গে-ই-ল গে-ই-ল রব |
আইপিএলের পয়লা নম্বর রোমাঞ্চ তিনি। সেরা বক্স অফিসও। জটায়ু হয়তো লিখতেন, গেইল-য়ে শিহরন।
তাঁকে থামানোর উপায় কী? চার ক্রিকেটারের সাক্ষাৎকার নিলেন গৌতম ভট্টাচার্য |
|
|
•
গেইল ঝড় বলতে কী?
•
বাইশ গজে মহাদুর্যোগের বিশ্লেষণ আর মোকাবিলার স্ট্র্যাটেজি?
•
সমাধানের চাবিকাঠি? |
|
|
গৌতম গম্ভীর
(বিপক্ষ অধিনায়ক) |
শুরুতেই স্পিনার আনো ভাই
|
গৌতম গম্ভীর |
১) আরসিবি-র সঙ্গে খেলা থাকলে টিম মিটিংয়ে আমরা ওদের গোটা টিমটা নিয়ে প্রচুর আলোচনা করি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে খেলা থাকলেও তাই। স্বীকার করছি, শুধু একজনকে নিয়ে সব চেয়ে বেশি সময় আলোচনা হয়। তার নাম ক্রিস। এই হল ‘গেইল ঝড়’-য়ের প্রভাব।
২) ক্রিসের হিটিং স্টাইলটা দু’ ধরনের। হয় প্রচণ্ড জোরে গ্রাউন্ডে মারে। নইলে স্রেফ মাঠ পার করে দেয়। ঘটনাচক্রে শূন্যে মাঠ পার করে দেওয়াটাই ওর জীবনে বেশি ঘটে।
৩) ক্রিসকে ঠেকানোর সেরা উপায়? সেরা নয়, একমাত্র উপায় শুরুতেই ওর বিরুদ্ধে স্পিনার লাগিয়ে দেওয়া। আর লাগিয়ে প্রার্থনায় বসা!
|
রবি শাস্ত্রী
(ক্রিকেট বিশ্লেষক) |
প্রার্থনা করতাম ঈশ্বরের কাছে
|
রবি শাস্ত্রী |
১) ওর নিজের দিনে গেইল বোলারকে মোটেও মেরে ফেলে না। কুচকুচ করে কেটে মেরে ফেলে। আমি ভিভকে অনেকবার বল করেছি। কিন্তু টি টোয়েন্টিতে ভিভও গেইলের তুলনা নয়। টিভি কমেন্ট্রি করতে গিয়ে আমার প্রায়ই মনে হয়, আমি বোলার হলে সারাক্ষণ চেষ্টা করতাম ওকে বল করার সময় পজিটিভ থাকতে। আর প্রার্থনা করতাম, ঈশ্বর আমার জন্য কোথাও একটা দরজা খোলা রেখো।
২) গেইলের চেহারাটা এত বিরাট যে, একমাত্র ফাটল খোঁজা যেতে পারে ওর পায়ের নড়াচড়ায়। যদি ওই চেহারা নিয়ে নড়াচড়ার সময় সূক্ষাতিসূক্ষ্ম ফ্লেক্সিবিলিটির অভাব হয়। যদি ফ্রন্ট ফুটে একেবারে প্যাডের কাছে বল করা যায়, হয়তো ও শট নেওয়ার জায়গাটা কম পাবে।
৩) দ্রুত স্পিনার নিয়ে এসো। ভুলেও মিডিয়াম পেসারের কথা ভেবো না। স্পিনার বল করুক ওর প্যাডে। আর সব সময় যেন খেয়াল রেখে যায়, ওর পা কী ভাবে নড়ছে। স্টাম্পের মতোই লক্ষ্য হবে গেইলের ফ্রন্টফুট।
|
অশোক দিন্দা
(বিপক্ষ বোলার) |
স্বীকার করছি গেইলকে ভয় পাই
|
অশোক দিন্দা |
১) গেইল আমার খুব বন্ধু। দারুণ ফুর্তিবাজ ছেলে। প্রচণ্ড পার্টি করে। আর পাঁচজন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানদের মতো।
