নলকূপ রয়েছে। কিন্তু জল পড়ে না। বাসিন্দারা জানান, গরমের শুরুতেই কালচিনির বিজয়পুর ও নয়াবস্তির গ্রামে জলস্তর এতই তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে যে ছোটখাটো ঝোরাগুলিও শুকিয়ে কাঠ। নিরুপায় হয়ে নদীর ঘোলা জল ব্যবহার করতে হচ্ছে। কালচিনির বিডিও চন্দ্রসেন খাতি সমস্যার কথা অস্বীকার করেননি।
তিনি বলেন, “গরম পড়তে নানা এলাকার জল স্তর নেমে গিয়েছে। নয়াবস্তি এলাকাটা ঘুরে দেখেছি। সেখানে কয়েকটি নলকূপ বসানো হয়েছিল। জল উঠছে না। জলকষ্ট মেটাতে গভীর নলকূপ বসানোর পরিকল্পনা হয়েছে। এ জন্য প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার একটি প্রস্তাব জেলা পরিষদের কাছে পাঠানো হয়েছে।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, কালচিনির দুটি এলাকা, নয়াবস্তি ও বিজয়পুর বস্তির জনসংখ্যা ৬০০-র মত। পানীয় জল সরবরাহের জন্য সেখানে যে নলকূপগুলি বাসানো হয়েছিল সে সবই দীর্ঘদিন ব্যবহার হয় না। কোনও কলের হাতল উধাও হয়েছে। আবার কোনও কোনও কল আগাছায় ঢেকে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা নরবু লামা, রমেশ কর্মকার জানান, ২০০২ সালে নলকূপগুলি বসানো হয়। কোনও দিন জল মেলেনি। গেলডুং নদীর জল ভরসা বাসিন্দাদের। কয়েক বছর আগে বন দফতরের তরফে নদীর কাছে একটি সিমেন্টের জলাধার তৈরি করা হয়েছিল। সেখান থেকে পাইপ লাইনে জল গ্রামে পৌঁছে দেওয়া হয়।
এদিন স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লক্ষণ শর্মা বলেন, “পাইপের জলের মধ্যে প্রায়ই নোংরা আবর্জনা ভেসে আসে। স্কুলের পড়ুয়ার খেতে চায় না। কিন্তু কী করার আছে! মিড ডে মিলের রান্নার কাজে পরিশ্রুত জলের ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের কাছে কয়েক বার আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি।”
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বর্ষায় নদীর জল ঘোলা হয়ে যায়। ওই জল ব্যবহার করে পেটের রোগ দেখা দেয়। স্থানীয় বধূ যমুনা ছেত্রী বলেন, “পেটের রোগ এড়াতে বর্ষায় অনেকে জলের জন্য প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে ভাটপাড়া বাগানে যায়। সেখান থেকে জল বয়ে নিয়ে আসেন।” এলাকার আরএসপির গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য কাজি লামা জানান, গভীর নলকূপ বাসানোর জন্য প্রশাসনকে কয়েকবার অনুরোধ করেও লাভ হয়নি। পরিস্রুত জলের সমস্যার কারণে বছরভর এলাকায় পেটের রোগ লেগে থাকে। বর্ষায় সমস্যা বেড়ে যায়। |