জরাজীর্ণ হয়ে পড়া শিলিগুড়ির বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ সংস্কার করে দ্বিতল ভবন গড়ে তোলা হবে। সেই জায়গায় গড়ে উঠবে ভু-গর্ভস্থ পার্কিং ব্যবস্থাও। সোমবার এ কথা জানিয়েছেন, শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। শিলিগুড়ির বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ এবং তার গ্রন্থাগার সংস্কারের দাবি বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে সাহিত্য সংস্কৃতিপ্রেমীরা বারবার এ ব্যাপারে তাঁদের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু তাতে কাজ না-হওয়ায় নানা সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁরাও। এমনকী প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য্যের সময়ও এ ব্যাপারে কিছু করা সম্ভব হয়নি। সেই সঙ্গে লাগোয়া দীনবন্ধু মঞ্চে নানা উৎসব অনুষ্ঠানে ভিড় জমলেও গাড়ি দাঁড়াবার পর্যাপ্ত জায়গা না থাকা নিয়েও সমস্যায় পড়তে হয় সকলকে।
এ দিন গৌতমবাবু বলেন, “বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ দ্বিতল ভবন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেখানে ভূ-গর্ভস্থ পার্কিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।” পঞ্জাবে ভারত-পাক ওয়াঘা সীমান্তে পর্যটকদের ঘোরার যে ব্যবস্থা রয়েছে ফুলবাড়িতেও তেমন পরিকাঠামো গড়ে তোলার কথা জানান তিনি। শিলিগুড়ির বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ সংস্কার না করা-সহ অশোকবাবুর আমলে পিসি মিত্তাল বাস স্ট্যান্ড নির্মাণে নিম্নমানের কাজ করার মতো বিভিন্ন অভিযোগ তুলেছেন গৌতমবাবু। তাঁর অভিযোগ, বর্তমানে ওই বাস স্ট্যান্ডের চাঙর খসে পড়ছে। অশোকবাবু এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান থাকার সময় যে উড়ালপুল তৈরি হয়েছে তার পরিকল্পনায় ভুল রয়েছে। নির্মাণ কাজ ঠিক মতো হয়নি। অশোকবাবুর দাবি, তিনিও বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের ভবন সংস্কার করতে সেখানে পার্কিং ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী ছলেন। কিন্তু সেখানকার ‘ট্রাস্টি বোর্ড’-এর সদস্যরা এক মত না হওয়াতেই কাজ করা যায়নি। অন্যান্য অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এসজেডিএতে বহু কোটি টাকার দুর্নীতি হচ্ছে। সে সব আড়াল করতেই গৌতমবাবুরা অন্য কথা বলছেন।”
এ দিন চতুর্থ মহানন্দা সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করতে যে এলাকায় সেটি গড়া হচ্ছে সেখানকার দুই কংগ্রেস কাউন্সিলরকে নিয়ে বৈঠক করেন মন্ত্রী। সংযোজক রাস্তার কাজ শেষ করে দ্রুত ওই সেতু চালুর আশ্বাসও দেন তিনি। প্রায় বছর খানেক আগে সেতুর কাজ শেষ হলেও সংযোজক রাস্তা তৈরি না হওয়ায় তা চালু করা যায়নি। ঝঙ্কার মোড় থেকে সেতুতে ওঠার রাস্তা পর্যাপ্ত চওড়া নয়। দোকান সরিয়ে এবং সেতু লাগোয়া বাসিন্দারা জায়গা ছাড়লে সেই মতো রাস্তা চওড়া করার প্রক্রিয়া নিয়েই দেরি হচ্ছে। অন্তত ১৫ টি বাড়িতে ৩ ফুট করে জায়গা ছাড়তে হবে। তাদের সেই পরিমাণ জমির দাম এবং অন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা। দোকানগুলির পিছনে থাকা কাঁচা নর্দমা পাকা করে তা কংক্রিটের ঢাকনা দিয়ে আটকে দেওয়া হচ্ছে। দোকানগুলিকে ঢাকা দেওয়া নর্দমার উপর সরিয়ে রাস্তা চওড়ার জায়গা হচ্ছে। জ্যোতিনগর এলাকার কাউন্সিল কাজল চন্দ বলেন, “এই ওয়ার্ডে রাস্তার জায়গা চওড়া করতে ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন নিয়ে সমস্যা ছিল। তা আমাকে দেখার জন্য মন্ত্রী বলেছেন। উন্নয়নের স্বার্থে এ ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে আমরা সহমত।” অপর কাউন্সিলর সঞ্জয় পাঠক বলেন, “সেতু চালু করতে কী বাকি, তা দেখতে মঙ্গলবার ঠিকাদার সংস্থার লোকেরা যাবেন। আমরাও থাকব। কোনও সমস্যা যাতে না হয় তা দেখা হবে।” |