দোলের দিন বাড়িতে ঢুকে মহিলাদের রঙ মাখাতে চেয়ে হুজ্জোত শুরু করেছিল মদ্যপ দুই যুবক। প্রতিবাদ করেন পরিবারের সদস্যেরা। বাড়ির লোকের উপরে চড়াও হয় ওই যুবকদের সঙ্গীসাথীরা। লাঠি-রড দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয় কয়েক জনকে। রবিবার মারা গিয়েছেন রাধাকান্ত মণ্ডল (৩২) নামে তাঁদেরই এক জন। পরিবারের জখম আরও এক সদস্য এখনও চিকিৎসাধীন।
ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ার বাসাবাটি গ্রামের শ্মশানঘাট এলাকার। গত বছর দোলের দিন এই জেলারই আর এক প্রান্ত বিশরপাড়ায় দুষ্কৃতীরা বাড়িতে ঢুকে কীর্তনের আসরে মহিলাদের রঙ মাখাতে গেলে প্রতিবাদ করেন পরিবারের সদস্য তথা কলকাতার পুলিশের কনস্টেবল অসীম দাম। দুষ্কৃতীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে তাণ্ডব চালায় বাড়িতে। অসীমবাবুকে ছুরি মারে পেটে। দিন দু’য়েক পরে মারা যান তিনি। পরে গ্রেফতার হয় ১১ জন অভিযুক্তের মধ্যে ৫ জন।
হাড়োয়ার ঘটনায় অবশ্য পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে দিন কয়েক আগে বসিরহাট মহকুমা আদালতের দ্বারস্থ হয় মণ্ডল পরিবার। হাড়োয়ার ওসি সুমিত মণ্ডল বলেন, “আহতেরা থানায় আসার পরে ওঁদের তক্ষুণি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যেতে বলা হয়েছিল। পরে থানায় এসে অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু ওঁরা পরে আর থানায় আসেননি।” রাধাকান্তর দাদা আদিত্যর বক্তব্য, পরে লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলেও পুলিশ গুরুত্ব দেয়নি। আদালতের নির্দেশে মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখার আশ্বাসও দেন তিনি।
নিহতের দাদা আদিত্য মণ্ডল বলেন, “দোলের দিন নেশাগ্রস্ত দুই যুবক আচমকাই বাড়িতে ঢুকে পড়ে মহিলাদের রঙ মাখানোর চেষ্টা করে। আমরা কয়েক জন প্রতিবাদ করি। খানিকটা ধস্তাধস্তি হয়। তারপরে ওরা মোবাইলে আরও কয়েক জনকে ডেকে পাঠায়। উত্তর রানিগাছি গ্রাম থেকে কয়েক জন এসে লাঠি-রড দিয়ে আমাদের মারধর শুরু করে। বাড়ির মেয়েদেরও রেয়াত করা হয়নি।” মণ্ডল পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় গুরুতর জখম হন কাঙালচন্দ্র মণ্ডল, তাঁর স্ত্রী বিশ্বেশ্বরী, ছেলে রাধাকান্ত, শ্রীকান্ত, আদিত্য। কাঙালবাবুর তিন বউমা-সহ আরও কয়েক জনকে পেটায় দুষ্কৃতীরা। রাধাকান্তকে হাড়োয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে নিয়ে যাওয়া হয় নীলরতন সরকার হাসপাতালে। রবিবার বিকেলে সেখানেই মারা যান তিনি। শ্রীকান্ত এখনও বারাসত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। |