে আপনি ভাবলেন ওয়ার্ক আউটের সময় বাড়িয়ে দিয়ে প্রচুর ক্যালোরি ঝরিয়ে ফেলবেন।
একটু ভুৃল ভাবলেন। ক্যালোরি ঝরবে। তবে বেশি মাত্রায় ঝরবে কার্বোহাইড্রেট। আর যদি টানা অনেকটা সময় ওয়ার্ক আউট করেন, তবে প্রোটিন খরচ হবে। মানে, আপনার পেশিতে টান পড়বে। এ ক্ষেত্রেও ভিলেন সেই টক্সিনই। টক্সিনের ধর্মই হল মেদ শরীরে জমিয়ে রাখা। অতিরিক্ত ভাজাভুজি বা মশলাদার খাবার খেয়ে যে টক্সিন শরীরে জমা হয়, তা ঝরতে অনেক সময় লাগে।
বুদ্ধি করে কয়েকটা জিনিস যদি খেতে পারেন, তা হলে আপনারই উপকার হবে।
আদা আর রসুনের মিশ্রণ ডিটক্স হিসেবে ভাল কাজ করে। সকালে এক গ্লাস গরম জলে একটা পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খেলেও অনেক উপকার হয়।
খেতে পারেন বিটের রসও। আপেল সেদ্ধ করেও খাওয়া যেতে পারে। আপেলে থাকা পেকটিন ডিটক্সের কাজ করে। আর যখন ইলিশ মাছ খেতেই হবে, তখন ঝোলটা এড়িয়ে যান। মাংস খেলেও ঝোল বাদেই খান। এতে টক্সিন কিছুটা কম পরিমাণে শরীরে ঢুকবে। |
|
|
ব্যায়াম যখন মুশকিল আসান |
এই সমস্যায় যোগাসন দারুণ কাজ দেয়। তবে এক্সারসাইজ করলেও করতে হবে খাবার দু’ঘণ্টা পর। মশলাদার খাবার হজম করতে এমনিতেই প্রচুর সময় লাগে। খেয়েই যদি ব্যায়াম করতে দৌড়োন, তা হলে গ্যাস হতে পারে। হতে পারে বুকে চাপ চাপ ভাব, মাথা ঘোরাও।
হজমের সমস্যা এড়াতে তাই করতে পারেন যোগাসনের কয়েকটা স্ট্রেচ।
• বজ্রাসন: হাঁটু মুড়ে বসে থাকুন তিরিশ সেকেন্ড।
• ভুজঙ্গাসন: উপুড় হয়ে শুয়ে হাত পাশে রেখে বুকের অংশকে ওপরে তুলতে হবে। এই ভঙ্গিমায় থাকতে হবে তিরিশ সেকেন্ড।
• পবনমুক্তাসন: শোয়া অবস্থায় দুটো হাঁটু মুড়ে বুকের ওপর চেপে ধরে রাখতে হবে। প্রায় তিরিশ সেকেন্ড থাকতে হবে এই ভঙ্গিমায়।
• উষ্ট্রাসন: হাঁটুর উপর নিল ডাউন ভঙ্গিতে থেকে হাত দুটো গোড়ালিতে ভর দিয়ে শরীরটা ধনুকের মতো বেঁকাতে হবে। এই ভাবে থাকতে হবে তিরিশ সেকেন্ড।
• সলভাসন: উপুড় হয়ে শুয়ে হাত পাশে রেখে কোমরের অংশ থেকে পা দু’টো উপরে তুলতে হবে। তিরিশ সেকেন্ড যথেষ্ট।
এই স্ট্রেচগুলো করলে অনেক হালকা লাগবে। মনে রাখবেন, ভারী মশলাদার খাবার খেলে শরীরে একটা ক্লান্তির ভাব আসে। খুব ঘুম পায়। ওয়ার্ক আউট করতেও একদম ইচ্ছে করে না। তা ছাড়া এখন গরমের সময়। ওয়ার্ক আউটের সময়টাও তাই কমিয়ে দিন।
|
ওয়ার্ক আউট যখন স্বস্তি |
যদি ভাবেন কার্ডিও ওয়ার্ক আউট করবেন, তা হলে করে নিতে পারেন তিরিশ সেকেন্ড থেকে এক মিনিট সময় নিয়ে মাউন্টেন ক্লাইম্বার বা জাম্পিং জ্যাকের মতো ওয়ার্ক আউট। নতুনত্ব থাকায় এই ওয়ার্ক আউটগুলো করলে বেশ এনজয়ও করবেন। এক বার হয়ে গেলে বার পাঁচেক রিপিট করবেন।
২০ মিটার ব্যবধানে দু’টো মার্কার রেখে এক দিক থেকে জোরে দৌড়ে যান। ফিরুন জগ করে। এ ভাবে তিরিশ সেকেন্ড থেকে এক মিনিট করলেই যথেষ্ট। হয়ে গেলে পাঁচ বার রিপিট করে নিতে পারেন।
স্ট্রেংথ ওয়ার্ক আউট করলে তাতে আনতে পারেন কিছু বৈচিত্র। ওজন বাদ দিয়ে বডি ওয়েট ওয়ার্ক আউট করতে পারেন। করতে পারেন পুশ-আপ আর ক্রল। চারটে পুশ-আপ দিন আর ক্রল করে দু’হাত-পায়ে এগোন। এ ভাবে মোট ১২-১৬টা পুশ-আপ দিতে হবে।
করতে পারেন লাঞ্জ এবং এক পায়ে ডেডলিফ্ট-এর মতো ওয়ার্ক আউটও। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে একটা লাঞ্জ করুন। আর তার ঠিক পরই এক পায়ে ভর দিয়ে পিঠকে মাটির সমান্তরাল করে সামনে ঝুঁকুন। এ ভাবে ১২ বার করলেই যথেষ্ট। কিন্তু করতে হবে দু’পায়েই।
মোট ৫-৬টা বডি ওয়েট এক্সারসাইজ বেছে নিন। সব এক্সারসাইজই ৩-৪ বার রিপিট করুন।
|
এক পলকে |
• মশলাদার খাবার, ভাজাভুজি খেয়ে শরীরে বেড়ে যাওয়া টক্সিন নিয়ন্ত্রণ করতে ১৪-১৬ ঘণ্টা শুধু হালকা শরবত ছাড়াও খান ৩-৪ লিটার জল
• অতিরিক্ত খেয়ে ফেললে খাওয়ার দু’ঘণ্টা বাদে করুন ভুজঙ্গাসন আর পবন মুক্তাসন
• একটানা ওয়ার্ক আউট করবেন না। এতে পেশিতে টান পড়ে। টক্সিনের মাত্রারও খুব একটা হেরফের হয় না |
|
|
|
|
|
|