মার্লন স্যামুয়েলস যদি এ সব ব্যাপারে গম্ভীর দক্ষিণ মেরু হয়। গেইল হল চরম উল্লাসে মেতে থাকা উত্তর মেরু। কিন্তু হলে কী হবে, মাঠে একেবারে অন্য মেজাজ। পুরো খুনে। স্বীকার করতে বাধা নেই, বল হাতে আমি যতই অসমসাহসী হই না কেন দু’জনকে একটু ভয় পাই। একজন সচিন তেন্ডুলকর। সামান্য লেংথের গণ্ডগোল হয়েছে কী বোলার গেল। সেটা যে ধরনের ক্রিকেটই হোক। আর একজন গেইল। বোলারের ঠকঠকানি ধরিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। যখন তখন মাঠের বাইরে ফেলে দেবে।
২) নতুন বলে ও খুব একটা রান করে না। অ্যাকসিলারেট করে পাঁচ-ছ’ ওভারের পর থেকে। যেটা হিট করে, সেটা একেবারে পরিষ্কার মারে। গেইলকে খবর্দার রেঞ্জের মধ্যে বল করা যাবে না। করলেই মেরে দেবে।
৩) সমাধান, কিছুটা নেগেটিভ বল করতে হবে। স্যুইং করাতে হবে ওর অফ স্টাম্পের বাইরে বাইরে। বোলারের সেরা সুযোগ কিন্তু ওই পাঁচ-ছ’ ওভার। ওই সময়টা পেরিয়ে গেলে আবার গেইল মাঠের বাইরের পার্টিটা ব্যাট হাতে মাঠেই করতে শুরু করে দেয়।
|
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
(প্রাক্তন টিমমেট ও বিপক্ষ অধিনায়ক) |
গেইলের শেষ রাখতে নেই
|
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় |
১) যে কোনও ফর্ম্যাটে ম্যাচ উইনার। ওয়ান ডে-তেও ভীষণ ভয়ঙ্কর। আর টি টোয়েন্টিতে তো চ্যাম্পিয়ন। আসলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ড ওকে কখনও আমাদের বোর্ডের মতো বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে টি টোয়েন্টি খেলতে বারণ করেনি। প্রচুর ম্যাচ খেলে খেলে এই ফর্ম্যাটে মাস্টারি করতে ও শিখে গিয়েছে।
২) যে করে হোক গেইলকে তাড়াতাড়ি আউট করতে হবে। নইলে ও ম্যাচ থেকে অবশ্যম্ভাবী বিপক্ষকে আউট করে দেবে। ওর সঙ্গে এক টিমে আর বিরুদ্ধে দু’ভাবে খেলেই দেখেছি গেইল অবিশ্বাস্য! আর পাঁচটা ব্যাটসম্যানের মতো যে পাওয়ার প্লে নিয়ে ভাবেই না যে ওই সময়টা এলে তবে হাত খুলে মারব। গোটা ইনিংসে যখন ইচ্ছে ওর পাওয়ার প্লে। কোথাও কিছু নেই, হয়তো ফিফটিন্থ ওভারে চারটে ছয় মেরে দিল। ব্যস্, খেলা ওখানেই শেষ। ম্যাচ জিততে হলে গেইলের শেষ রাখতে নেই।
৩) শুরুতে অফ স্পিনার আনো। পায়ের কাছাকাছি সেই স্পিনার বল করুক। আর পেসার আনলে অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে স্যুইং করাও। ওয়াইড হলে হবে। কিন্তু ঘুণাক্ষরেও ওর রিচে বল করিও না। গেইলের আওতায় বল করেছ কী মৃত্যু। সব সময় চেষ্টা করতে হবে এমন জায়গায় বল করতে যেখানে ও পৌঁছতে পারছে না। তার পর ধৈর্য হারিয়ে আউট হচ্ছে। সেদিন চেন্নাই সুপার কিংস সে দিন ওকে ঠিক এই ভাবেই আউট করল।
|
|
‘গ্যাংনাম’ গেইল
|
এই তিন বছরে |
আরসিবি-তে গেইল |
|
নিকটতম সহবাগ |
মোট রান
১৫৩২
স্ট্রাইক রেট
১৬৫.৯৮
বাউন্ডারি
১২০
ওভারবাউন্ডারি
১১৭ |
মোট রান
৯৩১
স্ট্রাইক রেট
১৬৭.১৪
বাউন্ডারি
৭৫
ওভারবাউন্ডারি
৩৮ |
|
|